
অধিকৃত পশ্চিম তীরে বিক্ষোভ চলাকালে ২৬ বছর বয়সী মার্কিন এক নারী অধিকারকর্মী গুলিতে নিহত হয়েছেন। তুরস্ক বংশোদ্ভুত এই নারীর নাম আয়সেনুর ইজগি ইগি। নাবলুসের কাছে বেইতা শহরে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে তিনি অংশ নিয়েছিলেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইজগি ইগিকে ইসরায়েলি সেনারা গুলি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, বেইতা এলাকায় সেনাদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া ও হুমকি দেওয়া হয়। এরপর তারা গুলি চালিয়ে জবাব দিয়েছে।
আইডিএফ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এ অঞ্চলে গুলি চালানোর ফলে একজন বিদেশি নাগরিক নিহত হওয়ার প্রতিবেদনগুলো খতিয়ে দেখছে। ঘটনার বিশদ বিবরণ এবং যে পরিস্থিতিতে তাকে আঘাত করা হয়েছিল, তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে তারা।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, এই মার্কিন নারী ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা থেকে কৃষকদের রক্ষার জন্য একটি প্রচারণায় জড়িত ছিলেন।
তুর্কি গণমাধ্যমে জানিয়েছে, ইজগি ইগি যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের নাগরিক। তিনি আন্টালিয়াতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
ইগিকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নাবলুসের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে মৃত ঘোষণা করা হয়। হাসপাতালের প্রধান ডা. ফুয়াদ নাফা নিশ্চিত করেছেন, ২০-৩০ বছর বয়সী এক মার্কিন নাগরিক মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটায় তার মৃত্যু ঘোষণা করা হয়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা পশ্চিম তীরে এক মার্কিন নাগরিকের মৃত্যুর বিষয়ে ‘জরুরিভাবে’ তথ্য সংগ্রহ করছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ইগির মৃত্যুকে ‘দুঃখজনক’ অভিহিত করে বলেন, ‘আমরা তার পরিবার ও প্রিয়জনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমরা জরুরিভাবে তার মৃত্যুর পরিস্থিতি সম্পর্কে আরো তথ্য সংগ্রহ করছি এবং আমরা আরো তথ্য পাওয়ার পর বিস্তারিত জানাব।’
এছাড়া তুরস্কও এই তুর্কি-মার্কিন নাগরিককে ‘হত্যার’ নিন্দা করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ‘খুব দুঃখের সঙ্গে জেনেছে, আয়সেনুর ইজগি ইগি নামের আমাদের নাগরিক নাবলুস শহরে ইসরায়েলি দখলদার সেনাদের হাতে নিহত হয়েছেন।’
ইসরায়েলি বাহিনী জেনিন শহর ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে শরণার্থীশিবির থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর এ ঘটনা ঘটল। সেখানে তারা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে একটি বড় অভিযান চালিয়েছে। এতে কমপক্ষে ৩৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। নিহতদের অধিকাংশকে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য বলে দাবি করা হয়েছে। তবে নিহতদের মধ্যে শিশু রয়েছে বলেও মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
গত ৫০ বছরে ইসরায়েল পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে বসতি স্থাপন করেছে, যেখানে এখন সাত লাখেরও সাত লাখেরও বেশি ইহুদি বাস করে। বসতি স্থাপনাগুলোকে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ বলে ধরা হয়। যদিও ইসরায়েল তা প্রত্যাখ্যান করে।