বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে ৩২বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতি করছেন সাহসী রনেল
স্টাফ রিপোর্টার:
রনেল। নিউইয়র্ক তথা যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতিতে একটি সাহসী নাম। পুরো নাম দুরুদ মিয়া রনেল। সিলেট সদরের মিরবক্স টোলা এলাকায় বাড়ী। বাবা মরহুম আলহাজ্ব তমিজুল আলী। সিলেট সরকারী পাইলট হাই স্কুলে দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় প্রথমে মাইকে বঙ্গবন্ধুর ভাষন আর ”জয় বাংলা” শ্লোগান শুনে আকৃষ্ট হন রাজনীতিতে। হৃদয়ে গেঁথে যায় দরাজ কন্ঠে বঙ্গবন্ধুর মায়াবী ভাষন। ১৯৮৭সালে এসএসসি পাশ করার আগেই আওয়ামী লীগ নেতা মিসবাহউদ্দীন সিরাজ আর মামা মাসুকউদ্দীন আহমেদ চৌধুরীর হাত ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে নাম লেখান রনেল। মিছিল, মিটিং আর সকল কর্মসূচি পালনের সময় সাহসী রনেল থাকতো সবার আগে। পরের বছর ১৯৮৮ সালে সিলেট শহর ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পান তিনি।
নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শুরুর দিকে গ্রেফতার হন তিনি। সিলেটের ছাত্রলীগের রাজপথ কাঁপানো আন্দোলনে অন্যদের মতো রনেলও ছিলেন মিছিলের সামনে অগ্রনী ভুমিকায়। স্বৈরাচার সরকারের কয়েকটি মামলা আর গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে ১৯৯১ সালে দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন তিনি। হৃদয়ে যার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তার পক্ষে কি রাজনীতি থেকে দুরে থাকা সম্ভব? যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৯২ সালে যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। দীর্ঘ সময় পালন করেছেন সেই দায়িত্ব। ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে নির্বাচিত হন সহ-সভাপতি।
ওয়ান ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতার হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম প্রতিবাদ মিছিল করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় রাত ২টায় সেই প্রতিবাদ মিছিলে পাঁচজনের মধ্যে দুরুদ মিয়া রনেল ছিলেন অন্যতম।
বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফাঁসির দাবিতে জাতিসংঘ, হোয়াইট হাউজসহ প্রত্যেকটা স্টেটে প্রতিবাদ মিছিল আর নিউেইয়র্কের গণজাগরণ মঞ্চের অগ্রনী ভূমিকায় ছিলেন সিলেটের এই সাহসী রাজনীতিবীদ।
২০১৭ সালে ডা. সিদ্দিকুর রহমান নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বও পান রনেল।
রাজনীতিতে সাহসীকতার কারণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় নেতারা এক নামেই চেনেন রনেলকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছে অনেকবার। যুক্তরাষ্ট্রের আওয়ামী লীগের রাজনীতির অনেক খুঁটিনাটি বিষয় তার কাছ থেকে জেনেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
সাক্ষাতকারে দুরুদ মিয়া রনেল নিউইয়র্ক মেইলকে জানান, খুব ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর ভাষন শুনে রাজনীতিতে এসেছি। এখনও পর্যন্ত সেই আদর্শ বুকে ধারণ করে রাজনীতি করি। আওয়ামী লীগের রাজনীতির দু:সময়গুলোতে আমরা হাতে গোনা কয়েকজন যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফাঁসির দাবিতে নিউইয়র্কে আমরা আন্দোলন করেছি তেমনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার গ্রেফতারের প্রতিবাদেও আমরা আন্দোলন করেছি। যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যেকটি স্টেটে আমরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছি। তিনি বলেন, দলের প্রয়োজনে, রাজনীতির কারণে পরিবারকে সময় না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটে গিয়েছি, কেন্দ্রিয় নির্দেশে দলের সব কর্মসূচি পালন করেছি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে চাওয়া-পাওয়ার কোনো হিসেব করিনি। যতদিন বাঁচবো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করে যাবো।