কাশ্মীরি ক্রিকেটারদের খোঁজে টিভিতে বিজ্ঞাপন
গত তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না জম্মু-কাশ্মীরের ক্রিকেটারদের। কাশ্মীর ক্রিকেট দলের অধিনায়ক পারভেজ রসুলসহ তারকা ক্রিকেটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তাদের কোচ মিলাপ মেওয়াদা।
ভারতীয় সাবেক এ তারকা ক্রিকেটার বলেন, গত ৫ আগস্ট কাশ্মীরে যখন জরুরি অবস্থা জারি হয় তখন আমি বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। তারপর থেকে কোনোভাবে কাশ্মীরের ক্রিকেটারদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারছি না।
জম্মু-কাশ্মীরের ক্রিকেটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাশ্মীর ক্রিকেট দলের মেন্টর ইরফান পাঠান কাশ্মীরের তত্ত্বাবধায়ক সি কে প্রসাদ ও জম্মু-কাশ্মীর ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এসএইচ বুখারীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
ভারতীয় সাবেক তারকা এ পেসার বলেছেন, বুখারী আমাকে জানিয়েছেন, ২৮ আগস্ট স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। ক্রিকেটাররা যাতে জম্মুতে একত্রিত হন।
শুক্রবার বুখারী জানান, জম্মু-কাশ্মীরের ‘অনূর্ধ্ব -১৬, অনূর্ধ্ব -১৯, অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কিছু ক্রিকেটার এসেছেন। আমরা তাদের জম্মুতে নিয়ে যাব।
কাশ্মীরের সাম্প্রতিক ঘটনা প্রসঙ্গে ভারতীয় সাবেক তারকা ক্রিকেটার মিলাপ মেওয়াদা বলেন, ‘গত ২ আগস্ট তিনজন যুবক আমার রুমে এসে বলল যে রাজ্যে মারাত্মক কিছু ঘটতে যাচ্ছে। এবং তাদের বাবা-মা খুব দুশ্চিন্তায় আছেন।’
মিলাপ আরও বলেন, ‘আসলে এ ঘটনার আগে থেকেই প্লেয়াররা চাপের মধ্যে ছিল। যারা আমাদের ক্যাম্পে অনুশীলন করে তাদের বয়স ১৭-১৮ বছর হবে। এই ছেলেদের বাবা-মা সন্তানের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
কাশ্মীর ক্রিকেট দলের কোচ আরও বলেন, ‘আমার এখনও মনে আছে কিছু ছেলে মধ্যরাতে আমাকে ফোন করেছিল, যে কারণে পরের দিন ম্যাচের মাঝ পথে থামিয়ে দিতে হয়েছে। জম্মুতে এবং শ্রীনগরের বাইরে যে ছেলেদের বাড়ি তাদের বাসায় ফেরার জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’
মেওয়াদা আরও বলেন, বুখারী শ্রীনগর থেকে ফোনে আমাদের বলেছিলেন, এই পরিস্থিতিতে ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হতে পারে না। তাই আমরা জম্মু-কাশ্মীর ক্রিকেট অফিস বন্ধ করে দিয়ে বাইরে থেকে আসা খেলোয়াড়, কোচ এবং নির্বাচকদের ফেরত পাঠানোর জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করেছিলাম। আমরা প্রায় ১১০ জনকে নিরাপদে ফেরত পাঠিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের জনগণ ১৯৪৭ সালের পর থেকে সাংবিধানিকভাবে যে বিশেষ মর্যাদা পেত, গত ৫ আগস্ট সেটি বাতিল করে দেয় নরেন্দ্র মোদির সরকার। ভারতের সংবিধান থেকে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত ৩৭০ ধারা বাতিল করে দেয়ার কারণে জম্মু-কাশ্মীরের মুসলিম পরিবারগুলো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। অনেকেই এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছেন।