অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ব্যতিক্রমী বাংলাদেশ। ড. আতিউর রহমান
এই করোনাকালেও উন্নয়ন পর্যবেক্ষকদের চমকে দিচ্ছে বাংলাদেশ। কভিড-১৯-এ পর্যুদস্ত লড়াকু বাংলাদেশ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে। তবে বাংলাদেশের গল্পটি ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে। যেখানে বিশ্ব অর্থনীতি এ বছর ৫ শতাংশেরও বেশি হারে সংকুচিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, পাশের দেশ ভারতের অর্থনীতি গত তিন মাসে প্রায় ২৪ শতাংশ হারে সংকুচিত হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের অর্থনীতি জোর কদমে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরে ৮ শতাংশের বেশি হারেই বাড়বে বলে সরকার বলেছে। এরই মধ্যে নানা খাতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কচি চারাগুলোর সবুজ পাতা চোখে পড়ছে। এডিবি তাই বলেছে, এ বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৭.৮ শতাংশ। পরের বছর ৮ শতাংশ। তবে প্রবৃদ্ধির হারের চেয়ে যে বিষয়টি বিবেচনার দাবি রাখে তা হলো এমন সংকটকালেও অর্থনীতির বাড়ন্ত ভঙ্গিটি। প্রবৃদ্ধির হার যা-ই হোক, আমরা যে সংকোচন নয়, বাড়ন্তের সবুজ চত্বরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছি—সেটিই বড় কথা।
তবে তিন মাসের সাধারণ ছুটিতে আমাদের অর্থনীতির নানা খাতে বড় ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। আনুষ্ঠানিক খাতের নানা উপখাত এখনো ধুঁকছে। দারিদ্র্যরেখার ঠিক ওপরের অনেক মানুষ দারিদ্র্যের ফাঁদে পড়ে গেছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের গায়েও এই সংকটের ঝাপটা লেগেছে। তবে বাংলাদেশের সরকার প্রান্তজনের জীবন ও জীবিকা বাঁচাতে খুবই দ্রুত নানামুখী সামাজিক সুরক্ষা, খাদ্য সহায়তা ও ত্রাণ কার্যক্রমে সামান্য ইতস্তত করেনি। স্থানীয় প্রশাসন, অসরকারি ও সামাজিক সংগঠনগুলোও মানুষ বাঁচানোর এই সংগ্রামে তাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে বন্যা এসে পড়ায় চরাঞ্চলসহ দেশের এক-চতুর্থাংশ ব্যাপক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে যায়। কিন্তু সব অংশীজন মিলে আমরা এই সংকট থেকেও মানুষকে বাঁচানোর সংগ্রামে অনেকটাই সফল হয়েছি।
করোনা সংকটে পড়া শিল্প-কারখানা এবং খুদে ও মাঝারি উদ্যোগগুলো ফের অর্থনীতির মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেসব সাহসী উদ্যোগ নিয়েছিল সেসবের সুফল আমরা পেতে শুরু করেছি। আর্থিক খাতে তারল্যের যেন কোনো ঘাটতি না দেখা দেয় সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজের ‘ব্যালান্সশিট’ সম্প্রসারণ করে নানা ধরনের প্রণোদনা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বশেষ বিশ্ব মন্দা মোকাবেলার কৌশল হিসেবে পুনরর্থায়নসহ যেসব আর্থিক অন্তর্ভুক্তির কৌশল গ্রহণ করেছিল সেগুলো আরো বেশি করে এবার ব্যবহার করেছে। ফলে আর্থিক বাজারে তারল্যের কোনো ঘাটতিই দেখা দেয়নি। ব্যাংক হার, রেপো, রিভার্স-রেপো, এডিআর, এসএলআরসহ প্রায় সব হারকেই অংশীজন-বান্ধব করার জন্য প্রয়োজনমতো রদবদলের উদ্যোগ নিয়েছে। অন্যদিকে খোলাবাজারে ট্রেজারি বন্ড/বিল কেনার প্রতিযোগিতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুরু থেকেই সক্রিয় রয়েছে। ফলে ছয় মাসের ট্রেজারি বিলের যে আয় হার ছিল ৭.৩৪ শতাংশ তা কমে ৪.৪৮ শতাংশে পড়ে গেছে। এই হারে এসব ‘পেপারস’ কিনতে উৎসাহী নয় বলে ব্যাংকগুলো ব্যক্তি খাতে ঋণ দিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
আর্থিক বাজারে তারল্যের পরিবেশ আরো বেশ কিছুটা সময় ধরে রাখতে হবে। বিশ্বে তেলের দাম কম। আমাদের দেশীয় অর্থনীতির অনেক অংশ এখনো পুরোপুরি জেগে ওঠেনি। বন্যার কারণে সরবরাহে সাময়িক টান পড়ায় সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম খানিকটা বেড়েছে। তবু বলা চলে ‘কোর ইনফ্লেশন’ সেভাবে বাড়ার আশঙ্কা নেই। বাড়িভাড়া বাড়ছে না। তাই ঘোষিত মূল্যনীতির নমনীয় ধারাটি ধরে রাখার প্রয়োজন রয়েছে। এর সুফল পুঁজিবাজারেও খানিকটা পড়েছে। আবাসন বাজারেও হয়তো পড়বে। তারল্য বাড়ার পেছনে প্রণোদনা কর্মসূচিগুলো ছাড়াও আরো নীতি সহায়তা কাজ করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি রেটগুলো কমানো ছাড়াও খেলাপি ঋণের পুনঃ তফসিলের শর্ত বেশ শিথিল করেছে। খেলাপি ঋণের প্রভিশনিংয়ের ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। তাই সংকটকালেও ব্যাংকের সার্বিক লাভের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
পোশাকশিল্পে নামমাত্র সুদে ঋণ নিয়ে কর্মীদের বেতন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগটি ছিল খুব দূরদর্শী। ফলে কারখানা চালু রাখা গেছে। বড়দিন সামনে রেখে কারখানাগুলো তাদের অর্ডার ফিরে পেতে শুরু করেছে। ইইউ যেসব কর্মী সাময়িক চাকরি হারিয়েছে তাদের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্রুতই এক হাজার ১০০ কোটি টাকারও বেশি একটি নয়া প্রণোদনা কর্মসূচি চালুর অপেক্ষায় আছে। সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিরাট অঙ্কের প্রণোদনা কর্মসূচি আগেভাগে ঘোষণা করে উদ্যোক্তাদের মনোবল ধরে রাখতে পেরেছে। তা ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নমনীয় নীতিমালা যে কাজ করছে তার প্রমাণ নানা দিক থেকেই মিলছে। রেমিট্যান্স এই জুলাইয়ে গত জুলাই থেকে ৬২.৭ শতাংশ বেড়েছে। কম হলেও রপ্তানি এই সময়টায় ০.৮৪ শতাংশ বেড়েছে। মোট আমদানি সে হারে না বাড়লেও নিত্যপণ্য ও কাঁচামালের আমদানি বাড়ছে। বাণিজ্য ঘাটতি কমছে। জুলাইয়ে তা ৮৬ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। সামগ্রিক লেনদেনের ভারসাম্য এখন উদ্বৃত্ত (১.১ বিলিয়ন ডলার)। বাজার থেকে ডলার কিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকার দাম ধরে রাখছে। একই সঙ্গে বাজারে টাকা ঢুকছে। তাই তারল্যও বাড়ছে। ফলে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ছে। অবশ্য বিদেশি ঋণ ছাড়ের পরিমাণ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে জরুরি সহায়তা পাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার প্রভাবেও রিজার্ভ বেড়েছে। মানে অর্থনীতির বহিঃশক্তি বাড়ছে। তাই আমাদের সার্বভৌম ঋণমান স্থিতিশীল রেখেছে আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সিগুলো।
অন্য কিছু সূচকেও বাংলাদেশের অর্থনীতি যে এগিয়ে চলেছে তার প্রমাণ মেলে। যেমন—এই জুলাই মাসে ৬২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে। এখন ৪.২৭ কোটি সচল হিসাব আছে মোবাইল ব্যাংকে। গত তিন মাসেই এমন হিসাব বেড়েছে ১৩.২৫ শতাংশ। এর বেশির ভাগই গ্রামে যাচ্ছে। এভাবেই আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা রয়েছে। অবশ্য বন্যার্ত অঞ্চল ছাড়া অন্যত্র গ্রামীণ অর্থনীতির চাঙ্গাভাব সহজেই চোখে পড়ছে। এজেন্ট ব্যাংকের লেনদেনও হালে বেশ বাড়ছে। গত অর্থবছর থেকে এজেন্ট ব্যাংকের আমানত বেড়েছে ৯৩ শতাংশ। মোট ঋণ দেওয়া হয়েছে ৭২০ কোটি টাকা। আমানতের চেয়ে ঋণ কম। তার মানে সঞ্চয় বাড়ছে। সিটি ব্যাংক ও বিকাশ যৌথভাবে ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ ব্যবহার করে অতি ক্ষুদ্র ঋণের (ন্যানো-ক্রেডিট) একটি পাইলট কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করেছে। এই অভিজ্ঞতার আলোকে আরো বড় কর্মসূচি নিয়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন আরো সহজীকরণের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে এমএফআইগুলোও ভূমিকা রাখতে পারে। ডিজিটাল নারী উদ্যোক্তাদের এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে। উপযুক্ত বিনিয়োগ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। ব্যাংকগুলো সেদিকেই হাঁটছে। আর কৃষি যে ভালো করছে তা তো আমরা জানিই। তবে বন্যাকবলিত এলাকা, বিশেষ করে চরাঞ্চলের কৃষকদের জন্য আলাদা মনোযোগের দরকার রয়েছে। যথেষ্ট অর্জন থাকলেও আত্মতুষ্টির কোনো অবকাশ নেই। কৃষক ও গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের জন্য যেসব প্রণোদনা সরকার ঘোষণা করেছে সেগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন খুবই জরুরি। বড় উদ্যোক্তারা ঠিকই প্রণোদনার অর্থ তুলে নিয়েছেন। তাঁরা তাঁদের জন্য ঘোষিত ঋণের ৭৩ শতাংশ পেয়ে গেছেন। কিন্তু কৃষক ও কুটির-ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোক্তারা এখনো মাত্র ২০ শতাংশের মতো ঋণ নিতে পেরেছেন। নানা নিয়মনীতির জটিলতা দেখিয়ে তাদের ঋণের গতি থামিয়ে দেওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রি-শিপমেন্ট ঋণের মাত্র ১.১ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। প্রায় ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান দেয় যেসব ছোট ও মধ্যম ‘ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ’ শিল্প-কারখানাগুলো, যেমন (ডায়িং, ওয়াশিং, লেভেলিং, প্রিন্টিং), তারা কিন্তু এই প্রণোদনা নিতে পারছে না। ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলোর জন্য তিন হাজার কোটি টাকার ঘূর্ণায়মান পুনরর্থায়ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে মাত্র এক হাজার কোটি টাকা বিতরণ করা গেছে। ক্রেডিট ডেভেলপমেন্ট ফোরাম দাবি করেছে, এ ক্ষেত্রে নীতি-নমনীয়তা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাড়তি মনোযোগের প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি এখনো বড় এমএফআইগুলো সেভাবে এগিয়ে আসছে না কেন, তা দেখার প্রয়োজন রয়েছে।
এই মহামারির সময় দেখা গেছে, কৃষকসহ গ্রামীণ উদ্যোক্তারা আমাদের অর্থনীতির শক্তিমত্তার মূল ভিত্তি। আজকাল অনেক শিক্ষিত তরুণও গ্রামীণ আধুনিক অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এই সরকারের ডিজিটাল রূপান্তর তাদের অনেককেই উৎসাহী করেছে। সাড়ে ছয় লাখের বেশি তরুণ এখন ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত। তাদের ব্যবসা করার উপায় সহজ করে দেওয়া এবং সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তাদের ভ্যাট