করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার প্রেক্ষিতে নতুন করে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে চীন। এরইমধ্যে দেশটির উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াংয়ে একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে আটকা পড়ে ১০ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনায় রাজধানী বেইজিংসহ বিভিন্ন শহরে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
বিবিসি ও অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার রাতে জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার মানুষ। এ সময় তারা ‘লকডাউনের অবসান চাই’ স্লোগান দেয়।
উরুমকির বিক্ষোভের ঢেউ আছড়ে পড়েছে রাজধানী বেইজিংয়েও। বেইজিংয়ের কিছু কিছু এলাকায় লোকজন লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ করেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা বিক্ষোভের একটি ভিডিওকে চীনের পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াংয়ের উরুমকিতে ধারণ করা বলে জানিয়েছে কিছু সংবাদমাধ্যম। শহরটির ৪০ লাখ বাসিন্দার বেশিরভাগই চীনের দীর্ঘতম লকডাউনের কবলে আছে। এমনকি ১০০ দিনের বেশি তাদের বাড়ি ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
ভিডিওতে তাদের স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক করতে দেখা যায়। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেকেই লকডাউন নির্ধারিত সময়ের আগেই তুলে নেওয়ার দাবি জানান।
এর আগে বৃহস্পতিবার জিনজিয়াংয়ের একটি আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ১০ জনের প্রাণহানি হয়। ভবনটি লকডাউনের কারণে আংশিক তালাবদ্ধ থাকায় বাসিন্দারা অগ্নিকাণ্ডের সময় বের হতে পারেননি বলে অভিযোগ। যে কারণে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে লকডাউনবিরোধী ক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠেছে।
এদিকে উরুমকির কর্মকর্তারা শনিবার সকালের দিকে আকস্মিক এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তারা লকডাউনের কারণে অগ্নিকাণ্ডের কবলে পরা বাসিন্দারা বের হতে পারেননি বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা অস্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের শুরু থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশ কোভিড বিধিনিষেধ শিথিল করে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে যাওয়া শুরু করলেও চীন এখনও কঠোর সব করোনাবিধি চালু রেখেছে। সরকারি কর্মকর্তাদের ভাষ্য, দেশ থেকে করোনা নির্মূলে ‘জিরো কোভিড’নীতি নিয়েছে চীন।
বর্তমানে রাজধানী বেইজিংসহ বিভিন্ন শহরে লকডাউনের কারণে চীনে ‘গৃহবন্দি’ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন ২ কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ।
২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত চীনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মোট ৫ হাজার ২২৯ জনের। গত বুধবার চীনে এক দিনে ৩১ হাজার ৪৪৪ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এই হিসাবে দেশের বাইরে থেকে আসা রোগীদের ধরা হয়নি। প্রায় তিন বছর আগে দেশটিতে মহামারি শুরু হওয়ার পর এটাই এক দিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড।