ভারতের উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে মুঘল যুগের পুরোনো একটি জামে মসজিদে ‘সমীক্ষা’ চালানোকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মুসলিম বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত তিনজনের প্রাণ গেছে।
পুলিশেরও কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) এ ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসি ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের। খবরে বলা হয়েছে, ঘটনাটির পর গোটা এলাকায় তীব্র সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
নিহতরা হলেন, কুরবি অঞ্চলের বাসিন্দা নাঈম, সারাই তারিন অঞ্চলের বিলাল ও হায়াত নগরের নুমান। তারা তিনজনই মুসলিম। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে সন্ধ্যায় কর্মকর্তারা জানান।
বিবিসি বাংলার খবর বলছে, যে মসজিদটিকে ঘিরে এই বিরোধ, সেটি ‘শাহী জামে মসজিদ’ নামে পরিচিত। হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলির দাবি, প্রাচীন একটি হিন্দু মন্দির ভেঙেই এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
এই দাবিকে কেন্দ্র করে হিন্দু ও মুসলিম গোষ্ঠীগুলির মধ্যে আদালতে আইনি লড়াইও চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এ নিয়ে এক পুরোহিত আবেদন করেন। সম্প্রতি আদালত ওই মসজিদ প্রাঙ্গণে সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়।
মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও সার্ভের বিরোধীদের বক্তব্য, ভারতের ধর্মীয় উপাসনালয় আইন ১৯৯১ অনুসারে দেশের স্বাধীনতার সময় কোনোমন্দির, মসজিদ বা গির্জার চরিত্র যা ছিল তা বদলানো যায় না – সুতরাং সম্ভলের জামে মসজিদেও এই ধরনের হস্তক্ষেপ সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়। তাছাড়া মসজিদে এভাবে ‘সমীক্ষা’ চালানো হলে তা এলাকায় অযথা উত্তেজনা ছড়াবে বলেও তারা যুক্তি দিচ্ছিলেন।
এর মধ্যেই রোববার সমীক্ষা করতে যান এক কমিশনার ও তার দলের ছয়জন। তখন স্থানীয় মুসলিমরা এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তখন পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে অ্যাকশনে যায়।
মুরাদাবাদ ডিভিশনাল কমিশনার অঞ্জনেয় কুমার সিং সংঘাতের জন্য বিক্ষোভকারীদের দোষারোপ করে বলেন, তিন দিক থেকে লোকজন এসে জড়ো হয়ে পুলিশ ও সমীক্ষাদলের ওপর পাথর নিক্ষেপ করতে থাকেন। তখন পুলিশ ফাঁকা গুলি ও টিয়ার গ্যাস ছোড়ে।
তিনি বলেন, তিনজন নিহত হন। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, তারা বুলেটের আঘাতে নিহত হন। ডজনখানেক পুলিশ অফিসার আহত হন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সম্ভল পুলিশের সুপারিনটেন্ডেন্ট কৃষ্ণ কুমার বিষ্ণোই বলেন, রোববারের সহিংসতায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। আমরা এ পর্যন্ত ১৫ জনকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি।