শ্রমিক সঙ্কটে মালয়েশিয়ার পাম উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা
করোনাভাইরাস (কোভিড -১৯) বিস্তার রোধে বিধিনিষেধের কারণে পাম বাগানে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মালয়েশিয়া এবং অন্যান্য দেশে মহামারি করোনাভাইরাস রোধে ঘরে বসে থাকার আদেশের কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলিতে নিয়োগ স্থগিত থাকায় প্রায় ৫ লক্ষাধিক শ্রমিক সংকটে পড়েছে এ খাত।
মালয়েশিয়ার পাম অয়েল অ্যাসোসিয়েশনের (এমপিওএ) প্রধান নির্বাহী নাগিব ওয়াহাব জানিয়েছেন,"গত তিন মাসে নতুন কোন শ্রমিক পাইনি।" “লকডাউন চলাকালীন অনেক শ্রমিক প্রত্যাবাসনে চলে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির পামওয়েল উৎপাদন এবার কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সিম ডার্বি প্ল্যানটেশনস এবং এফজিভি হোল্ডিংসের মতো বড় প্লান্টারের প্রতিনিধিত্বকারীরা চায়, বিদ্যমান শ্রমিকদের কাজের পারমিট বাড়ানো এবং বাংলাদেশের মতো দেশগুলি থেকে নিয়োগ দ্রুত করা।
মালয়েশিয়ান পাম তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, পামবাগানে কাজ করা শ্রমিকদের প্রায় ৭০ শতাংশই আসে ইন্দোনেশিয়া থেকে। দুই দেশের সংস্কৃতিতে অনেক বেশি মিল থাকায় এবং তুলনামূলক বেশি আয় হওয়ায় ইন্দোনেশিয়ান শ্রমিকরা মালয়েশিয়াতে প্রচুর পরিমাণে কাজ করতে আসে।
এ ছাড়াও সম্প্রতি মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বিদেশীদের উপর কড়াকড়ি বিভিন্ন নিয়ম আরোপ করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গুলো বলছে, করোনায় ‘কম শ্রমিকের জন্য এবারের তেল উৎপাদন প্রভাবিত হবে।’ তারা বলছেন বর্তমানে ‘শ্রমিক পাওয়া এখন দূরুহ ব্যাপার। বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়া থেকে।’
তবে উদ্ভিদ ও পণ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ খায়রউদ্দিন আমান রাজালী, এ খাতে স্থানীয় শ্রমিক নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িদের।
“আমরা যদি এই সেক্টরে নতুন বিদেশী কর্মী প্রবর্তনের কথা বলি তবে অদূর ভবিষ্যতে তা ঘটবে না। কারণ আমরা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছি,।” সম্প্রতি সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা বার্নামা টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে খায়রুউদ্দিন এ কথা বলেন।
তিনি আরোও বলেন,“বিদেশী কর্মীদের বর্তমান ব্যাচ হ'ল ওয়ার্ক পারমিট। যখন তাদের অনুমতি শেষ হয়, তখন তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়। বর্তমানে স্থানীয়দের এ কাজে নিয়োগ দেয়া আমাদের জন্য একটি সুযোগ। মন্ত্রী বলছেন, বৃক্ষরোপণ ও পণ্য খাত, যার মধ্যে খেজুর, কোকো এবং রাবার রয়েছে, বর্তমানে ২২০,০০০ স্থানীয় এবং ২৬৫,৩৯৭ নিবন্ধিত বিদেশী কর্মী এ সেক্টরে কাজ করছে। তবে ৫ লক্ষাধিক শ্রমিকের প্রয়োজন রয়েছে।
এ ছাড়া দেশটিতে পাম ওয়েলের পাশাপাশি খেজুরের আবাদ কৃষিক্ষেত্রের মোট ১৮%। পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় খেজুর ফল নষ্ট হতে পারে বলে ধারনা করছেন সংশ্লিষ্টরা।