কলকাতার কলেজ স্কোয়ারে "সংরক্ষণ বিরোধী সংগ্রাম মঞ্চের" দশ দফা দাবি
কলকাতা প্রতিনিধি: সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে সরকারের কাছে দশ দফা দাবি জানিয়েছে "সংরক্ষণ বিরোধী সংগ্রাম মঞ্চ" নামে একটি সামাজিক সংগঠন। সম্প্রতি কলকাতার কলেজ স্কোয়ারে সাংগঠনিক সভার ডাক দিয়ে নেতৃতৃন্দ এই দাবি জানান।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, জাতপাতের দলাদলি আমাদের চারপাশে এতটাই অরাজকতার পরিমাণ বাড়িয়ে তুলেছে যে তার প্রভাবে মানুষের শান্তির ঘুম উধাও। খুব বেশি পরিমাণে এখন যে সমস্যার সম্মুখীন আমরা হচ্ছি তা হল জাতিগত "সংরক্ষণ" প্রথা। এই প্রথার জেরে সর্বস্তরে হিংসার রোষের মুখে পড়ে বহু মানুষ তাদের জীবনকে দিচ্ছেন আত্মবলিদানও।
এসসি, এসটি, ওবিসি ও অন্যান্যদের সরকার বেশি সুযোগ সুবিধা প্রদান করেছে কিন্তু যারা জেনারেল ক্যাটাগরির আওতায় অন্তর্ভুক্ত সেই সব মানুষেরা অভিযোগ তুলেছেন তাঁরাই বা সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন কেন দিনের পর দিন। শিক্ষা ক্ষেত্রে, কর্মক্ষেত্রে ও অন্যান্য সকল কাজেই দেখা যাচ্ছে এই সংরক্ষণ প্রথার প্রভাব। যার ফলে দুর্বিসহ হয়ে যাচ্ছে বহু সাধারণ তরুণ-তরুণীর ভবিষ্যৎ। তাই এই প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে জাতিভেদ ভুলে এগিয়ে আসছেন বহু মানুষ। তৈরি হয়েছে 'সংরক্ষণ বিরোধী সংগ্রাম মঞ্চ'।
২০১৮ সালে সংরক্ষণের বিরুদ্ধে সরব হয়ে মাত্র ৭ জন সদস্যদের নিয়ে পথ চলা শুরু করে এই সংস্থা। যাদের মূল লক্ষ্য হল, ভারতবর্ষ থেকে জাতিভেদ প্রথার অবলুপ্তি।
এদিন কলকাতার কলেজ স্কোয়ারে কলকাতা ও হাওড়া জেলার সদস্যদের নিয়ে এই মঞ্চের তরফ থেকে অনুষ্ঠিত হল সাংগঠনিক সভা। উপস্থিত ছিলেন দুই জেলার সদস্যরা। অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংরক্ষণ বিরোধী সংগ্রাম মঞ্চের পক্ষে জাত পাত মুক্ত সমাজ গঠনের বার্তা প্রেরণ করা হয়।
সংগঠনের দশ দফা দাবিগুলো হলো : ১. সমস্ত সরকারি ও বেসরকারী সংস্থায় আবেদন পত্রে জাতিগত পরিচয়ের কলম সম্পূর্ণভাবে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ২. যদি কেউ নিজের পদবি পরিবর্তন করতে চায় তাহলে করতে পারবে এবং এই ব্যাবস্থার সরলীকরণ করতে হবে। ৩. প্রকৃত অর্থে অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষদের অর্থনৈতিক উন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে। ৪. ইন্টারকাস্ট ম্যারেজের ক্ষেত্রে সরকারি যে অর্থনৈতিক অনুদানের ব্যবস্থা আছে তার পরিমাণ বৃদ্ধি করা। ৫. ১০০% মেধার ভিত্তিতে স্কুল কলেজ চাকুরি ক্ষেত্রে নিয়োগের নীতি গ্রহণ করা। ৬. দুর্নীতি মুক্ত সমাজ গঠন করতে সরকারকে বদ্ধ পরিকর হতে হবে। ৭. সংবিধান ও আইন শিক্ষা বাধ্যতামূলক-প্রাইমারি স্কুল থেকে এবং সমস্ত পাঠ্যক্রম থেকে জাতি গত বা তার উৎপত্তি সংক্রান্ত পাঠ্য বিষয় গুলি বাদ দিতে হবে। ৮. মন্দিরে পুরোহিত বা মহন্ত নিযুক্ত করা হবে উচ্চ জাত বা বংশ পরম্পরায় নয় সম্পূর্ণ যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে, তা সে যেকোন জাতির হতে পারে। ৯. সমস্ত দরিদ্র দলিতদের সম্পূর্ণ অবৈতনিক ও বাদ্ধতামূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। ও ১০. ভারত থেকে আইনত জাতিবাদ নিষিদ্ধ করতে হবে।