শিরোনাম
সব প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপে তৎপর ভারতীয় আমেরিকানরা টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা সাকিবের প্রথমবারের মতো ইউক্রেনে রাশিয়ার আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ভারতীয় সেনা নিহত সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর গাজায় ১০০ ট্রাক ত্রাণ লুট করে নিল মুখোশ পরিহিতরা নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 3 July, 2018 01:31

সব জায়গায়ই চলছে ধর্মীয় গোঁড়ামি

সব জায়গায়ই চলছে ধর্মীয় গোঁড়ামি
তসলিমা নাসরিন :

কলকাতার একাডেমি অব ফাইন আর্টস প্রাঙ্গণে কারা যেন একটি গাছতলায় দুটি পাথর বসিয়ে গেছে। তারপর ওই পাথর দুটিতে সিঁদুর ও মালা পড়িয়ে ফুল-পাতা ছড়িয়ে গেছে অন্য কারা যেন। এসবের মানে, পাথর দুটি পাথর নয়, ভগবান!

মুশকিল হল, সিঁদুর লেপা পাথরকে যে কেউ এখন সরিয়ে দিতে পারে না। সরিয়ে দিলে ধার্মিকেরা ছুটে এসে মারধর করবে। কেউ নাকি ওই পাথর দুটোকে লাথি মেরে সরাতে চেয়েছিল, তাতেই এক দল তেড়ে এসেছে, শিব ঠাকুরকে লাথি মেরেছে, এত বড় স্পর্ধা!

অনেকে বলছেন, প্রগতিশীলদের সাংস্কৃতিক অঙ্গণে মুক্তচিন্তকদের মতবিনিময়ের জায়গায় মন্দির গড়ার ষড়যন্ত্র চলছে। মন্দির গড়ে উঠলে মুশকিল হল, এলাকাটিতে সংস্কৃতি চর্চার বদলে ধর্ম চর্চাই প্রাধান্য পাবে। ধর্মবাদীরা ধর্মকে সংস্কৃতি করতে চায়, সংস্কৃতিকে ধর্ম করতে চায় না।

এই প্রশ্ন তো আসেই, মন্দির গড়ার জন্য একাডেমি চত্বরের দরকার হয় কেন? পূজা করার জায়গার কি অভাব কলকাতায়? শত শত মন্দির তো আছেই এ জন্য! গোঁড়ামির বিরুদ্ধে যেখান থেকে মিছিল বের হয়, সেখানে গোঁড়ামির পাথর রেখে এলেই প্রতিবাদের কণ্ঠ বুজে যাবে, তাই তো!

ধার্মিকদের নিয়ে মুশকিল, তারা পৃথিবীর সব জায়গা দখল করে নিতে চায়। সব সরকারকে তাদের প্রচারক বানাতে চায়, সব প্রতিষ্ঠানকে তাদের সমর্থক করতে চায়, সব মানুষকে বিশ্বাস করাতে চায় সেই রূপকথায়, যে রূপকথায় তারা বিশ্বাস করে।

বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আড়াই হাজার মসজিদ মাদ্রাসা বানানো হয়েছে। রাতে রাতে মোল্লারা ওয়াজ শোনায় রোহিঙ্গাদের, বুদ্ধি দেয়, মিয়ানমার তাদের ফেরত নিতে চাইলেও যেন তারা ফেরত না যায়। এও এক ষড়যন্ত্র, ধর্ম দিয়ে সমাজ ছেয়ে ফেলার ষড়যন্ত্র। রোহিঙ্গা শিশুদের মগজধোলাই চলছে। এরাই তো ভবিষ্যতের জিহাদি।

ধর্মের নোংরা রাজনীতি থেকে শুধু নিজেদের বাঁচালেই চলবে না, সমাজকেও বাঁচাতে হবে, রাষ্ট্রকে তো বাঁচাতে হবেই।

 

লেখিকা: নির্বাসিত বাংলাদেশী সাহিত্যিক

উপরে