'প্রবাসীরা বাংলাদেশের হৃদয়ে বাস করেন'
প্রবাসী বাংলাদেশের হৃদয়ে বাস করেন বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘প্রবাসী বন্ধু’ বলেই প্রবাসীদের সমস্যা নিয়ে কাজ করছেন। আমি জানি প্রবাসীদের অনেক সমস্যা রয়েছে। আর তাই প্রবাসীদের প্রত্যাশা পূরণে সবাইকে একযুগে কাজ করতে হবে।
‘আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়ে মালয়েশিয়ায় সেন্টার ফর এনআরবি’র সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের প্যাসিফিক রিজেন্সি অভিজাত হোটেলে এ সম্মেলন অনুষ্টিত হয়।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান তার বক্তব্য বলেন, প্রবাসীরা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা লগ্নে মুক্তি সংগ্রামসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ও রাজনৈতিক সংকটে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছেন। রেমিটেন্স যোদ্ধাদের অব্যাহত প্রচেষ্টায় ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বিনিয়োগ বান্ধব নীতির ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আসতে শুরু করেছে।
বিনিয়োগকারীদের সুবিধার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে দেশের বিভন্ন স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকনমিক জোন গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। এগুলোর বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলছে।
সম্মেলনে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম তার বক্তব্যে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভূয়সী প্রসংসা করে বলেন, প্রবাসীদের অসাধারন ক্ষমতা রয়েছে। দেশকে এগিয়ে নিতে প্রবাসীদের অবদান অপরিসীম। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিরা সম্মানের জায়গা করে নিয়েছেন। দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক। মালয়েশিয়া আমাদের বন্ধু প্রতিম দেশ। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে।
হাইকমিশনার মহ.শহীদুল ইসলাম বাংলাদেশের উন্নয়ন তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সকল ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্ববাসী বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছে।
হাই কমিশনার আরো বলেন, দূতাবাস শ্রমিক বান্দব দূতাবাস। মালয়েশিয়া সরকার অবৈধদের বৈধতা দিতে বিগত রি-হিয়ারিং প্রোগ্রামের সময় দূতাবাস থেকে প্রায় ৬ লাখ পাসপোর্ট ইস্যুকরা হয়েছে। যার ফলে প্রায় সাড়ে ৪ লাখেরও বেশি কর্মী বৈধতা পেয়েছেন। আর যারা প্রতারনার শিকার হয়েছেন তাদেরকে বৈধতা দিতে মালয়েশিয়া সরকারের সর্বোচ্ছ মহল পর্যন্ত যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানানো হয়েছে।
সম্মেলনে আলোচক হিসেবে ছিলেন-ডিজি এন আইডি ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো: সাইদুল ইসলাম এনডিসি পিএসসি, মালয়েশিয়া ইসলামিক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. এস এম আব্দুল কুদ্দুছ, ইনভেষ্টমেন্ট ব্যাংকার সৈয়দ সাদিক রেজা,সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ।
‘দায়িত্বশীল নাগরিক-সম্মৃদ্ধ দেশ‘ শিরোনামে ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সিরিজ ২০১৯ এর সভা পরিচালনা করেন মালয়েশিয়ার কোতা দামানসারা সেগী ইউনিভার্সিটি এন্ড কলেজের ষ্টুডেন্ট বৃষ্টি খাতুন সাবা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেন্টার ফর এনআরবি চেয়ারপার্সন এস এম সেকিল চৌধুরী।
সভাপতি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বিশ্বব্যাপী বিশেষ সেমিনার আয়োজন করছে এনআরবি। দেশের ব্যবসায়ী, শিল্পপতিসহ বিশিষ্টজনেরা তাতে অংশ নিচ্ছেন। মালয়েশিয়ার সম্মেলনটি এনআরবির ‘বিশ্ব সম্মেলন সিরিজ-২০১৯’-এর একটি অংশ। এদিকে সম্মেলনের শুরুতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও কমনওয়েলথ কুইনের সেমিনার উপলক্ষে দেওয়া বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
বাংলাদেশের শিল্পক্ষেত্রের নানা অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন সেকিল চৌধুরী। মি. চৌধূরী বলেন, বাংলাদেশ এক সম্প্রীতির দেশ। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এখন দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে। ২০৩০ সালে বিশ্বের ৩০তম বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশের বৈদেশিক আয়ের ৬৭ শতাংশই এখন আসছে এই এনআরবির অর্থের মাধ্যমে।
সম্মেলনে প্রবাসীদের সমস্যা ও সম্ভাবনার প্রস্তাব তুলে ধরেন, কমিউনিটি নেতা মাহবুব আলম শাহ, পিএইচডি গবেষক মো: আব্দুর রৌফ শিপলু, কমিউনিটি নেতা সোনাহর আলী রশিদ খাঁন, সাংবাদিক আমাদুল কবির, সাংবাদিক ওয়াহিদ সোহান, এনামুল হক প্রমুখ।
এ ছাড়া সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, হাই কমিশনের শ্রম কাউন্সিলর মো: জহিরুল ইসলাম, প্রথম সচিব শ্রম মো: হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল, প্রথম সচিব কন্স্যুলার মো: মাসুদ হোসেইন, প্রথম সচিব বাণিজ্য মো: রাজিবুল আহসান, পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার প্রথম সচিব মো: মশিউর রহমান তালুকদার, কমিউনিটি নেতা নাজমুল ইসলাম বাবুলসহ মালয়েশিয়ায় বসবাসরত সকল স্থরের কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ।