কাতারে বাতিল হলো এক্সিট পারমিট

এক্সিট পারমিট বা বর্হিগমন ছাড়পত্র (খুরুজিয়া) ছাড়া ছুটিতে বা স্থায়ীভাবে দেশে যেতে পারবেন কাতারে কর্মরত বিদেশি শ্রমিক ও কর্মীরা। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলথানি ৪ সেপ্টেম্বর এই বর্হিগমন ছাড়পত্র বা খুরুজিয়ার বাধ্যবাধকতা বাতিল করে নতুন আইনে অনুমোদন দিয়েছেন।
ফলে এখন থেকে ২০১৫ সালের ২১নং আইন, যা বিদেশি অভিবাসীদের আগমন, আবাসন ও বর্হিগমন আইন হিসেবে পরিচিত, সেটিতে নতুন এই সংশোধনী যুক্ত হওয়ার পর কাতারে শ্রম আইনের অধীনে কর্মরত কর্মীরা দেশে যেতে চাইলে (কফিল) প্রতিষ্ঠানের মালিকের কোনো অনুমতির প্রয়োজন হবে না।
২০১৮ সালের ১৩নং আইন হিসেবে অনুমোদিত এই নতুন আইনে বলা হয়েছে, কাতারে শ্রম আইনের অধীনে কর্মরত কর্মী শ্রমচুক্তি কার্যকর থাকাকালে অস্থায়ীভাবে বা স্থায়ীভাবে কাতার ত্যাগ করতে পারবেন। তবে কোনো নিয়োগ কর্তা চাইলে আগে থেকে কারণ উল্লেখ সাপেক্ষে এমন কর্মীদের নামের তালিকা শ্রম মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে পারবেন, যাদের কাজের ধরণ বিবেচনায় কাতার ত্যাগের আগে নিয়োগ কর্তার অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
আর এমন কর্মীদের সংখ্যা কোনোভাবেই পুরো প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শতকরা পাঁচ ভাগের চেয়ে বেশি হতে পারবে না। শ্রম মন্ত্রণালয় যদি নিয়োগ কর্তার পাঠানো তালিকা অনুমোদন করেন, তবে সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা অবহিত করা হবে।
আর যারা শ্রম আইনের অধীনে কর্মরত নন, তাদের কাতার ত্যাগের নীতিমালা শ্রমমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুসারে তৈরি করা হবে। পাশাপাশি যদি কোনো কর্মী যে কোনো কারণে কাতার ছেড়ে যেতে সক্ষম না হন, তবে ওই কর্মী বর্হিগমন ছাড়পত্র সম্পর্কিত কমিটির দ্বারস্থ হবেন এবং এই কমিটি তিনদিনের মধ্যে তা সমাধান করবে।
মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় অঞ্চলে কাতারই প্রথম বিদেশি কর্মীদের জন্য এমন সুযোগ করে দিল। আর এর ফেলে দেশে যেতে নিয়োগ কর্তার মর্জির উপর কর্মীদের নির্ভরতা আর থাকছে না। এর আগে ২০১৫ সালে আরব বিশ্বের প্রচলিত কফিল প্রথা বিলুপ্ত করে চুক্তি ভিত্তিতে বিদেশি কর্মীদের কাতারে আসার সুযোগ দেয় কাতার।
কাতারের এই আইনকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। সংস্থাটির প্রজেক্ট অফিসের প্রধান কর্মকর্তা বলেন, এই নতুন আইনের ফলে অভিবাসী কর্মীদের জীবনে একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। শ্রম পরিস্থিতি সংস্কারে কাতার কর্তৃপক্ষের যে প্রতিশ্রুতি ছিল, তা বাস্তবায়নে এটি একটি স্পষ্ট আলামত। আইএলও আগামীতে আরও গভীরভাবে কাতার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এসব সংস্কারে কাজ করে যাবে।