মাটির নিচে পরমাণু কেন্দ্র তৈরি করছে ইরান
ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে মাটির নিচে পরমাণু কেন্দ্র তৈরি করার অভিযোগ করেছেন জাতিসংঘের পরমাণু পরীক্ষা সংক্রান্ত সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রসি। তিনি বলেন, নতুন করে মাটির গভীরে পরমাণু প্লান্ট তৈরির কাজ শুরু করেছে ইরান। জমাতে শুরু করেছে ইউরেনিয়ামও।
সম্প্রতি বার্লিনে অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে (এপি) দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি এ সব কথা বলেন।
এদিকে সান ফ্রানসিসকো ভিত্তিক প্লানেট ল্যাবের তোলা স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করেছে এপি। বুধবারের প্রকাশ করা ছবিতে দাবি করা হয়, ইরানের পরমাণু শক্তিকেন্দ্র নাতাঞ্জে মাটির নিচে নতুন করে অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করেছে। বলা হচ্ছে, পুড়ে যাওয়ার পরে নতুন করে তারা অবকাঠামো নির্মাণ করে।
২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্ব শক্তির সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে সরে আসে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ওয়াশিংটন। স্বাক্ষরকারী অন্য পাঁচ দেশ যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, জার্মানি ও ফ্রান্স চুক্তিতে থাকলেও এর কার্যকারিতা নেই বললেই চলে।
গত জুলাই মাসে ইরানের বর্তমান পরমাণু কেন্দ্রটিতে আগুন লেগে গিয়েছিল। ইরান দাবি করেছিল, চক্রান্ত করে ওই কেন্দ্রটিতে আগুন লাগানো হয়েছিল। ফের নতুন একটি পরমাণু কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের ওই প্রতিনিধি।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) ডিরেক্টর জেনারেল রাফায়েল গ্রসি এপি-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘নতুন করে মাটির গভীরে পরমাণু প্লান্ট তৈরির কাজ শুরু করেছে ইরান। ইউরেনিয়ামও জমাতে শুরু করেছে দেশটি। তবে পরমাণু অস্ত্র তৈরির মতো ইউরেনিয়াম এখনও তাদের কাছে নেই।’
ডয়েচে ভেলের খবরে বলা হয়েছে, ২০০২ সালে প্রথম স্যাটেলাইট ইমেজে ইরানের পরমাণু শক্তিকেন্দ্র নাতাঞ্জের ছবি ধরা পড়ে। পশ্চিমা বিশ্ব বিষয়টি উদ্বেগ প্রকাশ করে। ২০০৩ সালে জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা ইরানের পরমাণু চুল্লি দেখতে যান। তারা জানান, মাটি থেকে সাত দশমিক ছয় মিটার নিচে তৈরি করা হয়েছে ওই পরমাণু কেন্দ্র। বিমান হামলায়ও যাতে কেন্দ্রটির কোনো ক্ষতি না হয়, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গোটা এলাকা জুড়ে রাখা হয়েছে অ্যান্টি এয়ারক্রাফট মিসাইল।
ইরান যেন পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, সেই বিয়ষটি মাথায় রেখেই ২০১৫ সালে পরমাণু চুক্তি হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, পরমাণু গবেষণা করতে পারলেও ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না। নির্দিষ্ট পরিমাণ ইউরেনিয়ামের বেশি জমা করা যাবে না বলেও চুক্তিতে স্থির হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করছে, গোপনে নিউক্লিয়ার অস্ত্র তৈরি করছে ইরান। যদিও তার কোনো প্রমাণ এখনও সামনে আসেনি।