ফেসবুক আইডি হ্যাক হলে কী করবেন
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুক। ফেসবুকে ব্যক্তি বা সমাজ থেকে শুরু করে ব্যবসা বাণিজ্য পর্যন্ত পরিচালিত হচ্ছে। সোশ্যাল সাইট ফেসবুক নিয়ে অনেকেরই অনেক সময় সমস্যা দেখা দেয়। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন ধরেনর ছদ্ম নাম ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ লুণ্ঠন করা।
এসমস্ত বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভিক্টিম হয় মেয়েরা। এছাড়াও বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে আইডি হ্যাকিং হচ্ছে কিছুটা ফিশিং সাইট ব্যবহার করে এবং ইয়াহু, আউটলুক ক্লোন করে, বেশ কিছু পাবলিক ফিগারের আইডি হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে ফেসবুকের রুলস মেনেই।
বিশেষ করে যারা অনলাইনে লেখালেখি করে তাদের আইডিগুলোর পাশাপাশি সেলেব্রিটি এবং ব্লু ভ্যারিফাইড আইডিগুলো হ্যাকের দিকে স্প্যামারদের লক্ষ্য থাকে। হ্যাকিংয়ের শিকার আইডিগুলো অনেক সময়েই রিকভারি করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে আইডি থেকে প্রাপ্ত পার্সোনাল ছবি এর মাধ্যমেই ঘটে বিপত্তি।
অনেক সময় হ্যাকিংয়ের শিকার হন রাজনৈতিক ব্যক্তিরা। ফলে রাজনৈতিক বিষয়কে হেয়প্রতিপন্য করে নানান ধরনের পোস্ট করা হয়ে থাকে। ফলে হ্যাকিংয়ের শিকার ব্যক্তি সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হয়ে থাকেন।
বাংলাদেশে অপরাধ গবেষণাবিষয়ক সংগঠন ক্রাইম রিসার্চ অ্যানালাইসিস ফাউন্ডেশন (ক্রাফ) টেকনিক্যাল টিমের সদস্য বিএম ইয়ামিন এ ব্যাপারে বলেন, হ্যাক হওয়া আইডির মালিকরা দ্রুততার সঙ্গে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে রাখা উচিত।
যাদের আইডি হ্যাক হয় সেসব আইডিতে ইমেইল সংযুক্ত থাকলে ৭২ ঘণ্টা সময় পর্যন্ত রিকভারি করা যায়। যেসমস্ত আইডিগুলো রিকভারি করা সম্ভব হয় না সেই আইডিগুলো জিডির ওপর ভিত্তি করে ফেসবুক থেকে নিষ্ক্রিয় করারা সুযোগ থাকে যেন পরবর্তীতে আরও বড় হ্যারাসমেন্ট সৃষ্টি না হয়।
ক্রাফের প্রেসিডেন্ট জেনিফার আলম ফেসবুক আইডির নিরাপত্তার জন্য বেশ কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন।
১. অপরিচিত কাউকে ফেন্ড লিস্টে যোগ করবেন না।
২. কোন ধরনের লিংকে ক্লিক করবেন না। যদিও করে থাকেন সেক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করে করবেন।
৩. ট্রাস্টেড কন্টাকে কখনই আপনার পরিবারের সদস্যদের রাখবেন না, হ্যাকারদের টার্গেট প্রথমেই পরিবারের সদস্যদের ওপর।
৪. ফেসবুকে দ্বিতীয় স্টেপ অ্যাপ্রোভাল কোডিং অপশন চালু রাখবেন। এতে করে হ্যাকারদের নিকট আপনার ফেসবুক আইডি চলে গেলেও সে ব্যবহার করতে পারবে না (২৪ ঘণ্টার আগে)।
৫. আনঅথোরাইজড লগইন নোটিফিকেশন অন রাখবেন।
৬. থার্ড পার্টি অ্যাপস ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন।
৭. আইডি হ্যাক হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে আইডি লিংক উল্লেখ করে নিকটবর্তী থানায় জিডি করবেন।
৮. কোন প্রকার সংবেদনশীল ছবি ও তথ্য ফেসবুকে আদান প্রদান করবেন না।
আইডি হ্যাক করে বিকাশ বা অন্য মাধ্যমে টাকা দাবি করা, ছবি ছড়িয়ে দেবার হুমকি এবং মিথ্যা অসত্য তথ্য প্রচার করে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার মত ঘটনাগুলো এখন সবচেয়ে বেশি ঘটছে।
তাই যে কোন ধরনের ব্ল্যাকমেইল বা হ্যারাসমেন্টের শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গেই নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা গ্রহণ করবেন। যে কোন জরুরি প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা- ৯৯৯ এ কল করতে পারেন। এটি টোল ফ্রি।