পাক সীমান্তে ১৪০ যুদ্ধবিমান নিয়ে ভারতের মহড়া
ভারতের বিমান বাহিনী ১৪০টি যুদ্ধবিমান ও অ্যাটাক হেলিকপ্টার নিয়ে শক্তিশালী সামরিক মহড়া চালিয়েছে। কাশ্মীর হামলার দু’দিন পর শনিবার রাজস্থানের পাকিস্তান সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা পোখরানে এ মহড়া চালাল ভারত।
পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন জঈশ-ই-মোহাম্মদের ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালানোর পরিকল্পনা হিসেবে মহড়া চালিয়েছে ভারতীয় বিমান বাহিনী। কাশ্মীরের পুলওয়ামায় গত বৃহস্পতিবারের হামলার দায় স্বীকার করেছে এ জঙ্গিগোষ্ঠী।
ভারতের বিমান বাহনীর প্রধান মার্শাল বীরেন্দ্র সিং ধনোয়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যে কোনো সময় উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত বিমান বাহিনী। গোটা জাতিকে আশ্বাস দিয়ে বলতে চাই, ভারতীয় বিমান বাহিনী জাতীয় নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের ওপর যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত আছে।’ সামরিক এ মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন সেনাবহিনীর প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এছাড়াও ছিলেন ভারতীয় বিমান বাহিনীর সম্মানসূচক গ্রুপ ক্যাপ্টেন ও ক্রিকেট তারকা শচীন টেন্ডুলকার।
এ মহড়ায় লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফট ‘তেজা’, অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার ছাড়াও ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রবাহী বিমান ‘আকাশ’ এবং আকাশ থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে সক্ষম বিমানও ছিল। এ ছাড়াও আকাশ থেকে ভূমিতে হামলায় সক্ষম উন্নতমানের মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান, সুখোই-৩০, মিরেজ-২০০০, জাগুয়ার, মিগ-২১, বিসন, মিগ-২৭, মিগ-২৯, আইএল৭৮, হারকিউলিস এবং এএন-৩২ নিয়ে মোট ১৩৭টি বিমান ছিল।
পাক সেনাবাহিনী-পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট হ্যাক : পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে। শনিবার রাতে ওই ওয়েবসাইট দুটি হ্যাক হয়। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ডন জানায়, ভারত থেকে ওই ওয়েবসাইট দুটি হ্যাক করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, যদিও পাকিস্তানের ভেতরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের কার্যক্রমে কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি।
তবে নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন এবং সৌদি আরবের ব্যবহারকারীরা এই ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারেননি।
পাকিস্তানি পণ্যে ২০০ শতাংশ শুল্কারোপ : কাশ্মীরে হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের সব ধরনের পণ্যের আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে ২০০ শতাংশ করেছে ভারত। শনিবার সন্ধ্যায় ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এক টুইটে বলেন, ‘পাকিস্তানকে দেয়া ‘সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ’র (এমএফএন) মর্যাদা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এবার পাকিস্তান থেকে ভারতে আমদানি করা সব ধরনের পণ্যের শুল্ক ২০০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।’ দু’দেশের মধ্যে বৈষম্যহীন বাণিজ্যের জন্য ১৯৯৬ সালে পাকিস্তানকে এমএফএন সুবিধা দেয় ভারত। তাদের দ্বিপাক্ষিক বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২০০ কোটি ডলার।
এছাড়া পাকিস্তানের কাছে চা রফতানি বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে ভারতের চা রফতানি সংগঠন। সে দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে লেখা চিঠিতে রফতানি বন্ধের প্রস্তাব পাঠিয়েছে তারা। সংগঠনের চেয়ারম্যান অংশুমান কানোরিয়া জানিয়েছেন, দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে বাণিজ্যিক ক্ষতি মেনে নিতে তাদের কোনো আপত্তি নেই।