শিরোনাম
অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ রাষ্ট্র সংস্কার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপে তৎপর ভারতীয় আমেরিকানরা টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা সাকিবের যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্রে রাশিয়ায় হামলা করল ইউক্রেন কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ভারতীয় সেনা নিহত সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর গাজায় ১০০ ট্রাক ত্রাণ লুট করে নিল মুখোশ পরিহিতরা নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 25 June, 2020 06:41

ভালো থেকো মা......

ভালো থেকো মা......

॥ সরদার বদিয়ার॥ 
সেদিন আকাশটা এমন আলো ঝলমল ছিল না। হাওয়ায় দুলছিল ধুসর কালো মেঘেরা। ধরণী আলো-আঁধারের খেলায় মেতেছিল। মৃদুমন্দ হাওয়া বইছিল। তখন দুলে উঠা মেঘেরা অঝরে কাঁদেনি। মাঝে মধ্যে অশ্রু বিসর্জন করছিল। বর্ষার জলে মায়ের দেহমন সিক্ত হয়েছিল। শরীরটা শিরশির করে উঠল। কোনো শঙ্কায় মনটা আমার উতালা ছিল।

কয়েকদিন ধরে মা আমার খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন। হলদে রাঙা শরীরটা কেমন ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছিল। রাঙা ঠোঁটের সেই হাসিটা কেমন মলিন হয়ে পড়েছিল। মা হাসলে গালে টোল পড়তো। সেই হাসিমাখা মুখে তখন দ্যুতি ছড়িয়ে পড়তো।

মায়ের সেই হলদে রাঙা রংটা আমরা কেউ পায়নি। তবে ঝুমা কিছুটা পেয়েছে। বিশেষ করে হাসিটা। হাসলে ওর গালেও টোল পড়ে। দাদু-দিদার আদর যত্ন ও-ই একা পেয়েছে। খুব কেঁদেছিল ঝুমা। মাকে ও আপু বলে ডাকতো। এখন কি ওর আপুর কথা তেমন করে মনে পড়ে?

আমার মার ক্যান্সার হয়েছিল। চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, আর মাত্র তিন মাস। মা জনতেন না। একটা দিন চলে যেত-মাকে হারাতাম একদিন। নিশ্চিত মৃত্যুর প্রহরে আমরাও কষ্ট পাচ্ছিলাম।

চিকিৎসকের কথায় বিশ্বাস করে ৮৮ দিনের মাথায় এই দিনে (১৯৯৯ সালের ২৫ জুন) মাকে নিয়ে যাওয়া হয় গাঁয়ের বাড়িতে। মাকে রওনা করিয়ে দিয়ে... মনটা বিষণ্নতায় ভরে উঠেছিল।

শহরের বাসায় তখন একা আমি। বন্ধু মিলন আমাকে অনেকক্ষণ সঙ্গ দিয়েছিল। আমি চোখের জল ধরে রাখতে পারছিলাম না। মনটা কি কিছু আঁচ করতে পেরেছিল!

উদভ্রান্ত মন নিয়ে পত্রিকা (সাতক্ষীরা চিত্র) অফিসে। কাজে মন বসছিল না। রাত আটটা কি সাড়ে নয়টা। আমার এক চাচাতো ভাই (খোকন) হঠাৎ অফিসে। তাকে দেখেই মনটা কেঁদে উঠল।
বললাম মায়ের খবর বলো? ও বললো তোর মা ভালো আছে। তবে শরীরটা একটু খারাপ। তোকে দেখতে চেয়েছে। বাড়ি যেতে হবে। বাড়ি পৌঁছে দেখি, মায়ের নিথর দেহ সাদা চাঁদরে মুড়িয়ে রাখা।

আজ ২১ বছর ওই দূর আকাশে তারা হয়ে জ্বলজ্বল করছে আমার মা। মায়ের ডাক নামও ছিল তারা মণি।

অনেকদিন নীল আকাশে মা একা ছিল। এখন বাবাকেও পেয়েছে। তোমরা ভালো থেকো......

লেখক: সরদার বদিয়ার, সাংবাদিক

উপরে