ক্রোয়েশিয়াকে কাঁদিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স
১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতেছিল ফ্রান্স। এরপর তা অধরাই ছিল। রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে ফের চ্যাম্পিয়ন হলো ফরাসিরা। আবারো সোনালী ট্রফিতে চুমু আঁকল তারা।
অবশ্য হেরে গেলেও সাধুবাদ পাবে ক্রোয়েশিয়া। গোটা টুর্নামেন্টজুড়েই নান্দনিক ফুটবলের পসরা সাজিয়েছে ক্রোয়াটরা। ফাইনালেও উপহার দিয়েছে লড়াকু ফুটবল। তবে ফ্রান্সের গতির কাছে পেরে ওঠেনি তারা।
ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়ার লড়াই দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে ৬ গোল দেখল বিশ্ব। এর আগে ১৯৬৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে জিওফ হার্স্টের হ্যাটট্রিকের কল্যাণে তা দেখার সুযোগ পায় ফুটবলপ্রেমীরা।
শিরোপার লড়াইয়ে মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে নামে ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়া। আক্রমণাত্মক শুরু করে ক্রোয়াটরা। তবে খেলার স্রোতের বিপরীতে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ১৮ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে গ্রিজম্যানের ফ্রি কিকে মানজুকিচের আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া।
পিছিয়ে পড়ে আক্রমণের গতি বাড়িয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। ফ্রান্স শিবিরে মুহুর্মহু আক্রমণ হানছিল ক্রোয়াটরা। অবশেষে তাদের প্রচেষ্টা আলোর মুখও দেখে। ২৮ মিনিটে ইভান পেরিসিচের নিশানাভেদে সমতায় ফেরে ক্রোয়াটরা।
পরে অ্যাটাক-কাউন্টার অ্যাটাকে এগিয়ে চলে খেলা। এবার এগিয়ে যায় ফ্রান্স। আবারো ত্রাতা হতে চেয়েছিলেন পেরিসিচ। ৩৪ মিনিটে বক্সের মধ্যে হাতে বল লাগিয়ে আক্রমণ প্রতিহত করতে চান তিনি। এতে হিতে ঘটে বিপরীত।
অবশ্য প্রথমে পেনাল্টির বাঁশি বাজাননি রেফারি। পরে ফ্রান্স ফুটবলারদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ভিএআরের মাধ্যমে পেনাল্টির নির্দেশ দেন তিনি। সফল স্পট কিকে তা জালে জড়ান আঁতোয়া গ্রিজম্যান। এতে ২-১ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় ৯৮ চ্যাম্পিয়নরা।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে আক্রমণের গতি বাড়ায় ফ্রান্স। সাফল্যও আসে। ৫৯ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার বজ্রগতির শটে বল ঠিকানায় পাঠান পল পগবা। এতে ফ্রান্সের জয় একরকম নিশ্চিত হয়ে যায়।
এগিয়ে গিয়ে দারুণ আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে ফ্রান্স। ফলে ব্যবধান বাড়তেও সময় লাগেনি। ৬৫ মিনিটে ক্রোয়েশিয়া শিবিরে শেষ পেরেক ঠুকেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। লুকাস হার্নান্দেজের অ্যাসিস্ট থেকে অসাধারণ নৈপুণ্যে লক্ষ্যভেদ করেন ১৯ বছরের বিস্ময়। এ নিয়ে পেলের পর সবচেয়ে কম বয়সে ফাইনালে গোল করার কীর্তি গড়েন তিনি।
মিনিট চারেক পরে গোল পায় ক্রোয়েশিয়া। অবশ্য তাতে ছিল ফ্রান্স গোলকিপারের বড় অবদান। বল সতীর্থকে দিতে গিয়ে ঠেলে দেন মানজুকিচের পায়ে। তা থেকে বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি ক্রোয়াট ফরোয়ার্ড। এ নিয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ফাইনালে গোল ও আত্মঘাতী গোল করার কীর্তি গড়লেন তিনি।
এ ম্যাচে আরো একটি রেকর্ড দেখেছে বিশ্ব। মাত্র তৃতীয় অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে বিশ্বজয়ের ইতিহাস গড়লেন দিদিয়ের দেশম। ১৯৯৮ সালে তার নেতৃত্বে প্রথমবার সোনার ট্রফি ছুঁয়ে দেখে ফ্রান্স। এবার তার কোচিংয়ের অধীনে বিশ্বকাপ জিতল সাবেক চ্যাম্পিয়নরা।