দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ সাকিব
বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে দুই বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে আইসিসি।
তিনবার ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েও তা না জানানোয় তার বিরুদ্ধে এ শাস্তির ব্যবস্থা নিল বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
২০১৮ সালে ঢাকায় ত্রিদেশীয় সিরিজ ও আইপিএলে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু বিষয়গুলো অবহেলা করে আইসিসিকে না জানানোয় তাকে এ শাস্তি দেয়া হয়।
তবে এই শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন সাকিব। আপিলে তার বক্তব্য যদি আইসিসি সন্তুষ্ঠ হয় তাহলে তার এ শাস্তির মেয়াদ এক বছর কমতে পারে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আইসিসির ওয়েবসাইটে বিষয়টি উল্লেখ করে জানানো হয়, জুয়াড়ির কাছ থেকে অনৈতিক প্রস্তাব পেয়েও সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানাননি সাকিব। তাই সব ধরনের ক্রিকেট থেকে দুই বছর তথা ২৪ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে বাংলাদেশের অধিনায়ককে।
আইসিসির দুর্নীতি-বিরোধী আইনের নিয়ম হলো- কেউ অনৈতিক প্রস্তাব পেলে যত দ্রুত সম্ভব তা কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। কিন্তু সাকিব তিনবার এ ধরনের প্রস্তাব পেলেও সে সম্পর্কে কিছু জানাননি আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটকে। সে কারণেই মূলত তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
তবে সাকিব মূলত এক বছর নিষিদ্ধ থাকবেন। পরবর্তী এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞায় থাকবেন। ওই এক বছরে সাকিব পুনরায় একই অভিযোগে অভিযুক্ত হলে সাকিবকে আবার শাস্তি দেবে আইসিসি। আজ থেকেই সাকিবের নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে।
২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মাঝপথে শেষ হবে তার নিষেধাজ্ঞা। অবশ্য বিশ্বকাপে তার খেলার সম্ভাবনা নেই। বিশ্বকাপের আগে তাকে দলে নেওয়ারও সুযোগ নেই। ইনজুরি কারণে কোন ক্রিকেটার বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেও তার খেলার সম্ভাবনা নেই। কারণ, স্ট্যান্ডবাই থেকে খেলোয়াড় নিতে হবে। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থাকায় সাকিবকে স্ট্যান্ডাবাই হিসেবেও রাখতে পারবে না টিম ম্যানেজমেন্ট।
ভারতীয় জুয়াড়ির কারণেই নিষিদ্ধ হলেন সাকিব
বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন ভারতীয় জুয়াড়ি দীপক আগারওয়াল। তার সেই প্রস্তাবের কারণেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
যে জুয়াড়ির প্রস্তাবে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হন সাকিব, তার নাম জানিয়েছে আইসিসি। ভারতীয় এই ক্রিকেট জুয়াড়ি আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটের (আকসু) কালো তালিকাভুক্ত। তাই তার টেলিফোন কল রেকর্ড থেকে শুরু করে সব কিছু সম্পর্কে খোঁজখবর রাখে আকসু।
ভারতীয় এই জুয়াড়ি ২০১৮ সালে তিনবার সাকিবকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব দেন। সাকিব যদিও তিনবারই সেই প্রস্তাব বাতিল করে দেন। কিন্তু আইসিসিকে সেই বিষয়ে তিনি কিছুই জানাননি।
২০১৭ সালে সাকিবের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ করে ভারতীয় জুয়াড়ি দীপক আগারওয়াল। সেবার সাকিবের সঙ্গে দেখা করার অনুরোধও করেন তিনি। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের কাছ থেকে আরও কিছু ক্রিকেটারের ফোন নম্বর জানতে চান ওই জুয়াড়ি।
এরপর ২০১৮ সালে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ত্রিদেশীয় সিরিজের সময় ফের সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আগারওয়াল।
২০১৮ সালের ১৯ জানুয়ারি একটি ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় হওয়ার জন্য সাকিবকে অভিনন্দন জানান আগারওয়াল।
এরপর আরেকটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় সাকিবকে প্রশ্ন করে আগরওয়াল বলেন, ‘আমরা কি কাজ করছি? নাকি আইপিএল পর্যন্ত অপেক্ষা করব?’
আরও একটি বার্তা পাঠান আগারওয়াল। তিনি সাকিবকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, ‘ভাই, এই সিরিজে কোনো কিছু আছে?’
প্রসঙ্গত, জুয়াড়িদের কাছ থেকে তিনবার ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পরও তা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলকে (আইসিসি) না জানানোর অপরাধে সাকিবকে ২ বছর নিষিদ্ধ করে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
কিন্তু ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ায় সাকিবের ওপর সন্তুষ্ট আইসিসি। নিষেধাজ্ঞা থাকা অবস্থায় আইসিসির বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার শর্তে সাকিবের শাস্তি এক বছর স্থগিত করেছে আইসিসি।