মরুর বুকে বিশ্বকাপ শুরু
দীর্ঘ ১২ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ইতিহাসে ঠাঁই করে নিল মরুভূমির দেশ কাতার। সব বিতর্ক দূরে ঠেলে তাক লাগিয়ে দিল গোটা বিশ্বের। শুরু হলো মরুর বুকে প্রথম বিশ্বকাপ।
দোহার আল-বাইত স্টেডিয়ামে আজ শুরু হয় ২০২২ বিশ্বকাপের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। যেখানে দেখা গেল আরবের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি আর আধুনিকতার অনন্য মেলবন্ধন। তবে অনুষ্ঠানের সব আলো আসলে কেড়ে নিলেন হলিউড তারকা মরগান ফ্রিম্যান। শুরুতে দেখানো ভিডিওচিত্রের নেপথ্য কণ্ঠস্বর ছিলেন তিনি; পরে সরাসরি মঞ্চ আলো করলেন তার অসাধারণ বাচনভঙ্গীতে।
কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে ফ্রান্সের কিংবদন্তী ফুটবলার, ১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মার্শেল দেশাই প্রথমে বিশ্বকাপ ট্রফির প্রদর্শনী করেন স্টেডিয়ামে স্থাপিত মঞ্চে। তুমুল করতালি এবং চিয়ার্স ধ্বনির মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ ট্রফিকে বরণ করে নেন দর্শকরা। লাইটিং আর লেজার শো মিলিয়ে তখন জমে উঠেছে আল বায়িত স্টেডিয়াম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল পর্বের শুরুতেই দেখানো হয় একটি ভিডিওচিত্রে দেখা গেল মরুভূমির দৃশ্য; সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো সেই মরুভূমির বুকে ভেসে বেড়াচ্ছে নীল তিমি। সাঁতার কাটতে কাটতে পৌঁছে গেল দোহার আল বাইত স্টেডিয়ামে। দেখা গেল আদিম যুগের মানুষদের জীবনযাত্রা। ছিল আরবের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে তো তলোয়ার নিয়ে কাতারি শিল্পীদের বিশেষ পরিবেশনা। পারফর্ম করলে দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় ব্যান্ড বিটিএসের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য জাংকুক। কাতার বিশ্বকাপের অফিশিয়াল গান ‘ড্রিমারস’ শোনা যায় তার কণ্ঠে। বিশ্বকাপের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রথম কোরিয়ান হিসেবে পারফর্ম করলেন জাংকুক। তার সঙ্গে কণ্ঠ দিলেন কাতারি সঙ্গীতশিল্পী ফাহাদ আল-কুবাইসি।
অনুষ্ঠান উপভোগ করতে গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান, ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। তবে অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হয়ে এলেন মরগান ফ্রিম্যান। শুরুতে নেপথ্যে কণ্ঠ দিলেও কিছুক্ষণ পর নিজেই মঞ্চে হাজির হলেন। 'বিশ্বকাপ যে সবার জন্য উন্মুক্ত এবং ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা পুরো বিশ্বকে একসূত্রে গেঁথে রাখে'-সেই বার্তাই দিলেন তিনি।
ফ্রিম্যানের কথার জাদুর বিরতিতে বিশ্বকাপের জায়ান্ট মাসকট লাই'ব এলো মাঠে। মাঠে ঢুকলেন বিভিন্ন দেশের পতাকাবাহী সমর্থকরা। এবারও কথার জাদুতে মোহিত করলেন হলিউড সুপারস্টার। এরপর হলো আদশবাজি। মাত্র মিনিট বিশেকের এই অনুষ্ঠান শেষ হতেই কাতার-ইকুয়েডর ম্যাচও শুরুর প্রস্তুতি সেরে নেওয়া হলো। শুরু হয়ে গেল বিশ্বের সবচেয়ে খরুচে এবং আকর্ষণীয় ফুটবল মহারণ।