গোলান মালভূমি নিয়ে মাহমুদ আব্বাসের বক্তব্য
জেরুজালেম বা আরব অঞ্চলের সার্বভৌমত্বকে প্রভাবিত করে এমন যে কোন সিদ্ধান্ত বৈধ নয় বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক গোলান মালভূমি ইসরাইলের সার্বভৌমত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় প্রেক্ষিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ওয়াফার বরাতে আনাদলু জানায়, প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ আমেরিকান সকল প্রস্তাব দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এর তীব্র নিন্দা জানায়। জেরুজালেম এবং গোলান বিষয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক ও কুটনৈতিক সব রীতিনীতি লংঘন করেছে।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রপতির উদ্ধৃতি দিয়ে সূত্র আরও জানায়,ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘাতের যেকোনো পদক্ষেপের বৈধতা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এবং আরবদেশগুলোর শান্তি উদ্যোগের প্রস্তাবেই গৃহীত হবে।
গোলান মালভূমি ইসরাইলের সার্বভৌমত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সোমবার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।ওয়াশিংটনে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর উপস্থিতিতে তিনি এ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন।
১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় ইসরাইল এই জায়গাটি সিরিয়ার কাছ থেকে দখল করে নিয়েছিল। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র জেনেছে গোলান ইসরাইলের সার্বভৌম। আর এ কারণেই গোলান মালভূমিতে ইসরাইলের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি দেয়া উচিত যুক্তরাষ্ট্রের।
টুইটারে ট্রাম্প বলেন, ৫২ বছর পর গোলান মালভূমিতে ইসরাইলের সার্বভৌমত্বে স্বীকৃতি দেয়ার সময় এটিই।মালভূমিতে বর্তমানে ২০ হাজার অবৈধ দখলদার বসবাস করছেন। কাজেই এই দখলদারিত্ব কখনই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্বীকৃতি দিতে পারে না।
এদিকে ট্রাম্পের এমন ঘোষণায় বিশ্বজুড়ে সমালোচনা ও নিন্দা জানানো হয়েছে। এর মধ্যে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, তুরস্ক, ফ্রান্সসহ অনেক দেশ রয়েছে।
১৯৬৭ সালে আরবদের সঙ্গে ছয় দিনের যুদ্ধে সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরাইল। সেই সময় ইহুদিবাদী বাহিনী ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীর ও গাজা উপত্যকারও নিয়ন্ত্রণ নেয়।
পরে ১৯৮১ সালে গোলান মালভূমিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজ ভূখণ্ড বলে ঘোষণা দেয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহল কখনোই ইসরাইলের এই দাবির স্বীকৃতি দেয়নি।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১৬ নভেম্বর শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গোলান মালভূমির মালিকানা সংক্রান্ত এক ভোটাভুটি হয়।
সেখানে উপস্থিত ১৫৩ দেশের মধ্যে ১৫১ দেশ এ ভূখণ্ডের মালিকানা সিরিয়ার বলে স্বীকৃতি দেয়। শুধু আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইল প্রস্তাবটির বিপক্ষে অবস্থান নেয়।