আগুনের পরশমণি জ্বালাও প্রাণে
॥ অনিন্দিতা হাজরা তিতলি॥
অনেক কিছু কেড়ে নেয়ার বছরটি শেষ হলো। কম বেশি সবাই হারিয়েছি নিজেদের আত্মীয় পরিজন, অনেক গুণী মানুষ, চলচ্চিত্র অভিনেতা, ডাক্তারকে। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে এই বছরটি অভিশপ্ত। দু হাজার সালের পর কুড়ি বছরে অনেক পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু এইরকম মৃত্যুর নীল বিষের ছোবল দেখা যায়নি। এর আগেও সার্স, H1N1ফ্লু এবং বাদুড় থেকে অনেক রোগ ছড়িয়েছে। কিন্তু এইরকম কোটি মৃত্যু আসেনি। ইতিহাস বলছে একশো বছর অন্তর এইরকম হয়ে থাকে। একশো বছর পূর্বে স্প্যানিশ ফ্লু হয়েছিল এবং মৃত্যু সংখ্যা ছিল পঞ্চাশ লক্ষের অধিক।
রবীন্দ্রনাথের ভাষায় “ আগুনের পরশমণি জ্বালাও প্রাণে”, সত্যি হেরে গেলে চলবে না। সমস্ত বিষ সরিয়ে জয়ী হতেই হবে। আমরা মানুষ, সভ্যতার কাণ্ডারী। আমরা শেষ মানে সভ্যতা শেষ। মনের জোর শেষ অবধি রাখতেই হবে।
করোনা আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে। ধৈর্য্য, স্থৈর্য, আত্মনির্ভরতা, আত্মবিশ্বাস, আত্মবিশ্লেষন, উচ্ছলতাকে দমন আরোও অনেক কিছু। অনেক রাজনৈতিক মতভেদের মধ্যে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে সব শেষও হয়েছে। আমরা আশাবাদী। দু হাজার একুশ সালের প্রারম্ভে নতুন করে শুরু করবো আমরা।
আমরা শিখেছি লকডাউনে থাকা, আর আমাদের মন হয়েছে অবসাদগ্রস্ত। নিদ্রাহীন, কখনো বা ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। এক্ষেত্রে আমার নিজের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। আমি নিজেই এপ্রিল মাসে অসুস্থ হয়েছিলাম এই করোনার ভীতিতে। ভয় পেয়েছিলাম, আতঙ্কিত ছিলাম। সময় গিয়েছে, দিন গিয়েছে, আমরা আস্তে স্বাভাবিক হয়েছি। শুধু আমার ভারত না, পূর্ব থেকে পশ্চিমের , উত্তর থেকে দক্ষিণের সব দেশে এক চিত্র। টিভি, কাগজ, সোস্যাল মিডিয়া সর্বত্র আছে এক করোনার খরব। আমরা আশা করি সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। সবাই ভালো থাকবো। নিয়ম মেনে চলব। অপরকে সুস্থ রাখবো। ২০২১ হোক ভালোবাসায় মোড়ানো সুন্দর এক পৃথিবী।