ভারতের বিরুদ্ধে হোয়াটসঅ্যাপের মামলা, সরকারের প্রতিক্রিয়া
ভারতের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। সরকারের জারি করা নতুন ডিজিটাল বিধির বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে এই মামলা দায়ের করা হয়। হোয়াটসঅ্যাপ বলছে, এর ফলে গ্রাহকদের গোপনীয়তা ভঙ্গ হবে। আর এটাই চাইছে না হোয়াটসঅ্যাপ।
মোদি সরকারের জারি করা নতুন নিয়ম বুধবার থেকে কার্যকর হচ্ছে। এর আগে সোশ্যাল মিডিয়াগুলোকে তিন মাসের সময় দিয়েছিল কেন্দ্র। মঙ্গলবার ছিল সেই সময়সীমার শেষ দিন। কিন্তু ওইদিনই গ্রাহক-সুরক্ষার প্রসঙ্গ তুলে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে হোয়াটসঅ্যাপ।
তবে ফেসবুক মঙ্গলবারই জানিয়ে দিয়েছিল যে, তারা সরকারের নিয়ম অনুসরণ করার যাবতীয় প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু ফেসবুকেরই মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ নতুন বিধির বিরোধিতা করে সোজা আদালতের আশ্রয় নিয়েছে।
এক বিবৃতিতে হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছে, নতুন এই নিয়মে গ্রাহকদের গোপনীয়তার সুরক্ষা ভঙ্গ হবে। ভারতে হোয়াটসঅ্যাপের ৪০ কোটি গ্রাহক রয়েছে। বিবৃতিতে হোয়াটসঅ্যাপ জানায়, কিভাবে গ্রাহকদের গোপনীয়তা রক্ষা করা যায় তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তারা কথা বলছে। একই সঙ্গে ভারত সরকারের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা চালানো হচ্ছে বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এদিকে, এ বিষয়ে মন্তব্য করেছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার- গোপনীয়তা কেন, নাগরিকদের কোনো মৌলিক অধিকারই চূড়ান্ত নয়।
অনলাইনে লেখালেখির ওপর নজরদারি চালানোর বিধি কার্যকর করা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। এতে সংবিধানে লিপিবদ্ধ নাগরিকদের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারের উল্লেখ করেছে তারা।
কিন্তু এ দাবি খারিজ করে ভারত সরকার জানাল, সব অধিকারের উপরই নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
মোদি সরকারের জারি করা নতুন ডিজিটাল আইন কার্যকর হচ্ছে বুধবার থেকে। এর আওতায় অনলাইনে প্রকাশিত যাবতীয় লেখালেখি এবং ভিডিওর উৎস কেন্দ্রকে জানাতে বাধ্য থাকবে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবের মতো সংস্থাগুলো।
মূলত সরকারবিরোধী সমালোচনা কমাতে কেন্দ্র এমন পদক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। বেশ কিছু সংস্থা ইতিমধ্যে নতুন এ কার্যকর করতে নেমে পড়লেও মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্টে গিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ।
হোয়াটসঅ্যাপের দায়ের করা মামলাকে গুরুত্ব দিতেই নারাজ মোদি সরকার। বুধবার কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, নাগরিকদের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা এবং জাতীয় নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সরকারেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে। আইনি ব্যাখ্যা অনুযায়ী, গোপনীয়তার অধিকার হোক বা যে কোনও মৌলিক অধিকার, কোনও কিছুই চূড়ান্ত নয়। সবকিছুর উপর অল্পবিস্তর নিয়ন্ত্রণ থাকা প্রয়োজন।
রবিশঙ্করের যুক্তি, হোয়াটসঅ্যাপের উপরও কেন্দ্রের বিধিনিয়ম কার্যকর হয়। কোন বার্তা কোথা থেকে আসছে, তা জানাতে বাধ্য তারা, যাতে দেশের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা রক্ষায় গুরুতর অপরাধ বিচার করে দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা যায়, তাদের শাস্তি দেওয়া যায়।