ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলা অব্যহত রেখেছে রাশিয়া। যার ফলে রাজধানী কিয়েভসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সামান্য বা কোন বিদ্যুৎ ছাড়াই শীতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউক্রেনীয়রা, যেখানে তাপমাত্রা ইতিমধ্যে হিমাঙ্কের নীচে নেমে গেছে। এর মধ্যেই বুধবার বিদ্যুৎ অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে রাশিয়ার বিমান হামলার পর কিয়েভের প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকা বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন শহরটির মেয়র।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো টেলিগ্রামে বলেছেন, রাশিয়ার হামলায় কিয়েভের প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকা বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় রয়েছে। তবে বিদ্যুৎ প্রকৌশলীরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় শুরু করতে তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। তিনি জানিয়েছেন, ডিনিপার নদীর পূর্ব তীরে কিয়েভের প্রায় অর্ধেক অংশে পানি সরবরাহ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ জানিয়েছে, রাশিয়ান বাহিনী বুধবার কিয়েভ এবং ইউক্রেনের অন্যান্য অঞ্চলে আবাসিক ভবন এবং জ্বালানি অবকাঠামোতে ব্যাপক আক্রমণ চলিয়েছে। এসময় তারা ৬৭টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১০টি ড্রোন হামলা করেছে ৷
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামোতে রাশিয়ার হামলাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে জনসংখ্যা শূন্যের নিচে তাপমাত্রা সহ্য করছে এবং কয়েক মিলিয়ন মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। এই ধরনের হামলা সন্ত্রাসবাদে নতুন রাশিয়ান ফর্মুলা।
বুধবার ভিডিওলিংকের মাধ্যমে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দেন প্রেসিডেন্টে ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, রাশিয়ার সন্ত্রাসের কারণে শূন্য ডিগ্রির নিচের ঠান্ডা আবহাওয়ায় কোনো ধরনের বিদ্যুৎ ছাড়া লাখ লাখ মানুষ উষ্ণ ও পানি ছাড়া থাকতে বাধ্য হচ্ছে।
উল্লেখ্য, রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে। মূলত, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম রেল ও সড়ক সেতুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে গত ৮ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের জ্বালানি নেটওয়ার্ক ও অবকাঠামোগুলোতে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া।