পরমাণু বোমা তৈরির হুমকি সৌদি আরবের
বলা হচ্ছে বর্তমানে সৌদির সকল কিছুই নিয়ন্ত্রণ করছেন যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান। এছাড়া আধুনিক সৌদি প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন যুগান্তকারী পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছেন তিনি। তাকে সৌদি আরবের ডি ফ্যাক্টো নেতা বা অনানুষ্ঠানিক সরকার প্রধানও মনে করা হয়। এবার পরমাণু বোমা বানানোর ইচ্ছা পোষণ করলেন প্রভাবশালী এই সৌদি যুবরাজ।
সরকারি সফরে এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন সালমান। এ সময় মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটা জানান মোহাম্মাদ বিন সালমান।
তবে পরমাণু বোমা বানানোর ক্ষেত্রে তিনি ইরানের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, যদি ইরান পরমাণু বোমা বানায় তাহলে আমরাও তা বানাবো।
সালমান বলেন, সৌদি আরব কখনোই পরমাণু বোমা বানাতে চায় না। কিন্তু সন্দেহ নেই, যদি ইরান এ কাজটি করে তাহলে আমরাও তা করবো।
এছাড়া তেল শক্তির উপর চাপ কমাতে প্রাথমিকভাবে মধ্যম মেয়াদের দুটি পারমাণবিক কেন্দ্র বানাবে সৌদি। ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে ১৬টি বেসামরিক পারমাণবিক কেন্দ্র বানাবে সৌদি যাতে ১৬ গিগাহার্টজ পারমাণবিক শক্তি উৎপাদিত হবে।
আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারে মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যকার লড়াই নতুন নয়। এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে দুই দেশ কার্যত এক ধরনের ছায়যুদ্ধে লিপ্ত। ১৯৭৯ সালে ইরানে সংঘটিত ইসলামী বিপ্লবের পর থেকেই ইরানকে শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করে আসছে সৌদি আরব।
এর মধ্যেই তুরস্ক ও কাতারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে রিয়াদ। ইয়েমেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে সৌদি জোট। সব মিলিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে এ অঞ্চলে সৌদি আরবের ক্ষমতাবলয় এক ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এ নিয়ে দেশটির অস্বস্তি পরিষ্কার হয়েছে মোহাম্মদ বিন সালমানের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনিকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের নব্য হিটলার’ বলার কারণও ব্যাখ্যা করেন সৌদি সিংহাসনের এই উত্তরাধিকারী।
তিনি বলেন, ‘তিনি (খামেনি) মধ্যপ্রাচ্যে নিজের প্রকল্প সৃষ্টি করতে চান, যা হিটলার তার সময়ে করতে চেয়েছিলেন অনেকটা সেইরকম। ইউরোপ ও বিশ্বের অনেক দেশই প্রকৃত ঘটনা ঘটার আগে বুঝতে পারেনি হিটলার কতোটা বিপজ্জনক ছিল। আমি মধ্যপ্রাচ্যে সেই একইরকম জিনিস ঘটুক তা দেখতে চাই না।’
যুক্তরাষ্ট্রে ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরব ১৯৮৮ সালে পরামণু অস্ত্র নিরোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এ পর্যন্ত তারা পরমাণু অস্ত্র নির্মাণের চেষ্টা করেছে কিনা সে ব্যাপারে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তবে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র উন্নয়নে সৌদি আরব অর্থ বিনিয়োগ করেছে বলে জানা গেছে।