রাশিয়ার সৈন্যরা যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শীতকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ। এই পরিস্থিতিতে ন্যাটোর মিত্ররা ইউক্রেনে সহায়তা বৃদ্ধি করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার রোমানিয়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ন্যাটো মহাসচিব এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেন, আমি মনে করি আমরা সবাই স্যাটেলাইট থেকে তোলা এসব ছবি দেখেছি, যেখানে আপনি ইউরোপকে আলোকিত দেখেছেন এবং তারপর ইউক্রেনকে অন্ধকারে দেখতে পাচ্ছেন... তাই ইউক্রেনে সবকিছু পুনর্গঠনে বিশাল কাজ রয়েছে।
‘প্রেসিডেন্ট পুতিন শীতকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন,’ রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে সাংবাদিকদের বলেন ন্যাটোর মহাসচিব। বুখারেস্টে ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দু’দিনের এক বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। এই বৈঠক ইউক্রেনের জন্য আরও সমর্থন জোগাড়ের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে বলেও মনে করেন জেনস স্টলটেনবার্গ।
ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইউক্রেনের জন্য আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং গোলাবারুদের মতো সামরিক সহায়তা বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া এই বৈঠকে কূটনীতিকরা সরবরাহ এবং সক্ষমতার সমস্যার কথা স্বীকার করলেও প্রাণঘাতী নয়, এমন সহায়তার ব্যাপারেও আলোচনা করবেন।
অ-প্রাণঘাতী সহায়তার অংশ হিসেবে ন্যাটোর সহায়তা প্যাকেজের আওতায় ইউক্রেনে ইতোমধ্যে জ্বালানি পণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম, শীতকালীন উপকরণ এবং ড্রোন জ্যামার সরবরাহ করা হয়েছে। এসব সহায়তা আরও বাড়ানোর দিকে জোর দিয়েছেন ন্যাটোর মহাসচিব।
স্টলটেনবার্গের মন্তব্য ৩০ সদস্যের এই পশ্চিমা সামরিক জোটের কয়েকজন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কণ্ঠেও প্রতিধ্বনিত হয়েছে। ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ওই বৈঠকে ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনও যোগদান করেছে; কারণ তারা তুরস্ক এবং হাঙ্গেরির সমর্থন না পাওয়ার কারণে স্থগিত থাকা পূর্ণ সদস্যপদ নিশ্চিত করতে চায়।
স্লোভাকিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাস্তিসলাভ কাসের বলেন, ‘আগামী মাসগুলো আমাদের সবার জন্য একটি বড় পরীক্ষা হবে। ইউক্রেনের জন্য এটি অস্তিত্বের, আমাদের জন্য নৈতিক। যতদিন প্রয়োজন ততদিন ইউক্রেনকে আমাদের সাহায্য করতে হবে।’
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশের নাগরিকদের চলতি সপ্তাহে রাশিয়ার নতুন আক্রমণের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার এই হামলা গত সপ্তাহের মতোই ভয়াবহ হতে পারে; যা লাখ লাখ মানুষকে বিদ্যুৎ, পানিবিহীন রেখেছিল।
ইউক্রেনের অবকাঠামোতে হামলার কথা স্বীকার করেছে রাশিয়া। তবে বেসামরিক মানুষকে কষ্ট দেওয়ার লক্ষ্যে অবকাঠামোতে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে মস্কো। ইউরোপীয় জ্যেষ্ঠ একজন কূটনীতিক বলেছেন, এটি ইউক্রেনের জন্য ভয়ানক শীত হতে চলেছে। তাই আমরা সেখানে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরানোর জন্য সহায়তা জোরদারের জন্য কাজ করছি।