ও আয়কর থেকে আপাতত বাইরে রাখা যেতে পারে। তাদের জন্য বিদেশ থেকে অর্থ আনার সুযোগ সহজ করে ফেলা হোক। স্ট্যানচার্ট ও বিকাশ মিলে মালয়েশিয়া থেকে সহজেই রেমিট্যান্স আনার ব্যবস্থা করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দিয়েছে। ফ্রিল্যান্সারদের জন্য অনুরূপ সহজ অর্থ প্রাপ্তির সুযোগ কি কেন্দ্রীয় ব্যাংক করে দিতে পারে না? নিশ্চয়ই পারে। নিয়মনীতি সহজ করাটাই যে আসল প্রণোদনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিডার পর্ষদ সভায় আরো সহজ সার্ভিস দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বিডা এরই মধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। অন্যান্য অংশীজনকে খোলা মনে এগিয়ে আসতে হবে।
এত কিছুর পরও বাংলাদেশের অর্থনীতি আড়মোড়া ভেঙে উঠে দাঁড়াচ্ছে। করোনাকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণ ও সাহসী নেতৃত্বের গুণেই এটা সম্ভব হয়েছে। তবে এখানেই বসে থাকলে চলবে না, যেতে হবে আরো বহুদূর। করোনাভাইরাসকে পুরোপুরি পর্যুদস্ত না করা পর্যন্ত ব্যবসা-বাণিজ্যে আস্থার ভাব পুরোপুরি আসবে না। আশার কথা, নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আমাদের হাসপাতালগুলো কভিড চিকিৎসায় যথেষ্ট দক্ষতা দেখাচ্ছে। ডাক্তারসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সাহসী ভূমিকার কথা জাতি চিরদিন মনে রাখবে। তবে উপযুক্ত টিকা ও ওষুধ না আসা পর্যন্ত আমাদের আরো সজাগ থাকতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আমাদের প্রধানমন্ত্রী এখন বিশ্ব পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অনেক গবেষক বলছেন, বায়ুদূষণ কভিড মোকাবেলায় বড় অন্তরায়। তাই আমাদের পরিবেশের আরো উন্নতি অপরিহার্য। সম্প্রতি ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা ‘সোশ্যাল প্রগ্রেস ইমপেরাটিভ’ বলেছে যে বাংলাদেশ শিশুমৃত্যু, মাতৃমৃত্যু, অনলাইনসেবা, মাধ্যমিক শিক্ষায় মেয়েদের সাফল্য, গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ অনেক সামাজিক সূচকে আশাতীত সাফল্য দেখালেও বায়ুদূষণসহ পরিবেশের বিভিন্ন সূচকে ‘আন্ডার-পারফরম’ করছে।
সব শেষে বলব, আমরা যদি সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত প্রণোদনা কর্মসূচিগুলো সময়মতো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে এক নয়া নজির স্থাপন করতে পারবে। এমনিতেই তার সমআয়ের দেশগুলোর চেয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক অনেক সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। এই এগিয়ে চলাকে টেকসই করতে হলে আমাদের বাস্তবায়নের গুণমান অবশ্য বাড়াতে হবে। বিশেষ করে এই সংকটকালে স্থানীয় প্রশাসন, ব্যাংক, স্থানীয় সরকার, ব্যবসায়ী, চেম্বার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকার মিলে উপযুক্ত একটি বহু-অংশীজনভিত্তিক মনিটরিং কাঠামো গড়ে তুলতে পারলে এ ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত অর্জন নিশ্চয়ই সম্ভব। ব্লক চেইনসহ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে নিশ্চয় আমরা ডিজিটাল ড্যাশবোর্ড তৈরি করে প্রণোদনাসহ সব সেবা মনিটরিংয়ের আংশিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি। আসুন, আমরা সেই পথেই হাঁটি।
লেখক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর