মোদির হেলিকপ্টার তল্লাশি করায় কর্মকর্তা বরখাস্ত, বিতর্কের ঝড়
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির হেলিকপ্টার তল্লাশি করায় এক আইএএস কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এ ঘটনার পরে বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছে। তারা ওই কর্মকর্তার শাস্তি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
বুধবার রাতে তাকে বরখাস্ত করা হয়। এর আগে ওড়িশার সম্বলপুরে মোদির নিরাপত্তাকর্মীদের প্রোটেকশনে থাকা হেলিকপ্টারটি তল্লাশি চালায়। নির্বাচন কমিশনের আদেশে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের আওতায় থাকে, তাই এই তল্লাশি চালানোর এখতিয়ার ছিল না আইএএস কর্মকর্তা মহসিনের।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, ওড়িশার সম্বলপুর কেন্দ্রের বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক ছিলেন ১৯৯৬ ব্যাচের কর্নাটক ক্যাডারের আইএএস অফিসার মোহাম্মদ মহসিন। সেখানেই তিনি নরেন্দ্র মোদির হেলিকপ্টারে তল্লাশি চালান। এ জন্য মোদির কপ্টার উড়তে প্রায় ১৫ মিনিট দেরি হয়।
এমন অপরাধেই তাকে বরখাস্ত করে নির্বাচন কমিশন। এই আইএএস কর্মকর্তার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বলে, ২০১৪ সালের ১০ এপ্রিলে দেওয়া একটি নির্দেশে বলা হয়েছিল যারা স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের আওতায় থাকেন, তাদের তল্লাশি করা যাবে না।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের ওই নিয়মে এমন কোনো নির্দেশ পাওয়া যাচ্ছে না। বরং বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে তল্লাশি চালানো যেতে পারে, এমনটাই বলা হয়েছে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নির্বাচনের প্রচারে বা নির্বাচন-সংক্রান্ত যাতায়াতে কোনোভাবেই সরকারি গাড়ির ব্যবহার করা যাবে না। যারা স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের নিরাপত্তা পান, তাদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, একমাত্র প্রধানমন্ত্রী বা অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়া হয় চরমপন্থী বা সন্ত্রাসবাদী হামলার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য, তারা এই নির্দেশের আওতার বাইরে থাকবেন।
একই সঙ্গে ওই নির্দেশে বলা হয়েছিল, স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ বা অন্যান্য নিরাপত্তাব্যবস্থার আওতায় যারা থাকেন, তারা কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক ব্যক্তির স্বার্থে বাড়াবাড়ি রকমের কাজ করতে থাকলে কমিশন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সরকারকে জানাবেন। তার ভিত্তিতে জরুরি ব্যবস্থা নেবে সরকার।
এদিকে মোদির কপ্টারে তল্লাশি চালিয়ে শাস্তির বিষয়টি সামনে আসার পরই সরব হয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেস টুইট করেছে, মোদি হেলিকপ্টারে কী নিয়ে যান, যা তিনি সারা দেশকে দেখাতে চান না। একই সঙ্গে তাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর কপ্টারে তল্লাশি চালানো যাবে না, এমন কোনো নিয়ম কোথাও নেই।
আম আদমি পার্টি কটাক্ষ করে বলেছে, নিজের সুরক্ষিত ঘরে থাকতে চান দেশের চৌকিদার। চৌকিদার কী লুকাতে চাইছেন?
কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি ওই কর্মকর্তার শাস্তি প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছে।
মোদির কপ্টারে থাকা কালো ট্রাংক নিয়ে কয়েক দিন ধরে গুঞ্জন চলছিল। এ নিয়ে দেশটিতে বিরোধীরা বেশ সরব হয়েছিল। অভিযোগও করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। তবে ট্রাংকের মধ্যে কী ছিল তা জানা যায়নি।