ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার পরিস্থিতি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে অন্যতম আলোচিত বিষয়। গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে মধ্যপ্রাচ্য সংকট সংবাদের শিরোনাম দখল করায় ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কে খবর ও আগ্রহে কিছুটা ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। অথচ রাশিয়ার বিরুদ্ধে সংগ্রামে পশ্চিমা বিশ্বের লাগাতার সাহায্য ইউক্রেনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে অস্ত্র ও গোলাবারুদের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে যুদ্ধক্ষেত্রে দুর্বলতা অনিবার্য। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তাই কিছুটা উদ্বিগ্ন।
বুধবার এক টেলিফোন সংলাপে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ জেলেনস্কিকে অবশ্য আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, ফ্রান্স তথা ইউরোপের তরফ থেকে ইউক্রেনের প্রতি অঙ্গীকার খর্ব করা হবে না। তার মতে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংকট নিয়ে ব্যস্ততা সত্ত্বেও ইউক্রেনের থেকে নজর সরে যাবে না।
আসন্ন শীতকালে রাশিয়া গত বছরের মতো ইউক্রেনের অবকাঠামো ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ওপর আকাশপথে হামলা চালাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বণ্টনের অবকাঠামোর ওপর আক্রমণের ফলে অনেক মানুষকে শীতের মধ্যেও কষ্টে থাকতে হয়েছে।
এবারও সে রকম হামলা হলে তার আগে ইউক্রেনের সামরিক ক্ষমতা যতটা সম্ভব বাড়ানো প্রয়োজন বলে জেলেনস্কি ও ম্যাখোঁ মনে করেন।
ইউক্রেনের সামরিক ক্ষমতা নিয়ে বিদ্রুপ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর মতে, মার্কিন প্রশাসন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার ফলে শেষে ইউক্রেনের যন্ত্রণা দীর্ঘায়িত হবে। বেইজিং-এ এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, কিয়েভকে এটিএসিএমএস মিসাইল সরবরাহ করে ওয়াশিংটন ভুল করেছে।
কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে এর ফলে কোনো পরিবর্তন হবে না বলে তিনি দাবি করেন। উল্লেখ্য, বুধবারই রুশ কর্মকর্তারা অধিকৃত বেরডিয়ানস্ক শহরে সেই মিসাইলের হামলার অভিযোগ করেছেন। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সগর্বে এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগের কথা জানিয়ে ওয়াশিংটনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তবে কবে ও কোথায় সেটি নিক্ষেপ করা হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানানো হয়নি।
ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলা অব্যাহত রয়েছে।
একাধিক শহরে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে পশ্চিমা জগতের ব্যস্ততা রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের জন্য সুবিধাজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে বলেও অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। শুধু ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা কমার সম্ভাবনাই নয়, ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘কুকীর্তি’অনেকটা ঢাকা পড়ে যাবে বলে রুশ নেতৃত্ব মনে করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইউক্রেনের ওপর হামলার মাত্রা আরো বাড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।