স্টিফেন হকিংয়ের নতুন তত্ত্ব প্রকাশ
মৃত্যুর মাত্র দুই সপ্তাহ আগে একাধিক মহাবিশ্ব আবিষ্কার ও তাদের অনুসন্ধানের গবেষণাপত্র জমা দিয়েছিলেন বিশ্বখ্যাত মহাকাশবিজ্ঞানী ও পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং।
মৃত্যুশয্যায় থাকাকালীন হকিং ও তার সহলেখক থমার হেরটগ এই গবেষণাপত্র লিখেছিলেন। কিভাবে মহাকাশযানের মাধ্যমে অন্য মহাবিশ্বকে শনাক্ত করা যাবে এই গবেষণাপত্রে তার বিস্তারিত প্রস্তাবনা লেখা হয়েছে। তার গবেষণাপত্রে সাজানো আছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিশ্ব শনাক্তকরণের নানা সূত্র। একাধিক মহাবিশ্ব বলতে বোঝায় আমাদের এই মহাবিশ্বের মতই একাধিক মহাবিশ্বের অস্তিত্ব, যা নিয়ে হকিং সারা জীবন গবেষণা করেছেন।
১৯৮৩ সালে জেমস হার্টল এর সঙ্গে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে হকিং এই মহাবিশ্বের মূল বিশ্লেষণ করেন। হকিং তত্ত্ব বলে আমাদের এই মহাবিশ্বসহ সবকিছুর সৃষ্টির মূলে রয়েছে বিগ ব্যাংগ। সৃষ্টির শুরুতে এক অতিক্ষুদ্র কণা থেকে বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্টি হওয়া মহাজগত ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে, এটি বিগ ব্যাংগ তত্ত্বে আলোচনা করেছিলেন হকিং।
হকিংয়ের সহকর্মী থমার হেরটগ সানডে টাইমস এ আক্ষেপ করে বলেন, জীবনভর হকিং বিশ্বসৃষ্টির রহস্য নিয়ে কাজ করে গিয়েছেন, মহাবিশ্বের নিকষ কালো অন্ধকার থেকে সৃষ্টির সন্ধান উন্মোচন করে গিয়েছেন। তার নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তিনি তা পান নি।’ যদিও হকিংয়ের অবদান নোবেলের মত কালজয়ী সম্মানকেও ছাড়িয়ে যায়।
হকিংয়ের সঙ্গে ইনফ্লেশন থিওরি নিয়ে যৌথভাবে গবেষণা করেন থমার হেরটগ। হেরটগ এই গবেষণাপত্রের নামকরণ করেছেন ‘এ স্মুথ এক্সিট ফ্রম ইটারনাল ইনফ্ল্যাশন’। মহাবিশ্বের জন্মের সঙ্গে সম্পর্কিত আদি কণাটির বিস্ফোরণের ফলে মহাবিশ্ব ক্রমে সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং একসময় এই সম্প্রসারণ সংকোচনে রুপান্তরিত হবে। ‘থিওরি অব ইনফ্লাশন’ এ কথাই বলা হয়েছে।
তবে এই ধারণা মহাকাশবিজ্ঞানীদের সঙ্গে বিতর্কিত ও অন্ধকারে পরিপূর্ণ। কানাডার পেরিমিটার ইনস্টিটিউটের নির্বাহি নেইল তুরোকের মতে, হকিং কসমোলজির প্রয়োজনিতাকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। কসমোলজির অধ্যাপক কার্লোস ফ্রেঙ্ক এর সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, আগে অন্য কোন মহাবিশ্বের ধারণা অসম্ভব ছিল। তবে হকিং এর গবেষণাপত্রে একাধিক বিশ্বের ধারণার প্রস্তাবনা কসমসে আমাদের চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করতে দিতে পারে।
সূত্র: ডেইলি মেইল।