পঙ্গুত্বকে জয় করে আব্দুল হামিদের সাহসী সাংবাদিক হয়ে উঠার গল্প
তুহিন সানজিদ:
ডান হাতের যে আঙ্গুল দিয়ে ভারি ক্যামেরার শাটার টেপেন সেই আঙ্গুলসহ হাতটি ৭০ ভাগই শক্তিহীন। ক্রাচে ভর দিয়ে কাঁপা কাঁপা হাত দিয়ে ছবি তোলার সময় দম বন্ধ করে কিছুটা শক্তি সঞ্চয় করে নিতে হয় তাকে।
ডান পা তার একেবারেই অচল। বাম পায়ে কিছুটা শক্তি থাকলেও স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে ৭৫ ভাগ মাংসপেশী নেই। বাম হাতটিও প্রায় ২৫ ভাগ শক্তিহীন। তবে হাতে পায়ে শক্তি না থাকলে কি হবে, সততা আর মনের শক্তি দিয়েই কলম আর ক্যামেরা হাতে দুর্নীতি আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন গত ৪০ বছর ধরে। সীমান্তের চোরাচালান, সন্ত্রাস, চোরাচালানিদের কাছ থেকে সীমান্তরক্ষীদের প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহন এবং দুর্নীতির রিপোর্ট করতে গিয়ে শতাধিকবার জীবননাশের হুমকি পেয়েছেন তিনি। অসংখ্যবার অপহরণ ও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তবুও তিনি থেমে যাননি। থামানো যায়নি তার ক্ষুরধার লেখনি। পঙ্গুত্বকে জয় করে সাহসী সাংবাদিক হয়ে উঠার এই গল্প সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়ার আব্দুল হামিদের।
দৈনিক ইনকিলাবের কলারোয়া উপজেলা প্রতিনিধি আব্দুল হামিদের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার সোনাবড়িয়া গ্রামে। তার বাবা আব্দুর রহমান ছিলেন স্বনামধন্য পল্লী চিকিৎসক, আর মা রাবেয়া খাতুন ছিলেন গৃহিনী। চার বোন, তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়।
আব্দুল হামিদ ১৯৬০ সালের ২০ এপ্রিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের স্বরুপনগর থানার পদ্মবিল গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। দুই সন্তানের জনক হামিদের স্ত্রী শাহিনা পারভিন শিক্ষকতা ছেড়ে এখন পুরোপুরী গৃহিনী। নয় বছর বয়সের কন্যা সামিরা রহমান তন্দ্রা চতুর্থ শ্রেনীতে আর সাত বছরের পুত্র মাহিদ রহমান গ্রামের স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্র।
হামিদের বাবা আব্দুর রহমান যশোর মেডিকেল ইনষ্টিটিউট থেকে এলএমএফ পাশ করা একজন চিকিৎসক ছিলেন। তৎকালীন কলারোয়ায় সরকারী ডাক্তার খানার চিকিৎসক ডা. আব্দুল বারী ও তার বাবা একই সাথে পড়াশুনা করে পাশ করেন। দুজনকেই থানা সরকারী ডাক্তার খানায় পোষ্টিং দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার বাবা ছিলেন পরিবারের একমাত্র সন্তান। জমাজমি ছিল ৬০ বিঘা। তাই ডা. রহমান তার বাবার (হামিদের দাদা) নির্দেশে সরকারী চাকরী ছেড়ে গ্রামে এসে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা শুরু করেন।
চার বছর বয়সে ভয়ংকর পোলিও রোগে আক্রান্ত হন তিনি। ১৯৬৪ সালে দাঙ্গার সময় সদ্য পোলিও আক্রান্ত পঙ্গু আব্দুল হামিদকে নিয়ে তার বাবা মা কলারোয়ার সোনাবাড়িয়া গ্রামে বর্তমান আবাস স্থলে আসেন। দুই বছর পুরোপুরী শয্যাশায়ি থাকার পর লাঠির সাহায্যে আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়াতে শুরু করেন তিনি। তবে কারো সাহায্য ছাড়া হাঁটাচলা করতে পারেন না। সোনাবাড়িয়া প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হবার পর অন্যের সহযোগিতা নিয়েই স্কুলে যেতে ও বাড়িতে আসতে হতো তার। কিছুদিন পর ক্রাচে ভর করে চলতে শুরু করেন। তার পর থেকে গত ৫৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্রাচই তার সর্বক্ষনের সঙ্গী।
ছাত্রজীবন থেকেই অদম্য মেধাবী আব্দুল হামিদ পঞ্চম শ্রেনীতে স্কলারশীপ নিয়ে পাশ করেন এবং সাতক্ষীরা মহাকুমার মধ্যে মেধা তালিকায় স্থান করে নেন। এরপর সোনাবড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৬ সালে এসএসসি, কলারোয়া কলেজ থেকে ১৯৭৮ সালে এইচএসসি, খুলনা আজম খান কমার্স কলেজ থেকে ১৯৮১ সালে হিসাব বিজ্ঞানে অনার্স এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮২ সালে মাস্টার্স পাশ করেন। ১৯৮৬ সালে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজনগর কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। কিন্তু বাড়ি থেকে অনেক দুরত্ব এবং শারিরিক অসুস্থতার কারণে কয়েক বছর পর অধ্যাপনা ছেড়ে দেন। এরপর এলএলবি পাশ করার পর তিনি সাংবাদিকতার পাশাপাশি ১৯৯৫ সালে সাতক্ষীরা জর্জকোর্টে আইন পেশায় যোগ দেন।
খুলনা আজম খান কমার্স কলেজে পড়ার সময় ১৯৮০ সালে সমাজের অন্যায়, দুর্নীতি ও অসংগতি সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরার প্রত্যয় নিয়ে দৈনিক পূর্বাঞ্চলে সাংবাদিকতা শুরু করেন তিনি। তবে সাংবাদিকতার শুরুটা একেবারেই সহজ হয়নি তার। ”ক্রাচে ভর করে ছাড়া চলতে পারো না, তুমি কিভাবে সাংবাদিকতা করবে” এমন তাচ্ছিল্য করে প্রথম দিনই পত্রিকা অফিস থেকে বের করে দেয়া হয় তাকে। মন খারাপ করে অফিস থেকে বেরিয়ে আসার সময় অফিসের জিএম তাকে আলাদা করে ডেকে নিয়ে বলেন ”তোমার অফিসে আসার দরকার নেই, নিউজ পাঠাতে থাকো। লেখা ভালো হলে ছাপা হবে”। কিছুটা সাহস পেলেন আব্দুল হামিদ। তারপর থেকে নিউজ পাঠাতে থাকেন। গুরুত্ব সহকারে সেসব নিউজ পত্রিকায় ছাপা হতে থাকে। মাস খানেক পর আবারো একদিন তিনি অফিসে যান এবং সম্পাদক ও বার্তা সম্পাদককে বলেন তার নিউজ নিয়মিত ছাপা হচ্ছে। প্রকাশিত নিউজ চেক করার পর সেদিন আর অফিস থেকে বের করে দেয়নি, উল্টো অফিসে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে চাকরির অফার পান। তার পর থেকে শুরু হয় আব্দুল হামিদের নতুন পরিচয়ে সাহসী পথচলা।
এরপর ১৯৮২ সালে তিনি খুলনার দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকার প্রতিষ্ঠার দিন থেকেই যোগদান করেন। কয়েক বছর পর বাড়িতে ফিরে ১৯৮৮ সাল থেকে দৈনিক ইনকিলাবের কলারোয়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করেন। এখনো পর্যন্ত সেই দায়িত্বই পালন করছেন তিনি।
সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক দৃষ্টিপাত এর সম্পাদক হিসেবেও দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
২০০০ সালে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের প্রথম জাতীয় সম্মেলনে আব্দুল হামিদকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়। দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে হামিদের এটাই একমাত্র স্বীকৃতি।
সীমান্ত চোরাচালান, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির পাশাপাশি রাজনৈতিক দূর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধেও শক্ত হাতে কলম ধরেছেন আব্দুল হামিদ। সেখানে বাংলাদেশের দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দলের বহু নেতার লুটপাটের রিপোর্ট করেছেন তিনি।
”সাংবাদিকের কোন বন্ধু নেই” কথাটি এই সাহসী সাংবাদিকের জীবনে অক্ষরে অক্ষরে প্রতিফলিত হয়েছে। রাজনৈতিক দূবৃত্তায়ন এবং লোপাটের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা একসময় আব্দুল হামিদের ঘনিষ্ট বন্ধুতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু ঘনিষ্ট বন্ধু সেই বিরোধী নেতারা যখন ক্ষমতায় গিয়ে লুটপাট শুরু করে তখন আব্দুল হামিদের কলম থেকে রক্ষা পায়নি। তাই বন্ধুত্বটা আর টেকেনি শেষ পর্যন্ত। সত্য আর ন্যায়ের পথে থাকার কারণে সাংবাদিক আব্দুল হামিদের কোন বন্ধু নেই। ভাল কাজে সমাজের সহায়তার বদলে তাকে মাঝে মাঝে নানা প্রতিকুল পরিবেশে পড়তে হয়।
জীবন বাজি রেখে ছবি তোলাই যার নেশা:
১৯৯১ সালের কথা। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে তখন পুশব্যাক নিয়ে ব্যপক তোলপাড় চলছে। প্রায়ই রাতের অন্ধকারে ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয়া হতো সেদেশের নাগরিকদের। কলালোয়ার সুলতানপুর সীমান্তে নোম্যান্স ল্যান্ডে শিশুসহ শতাধিক মানুষকে জড়ো করে রাখে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ। বিডিআর সতর্ক থাকায় কয়েকদিন চলে যায় কিন্তু তাদেরকে বাংলাদেশে পাঠাতে পারেনি গোপনে। সাংবাদিক আব্দুল হামিদ সীমান্তে চলে যান সেই রিপোর্ট সংগ্রহ করতে। বিডিআরের নিষেধ উপেক্ষা করে তিনি জিরো পয়েন্টে চলে যান ক্যামেরা লুকিয়ে নিয়ে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ দেখে ফেলে ছবি তোলার বিষয়টি। অবজারভেশন টাওয়ার থেকে বিএসএফ ভারী অস্ত্র উঁচিয়ে চিৎকার করে বলে উঠে ছবি ”তুললে ব্রাশ ফায়ার করা হবে”। কিন্তু সেদিকে তোয়াক্কা না করে কাঁপা কাঁপা হাতে ক্যামেরার শাটার টিপতে থাকেন হামিদ। হঠাৎ তিনি খেয়াল করলেন কয়েকজন যুবক ক্র্যাচসহ তাকে উচু করে নিয়ে দৌঁড় দিচ্ছে। তিনি ভাবলেন হয়তো ভারতীয়রা তাকে অপহরণ করছে। কিন্তু কিছুক্ষন পর তিনি বুঝতে পারলেন সীমান্তে বসবাসকারী কয়েকজন বাংলাদেশী যুবক তাকে এভাবে জিরো পয়েন্ট থেকে নিয়ে এসে জীবন বাঁচিয়েছেন। কারণ বিএসএফ যে কোনো মুহুর্তে গুলি করতো। তাদের সেই প্রস্তুতি দেখেই ওই যুবকরা ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিক হামিদকে বাচাতে এগিয়ে যায়। আব্দুল হামিদের তোলা সেই ছবি দৈনিক ইনকিলাব প্রথম পাতায় লিড ছবি হিসেবে ছাপে।
সীমান্তে চোরাচালানের ছবি তুলতে গিয়ে বহুবার হামিদ বাংলাদেশি ও ভারতীয় চোরাচালানিদের হাতে ধরা পড়েছেন। কারণ ছবি তুলে পালানোর মতো শারিরীক শক্তি তার নেই।
একবার আন্ত:দেশীয় সন্ত্রাসীদের ভাদিয়ালী সীমান্তে চোরাই মোটর সাইকেল সোনাই নদী পার করে এ দেশে আনার দৃশ্য ক্যামেরা বন্দী করার সময় ভারতীয় সন্ত্রাসীরা আব্দুল হামিদকে ধরে ফেলে। সীদ্ধান্ত নেয় প্রকাশ্যে হত্যা করার। তারা বলতে থাকে এই সাংবাদিকের ছবি আর নিউজের কারণে আমরা ভালোভাবে ব্যবসা (চোরাচালান) করতে পারি না। মালামাল পার করার ছবি পত্রিকায় ছাপা হলে বিডিআর সীমান্ত সীল করে দেয়। পুলিশের চাঁদার রেট বেড়ে যায় ”আজ ওকে শেষ করে তারপর ইন্ডিয়া ফিরবো”। কিন্তু ভাগ্যজোরে সেদিনও বেঁচে যায় আব্দুল হামিদ। এলাকার সাধারণ মানুষ তাকে উদ্ধার করে। এমন ঘটনা আব্দুল হামিদের জীবনে শত শত আছে।
সীমান্তের জিরো পয়েন্টে চোরাচালানীদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে ইউনিফর্ম পরিহিত বিডিআর সদস্যরা টাকা নিচ্ছে আর পিছনে শতাধিক চোরাচালানী লাইনে দাঁড়িয়ে আছে ইনকিলাবে এমন ছবি ছাপা হওয়ার পর বিডিআর হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে সীমান্ত সীলড করে দেয়া হয়। বন্ধ হয়ে যায় দু’দেশের চোরাচালান ব্যবসা। স্থানীয় বিডিআর কর্মকর্তা আর বিডিআরের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার পরামর্শে ২শতাধিক চোরাচালানী একসাথে হয়ে আব্দুল হামিদকে পথে আটকে তার উপর হামলা করে। তারা বলতে থাকে ”হয়তো নিউজ করা বন্ধ করো, নইলে আমাদের এই সবাইকে খেতে দাও”। ওই সময় অনেকে বলতে থাকে ” হামিদকে শেষ করে ফেলো তাহলে আর কোনো ঝামেলা থাকবে না, ও নিউজ না করলে আমরা ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারবো”। সেই গ্রামের সাধারণ মানুষ জড়ো হয়ে তাকে উদ্ধার করে।
হামিদের উপর এই হামলার ঘটনা স্থানীয় ও বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়। কয়েকদিন পর বিডিআর প্রধানের নির্দেশে হেডকোয়র্টার থেকে গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা ঘটনার তদন্তে আসেন। ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার ওই কর্মকর্তা আব্দুল হামিদের বাড়িতে গিয়ে সমস্ত ঘটনা শোনেন এবং লুঙ্গি পরে ভাড়ায় চালিত সাইকেলে করে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে বিডিআরের উপস্থিতিতে চোরাচালনের ঘটনা স্বচক্ষে দেখেন। তিনি চলে যাবার কয়েক ঘন্টার মধ্যে স্থানীয় বিডিআর ক্যাম্পের সকল সদস্যকে ক্লোজড করা হয় এবং এক মাসের মধ্যে সাতক্ষীরা বিডিআরের পুরো ব্যাটালিয়ন বদলি হয়ে যায়।
চোরাচালানী আর সন্ত্রাসীরা তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। বাবা ও ভাইকে মারধর করেছে। ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে। তবুও থেমে যাননি তিনি।
এমন অসংখ্য হুমকি আর হত্যা চেষ্টার ঘটনা আছে হামিদের জীবনে। কিন্তু সততা আর দেশ প্রেমের শক্তি তাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। কোনো হুমকিই তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।
তবে বার্ধক্যজনিত নানা রোগ দিন দিন তাকে গ্রাস করে ফেলছে। বয়সের কারণে শক্তিহীনতার সাথে সাথে হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছেন তিনি। ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়ে কিছুদিন আগে। স্থানীয় একটি হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তবে তার অসুস্থ্যতার কথা কাউকে জানান না তিনি। হাত বাড়ান না কোনো সহযোগিতার জন্য।
পঙ্গুত্বকে জয় করে সাহসী সাংবাদিকতার গল্পের শেষে নিউ ইয়র্ক মেইলকে আব্দুল হামিদ বলেন, সাড়ে চার বছর বয়সে আমি যখন পোলিও রোগে আক্রান্ত হই, তারপর থেকে মনে হয় এটা আমার ”বোনাস লাইফ”। সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আমি বেঁচে আছি। সন্ত্রাসী আর চোরাচালানীরা যতবার আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে ততবারই মনে হয়ে হয়েছে নতুন করে আবার জীবন ফিরে পেয়েছি। এজন্য আমার জীবনটা সততা আর সহসী কলম যুদ্ধে উৎসর্গ করেছি।
তিনি বলেন, আমার শরীরে হয়তো স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে শক্তি কম, ক্রাচে ভর দিয়ে ছাড়া আমি হাঁটতেই পারি না এটা সত্য এবং বাস্তব তবে আমি পঙ্গু নই। অশুভ শক্তির সাথে আমার এই লড়াইয়ের শক্তি আর সাহস মুলত দেশপ্রেম আর সততা থেকেই পাওয়া। যাদের মধ্যে দেশপ্রেমবোধ নেই, যারা চোরাচালানের মাধ্যমে দেশকে ধ্বংশ করছে, সন্ত্রাস আর দুর্নীতির মাধ্যমে সমাজকে কলুষিত করছে ওরাই আসল পঙ্গু। মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত আমি কলম আর ক্যামেরা নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাবো।