করোনার ধাক্কা কাটিয়ে খুলল তাজমহলের দরজা
ভারতের বিখ্যাত স্মৃতিস্তম্ভ তাজমহল ও আগ্রা কেল্লার দরজা ছয় মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর আজ ২১ সেপ্টেম্বর আবারও খুলছে।
তবে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে পর্যটকদের নতুন কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। আগ্রা প্রশাসন এই তথ্য জানিয়েছে।
এখন থেকে প্রতিদিন পাঁচ হাজারের মতো দর্শনার্থীকে ঢুকতে দেওয়া হবে তাজমহলে। মধ্যাহ্নভোজের আগে আড়াই হাজার এবং মধ্যাহ্নভোজের পর আড়াই হাজার পর্যটক এখানে বেড়াতে পারবেন। তবে আগ্রা কেল্লায় সকালে ১ হাজার ৩০০ জন এবং বিকালে ১ হাজার ২০০ মানুষ ঢোকার সুযোগ পাবেন।
প্রাথমিকভাবে এসএসআই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট বিক্রি হবে। আগের মতো সশরীরে এসে কেউ প্রবেশপত্র কিনতে পারবেন না।
মূল ফটকে দর্শনার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে। প্রত্যেককে হাত স্যানিটাইজ করার পাশাপাশি একে অপরের কাছ থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, করোনার বিস্তার এড়াতে নিয়মিত বিরতিতে তাজমহল ও আগ্রা কেল্লায় জীবাণুনাশক দেওয়া হবে।
তাজমহল প্রাঙ্গণে লাইসেন্সধারী পেশাদার আলোকচিত্রীদের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ থাকবে। প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও রবিবার তাজমহল বন্ধ থাকবে। আর আগ্রা কেল্লায় সাপ্তাহিক ছুটি রোববার।
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সারাভারত লকডাউনের আগেই গত ১৭ মার্চ দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় তাজমহল। ৪২ বছর পর আবারও জনপ্রিয় এই স্থাপনায় তালা দেওয়ার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো।
১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রথমবার বন্ধ রাখা হয়েছিল তাজমহল। তখন এর উপরিভাগ বাঁশ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। জাপানি বোমারু বিমানকে বিভ্রান্ত করাই ছিল এর উদ্দেশ্য। তাছাড়া আশঙ্কা ছিল, হিটলারের জার্মান বিমানবাহিনী আক্রমণ করতে পারে। শেষ পর্যন্ত বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রক্ষা পেয়েছে তাজমহল।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তাজমহল আবারও বন্ধ করা হয়েছিল, যাতে কোনও আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় সুরক্ষার জন্য এই স্মৃতিস্তম্ভের উপরিভাগ ঢেকে রাখা হয়। সবশেষ ১৯৭৮ সালে ভয়াবহ বন্যার সময় তাজমহলের ফটকে তালা ঝুলেছিল।
পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম তাজমহল প্রয়াত স্ত্রীর স্মৃতির উদ্দেশে নির্মাণ করেন মোগল সম্রাট শাহজাহান। উর্দু ও ফার্সি ভাষায় রাখা হয় তাজমহলের নাম। তারকা ও বিদেশিদের মধ্যে এটি বেশ জনপ্রিয়। ভারতের পর্যটন শিল্পের রাজস্ব আয়ের বৃহৎ উৎস এটি।