ইউক্রেন হামলায় রাশিয়াকে জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাশ করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। যুদ্ধকালীন ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির জন্য ক্ষতিপূরণের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত আছে ওই বিলে।
সোমবার সাধারণ পরিষদের ১৯৩ সদস্যের মধ্যে ৯৪ দেশ এ প্রস্তাবে সমর্থন জানায়। রাশিয়া, চীন ও ইরানসহ ১৪টি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। বাংলাদেশ, ব্রাজিল, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ ৭৩টি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে সাধারণ পরিষদে গৃহীত ইউক্রেন-সম্পর্কিত পাঁচটি প্রস্তাবের মধ্যে এটি ছিল সর্বনিম্ন সমর্থন।
সাধারণ পরিষদের এ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী দেশে অন্যায়ভাবে হামলা চালানোর কারণে শাস্তি ভোগ করতে হবে এবং যুদ্ধকালীন সব ধরনের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
প্রস্তাবে যুদ্ধকালীন ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে একটি আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তাকেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি রুশ হামলায় ইউক্রেনের সাধারণ জনগণ ও সরকারের ক্ষয়ক্ষতি সামগ্রিক তথ্য নথিভুক্ত করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক রেজিস্টার তৈরি করার সুপারিশ করা হয়।
এক প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, সাধারণ পরিষদ নয়, নিরাপত্তা পরিষদই এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপযুক্ত জায়গা। পশ্চিমা দেশগুলো কখনোই এ ধরনের ক্ষতিপূরণকে তাদের নিজেদের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য বিবেচনা করে না। যুদ্ধ বিস্তারের জন্য তিনি পশ্চিমাদের দায়ী করে বলেন, পশ্চিমারা দ্বন্দ্বকে আরও জটিল করে তোলার চেষ্টা করছে এবং এ জন্য রাশিয়ার অর্থ ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে।
অন্যদিকে জাতিসংঘে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত সার্জি কিসলিয়্যাস বলেন, রাশিয়া জবাবদিহিতার চেয়ে দায়মুক্তি পছন্দ করে এবং যখন বিষয়টি নিরাপত্তা পরিষদে আসে তখন তারা শুধু মিথ্যা বলে এবং ভেটো প্রয়োগ করে।
রাশিয়া ইউক্রেনের কারখানা থেকে শুরু করে আবাসিক ভবন ও হাসপাতাল সবকিছুকে লক্ষ্যবস্তু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাশিয়ার জবাবদিহি করার সময় এসে গেছে।
জাতিসংঘের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদ এখন পর্যন্ত রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। মূলত রাশিয়ার ভেটো ক্ষমতার কারণেই তা সম্ভব হয়নি। তবে সাধারণ পরিষদে এ ধরনের কোনো ভেটো পদ্ধতি না থাকায় এখন পর্র্যন্ত রাশিয়ার সমালোচনা করে পাঁচটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।
তবে নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশনের বিপরীতে, সাধারণ পরিষদের রেজুলেশন আইনত বাধ্যতামূলক নয়। অবশ্য এর মাধ্যমে বিশ্ব মতামত প্রতিফলিত হয়ে থাকে।