রাজকীয় ক্ষমা পেতে পারেন কারাবন্দি নাজিব রাজাক: মাহাথির
দুর্নীতির মামলায় ১২ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক রাজকীয় ক্ষমা পেতে পারেন এবং তাকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মালয়েশিয়ার প্রবীণ রাজনীতিবিদ মাহাথির মোহাম্মদ।
মাহাথির বলেন, ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ (ওয়ানএমডিবি) রাষ্ট্রীয় তহবিলের কয়েক শ কোটি ডলারের দুর্নীতি কেলেঙ্কারি সংশ্লিষ্ট নানা মামলার বিচারে বিলম্ব ন্যায়বিচার বঞ্চিত করারই নামান্তর।
দুর্নীতির এ মামলায় ২০২০ সালে দণ্ডিত হন নাজিব। পরে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করেছিলেন। তবে গত মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ আদালত নাজিবের আপিল খারিজ করে তার ১২ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখে।
একই সঙ্গে ওয়ানএমডিবি থেকে অবৈধভাবে ১ কোটি ডলার গ্রহণের সাজা হিসাবে তার বিরুদ্ধে ২১ কোটি রিঙ্গিত জরিমানাও বহাল আছে।
৯৭ বছর বয়সী মাহাথির এক বিবৃতিতে বলেছেন, “কারাবন্দি হওয়ার পর নাজিবের ক্ষেত্রে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে; এমন সম্ভাবনা প্রবল।” তবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত আর কিছু বলেননি।
এক দিন আগেই নাজিবের অনুসারীদের কাছ থেকে তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার একটি আবেদন পেয়েছে মালয়েশিয়ার রাজা আল-সুলতান আবদুল্লাহর প্রাসাদ।
নাজিবের রাজক্ষমা পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে মাহাথিরের মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজপ্রাসাদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নাজিবের সঙ্গে মালয়েশিয়ার রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠতা আছে বলে মনে করা হয়। গত মে মাসে নাজিবের স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ছবিতে রাজার সঙ্গে তাকে ঈদ উদ্যাপন করতে দেখা গেছ।
তবে নাজিবকে ক্ষমা করে দেওয়ার আবেদনে রাজপ্রাসাদ কীভাবে প্রতিক্রয়া প্রকাশ করবে তার কোনও ইঙ্গিত এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। নাজিব ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৯ বছর মালয়েশিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন।
নাজিব রাজাক: বিলাসী জীবনযাপন থেকে কারাগারের বদ্ধ প্রকোষ্ঠে
মালয়েশিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব তার দলের সাবেক নেতার ক্ষমার বিষয়টি কীভাবে নেবেন তারও কোনও ইঙ্গিত এখনও পাওয়া যাচ্ছে না।
কারণ, ইসমাইল সাবরি এখন ক্ষমতাসীন ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (ইউএমএনও) ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করার চেষ্টায় আছেন।
২০২০ সালের জুলাইয়ে প্রথম দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর থেকে নাজিব জামিনেই ছিলেন। গত মঙ্গলবার আদালতে কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে সর্বশেষ আপিলে হারার পর কড়া নিরাপত্তায় তাকে কাজাংয়ে দেশটির সর্ববৃহৎ কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, নাজিবকে ক্ষমতা থেকে সরানোয় মাহাথিরের ভূমিকা ছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে মাহাথিরের ঐতিহাসিক জয়ের মধ্য দিয়ে নাজিবের পতন হয়।