মোদীকে হত্যার চক্রান্ত করছে চরমপন্থী সংগঠন ‘পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি’
মোদিকে হত্যার চক্রান্তের পিছনে কি বাংলাদেশের নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন ‘পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি’ (পিবিসিপি)-এর হাত রয়েছে? অন্তত এমনটাই সন্দেহ ভারতীয় গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর।
গোয়েন্দাদের ধারনা এই নাশকতা সংগঠিত করতে ভারতীয় মাওবাদীদের সাথে অত্যন্ত গোপনে হাত মিলিয়ে থাকতে পারে পিবিসিপি। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে তদন্তে নেমেছে গোয়েন্দারা।
পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি’ (পিবিসিপি)-এর প্রতিষ্ঠা ১৯৬৮ সালে। এর উদ্যেশ্য ছিল বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাত করে সেখানে কমিউনিষ্ট রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। কট্টর ভারত বিরোধী মনোভাবাপন্ন সংগঠন হিসাবেও পরিচিত তারা। ব্যবসায়ীদের কাছে জোর করে চাঁদা দাবি ও হত্যকান্ড চালানোর পিছনেও এরা জড়িত বলে অভিযোগ।
পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল স্থল বন্দর থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশের খুলনা ও যশোরে এই সংগঠনটির যথেষ্ট শক্ত অবস্থান রয়েছে বলেও জানা যায়।
তবে ভারতীয় মাওবাদীদের সাথে বাংলাদেশের পিবিসিপি’এর যোগাসাজেশ’এর বিষয়টি এবারই প্রথম ভারতীয় গোয়েন্দাদের নজরে আসেনি। সূত্রে খবর নিয়মিত ভাবেই ভারতীয় মাওবাদীদের অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে পিবিসিপি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন ‘মাওবাদীদের কাছে যে অস্ত্র আসে তার একটা বড় অংশই বাংলাদেশ ও নেপাল হয়ে তাদের হাতে এসে পৌঁছয় এবং গত ১০-১৫ বছর ধরে এই জিনিস চলে আসছে। কিন্তু এবার পিবিসিপি’এর কয়েকজন সদস্য ব্যক্তিগত ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করে তাদের এই জঘন্য কর্মকান্ড সংগঠিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে’।
এই ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়ার মনিটরিং’এর দায়িত্বে থাকা এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন ‘তদন্ত এখন প্রাথমিক পর্যায়ে।
একাধিক এজেন্সি বিভিন্ন রাজ্যে তাদের তদন্ত চালাচ্ছে। আমরা দৃঢ় বিশ্বাসী যে ভারতীয় মাওবাদীদের সাথে বাংলাদেশের নির্দিষ্ট ওই চরমপন্থী সংগঠনটির সাথে যোগসাজেশ রয়েছে আর সেটা কেবলমাত্র অস্ত্র বা গোলাবারুদ সরবরাহের ক্ষেত্রে নয়, ব্যক্তিগত উপস্থিতিও রয়েছে। কারণ মাওবাদীরা যে গুণমান ও যে পরিমাণ অস্ত্র চেয়েছিল তা ভারত থেকে পাওয়া সম্ভব না হওয়ায় তারা বাংলাদেশে এমন একটি সংগঠনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে’।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ভারতের মহারাষ্ট্রের একটি আদালতে পুণে পুলিশের তরফে দাবি করা হয় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত রাজীব গান্ধীর মতোই মোদিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে মাওবাদীরা। এই মর্মে লিখিতভাবে একটি রিপোর্টও দাখিল করে পুলিশ। নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওয়িস্ট)-এর সাথে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে গত বুধবার দিল্লি থেকে আটক করা হয় রোনা উইলসন নামে এক সামাজিক আন্দোলনকারীকে। এরপর বৃহস্পতিবার তাঁর দিল্লির বাসা থেকে একটি চিঠি উদ্ধার করা হয়। সেই চিঠি থেকেই মোদিকে হত্যার ষড়যন্ত্রের বিষয়টি সামনে আসে।
রাজীব গান্ধীকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল সেই কায়দাতেই সমাবেশ কিংবা রোড শো টার্গেট করে মোদিকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল বলে পুণে পুলিশের তরফে দাবি করা হয়।
এখানেই শেষ নয় ওই চিঠিতে এম ফোর রাইফেল ও চার লাখ রাউন্ড গুলি কেনার জন্য ৮ কোটি রুপির প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি সামনে আসার পরই তদন্তে নামে গোয়েন্দারা।