শিরোনাম
আগে চারজন দাঁড়াত, এখন একটা মারলে ৪০ জন দাঁড়াবে: ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে বন্দুক হামলায় নিহত ৩ গিনিতে ফুটবল ম্যাচে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ১০০ নিহত রাশিয়ার রাসায়নিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান বোমা হামলায় নিহত ভারতে মসজিদে ‘সমীক্ষা’ চালানো ঘিরে সংঘর্ষ, নিহত ৩ সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর ভূমিকম্পে ভানুয়াতুতে নিহত বেড়ে ১৪ নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 21 March, 2018 02:01

ইরাকে ১৫ বছরে ২৪ লাখ মানুষের প্রাণহানি

ইরাকে ১৫ বছরে ২৪ লাখ মানুষের প্রাণহানি
মেইল ডেস্ক :

২০০৩ সালের এই দিনে একনায়কতন্ত্র উচ্ছেদের নামে ইরাকে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ ‘অপারেশন ইনফিনিট জাস্টিস’ নামে ইরাক হামলা শুরুর প্রথম দিনেই এক হাজার রকেট হামলা চালায় ইরাকে। হামলার প্রথম দিনেই নিহতের পরিমাণ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

ইরাক আগ্রাসনের ১৫ বছর অতিক্রান্ত হলো মঙ্গলবার।

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পেন্টাগন ও ওয়াংশিংটন ডিসিতে হামলার জন্য দায়ী করা হয় ওসামা বিন লাদেনকে। আর এসব কাজে মদদ দেওয়ার জন্য অভিযুক্তর করা হয় ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে। গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার মিথ্যে অভিযোগে প্রত্যক্ষ আগ্রাসন শুরু করেছিলেন বুশ নেতৃত্বাধীন জোট।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বুশ বলেছিলেন, ইরাকী জনসাধারণকে স্বৈরতন্ত্রের কবল থেকে মুক্ত করার পাশাপাশি পুরো বিশ্বকে নিরাপদ রাখতেই সেই হামলা চালানো হয়েছে।

যুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী তার জেনারেল বলেছিলেন, মরদেহ গোনা তাদের কাজ নয়। বুশের মুক্তির লড়াই আর তার জেনারেলের অবজ্ঞার স্রোতে গত ১৫ বছরে হারিয়ে গেছে আনুমানিক ১৫ থেকে ৩৪ লাখ লাখ তাজা প্রাণ। ডেমিওগ্রাফিক পদ্ধতি ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য ও স্বনামধন্য কয়েকটি জরিপ প্রতিষ্ঠানের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে একজন মার্কিন রাজনীতি বিশ্লেষক এবং একজন মানবাধিকার সংগঠক তাদের এক অনুসন্ধানে গত ১৫ বছরে ২৪ লাখ ইরাকির মৃত্যুর সম্ভাব্যতা হাজির করেছেন।

গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার ‘নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’আছে, এমনটি দাবি করে ইরাকে আগ্রাসন শুরু করে বুশ নেত্বত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী জোট। যুদ্ধ শেষে অনেক মার্কিন ও ব্রিটিশ কর্মকর্তাই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়াকে ভুল সিদ্ধান্ত স্বীকার করেন। কিন্তু এই ভুলটি আগ্রাসন শুরু হওয়ার আগেই বুঝতে পেরেছিলেন বাগদাদে নিযুক্ত জাতিসংঘের অস্ত্র পরিদর্শক সংস্থা ‘আনমোভিক’ এর প্রধান হ্যান্স ব্লিক্স।

সিএনএন নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হ্যান্স ব্লিক্স বলেন, আগ্রাসন শুরুর তিন সপ্তাহ আগে সম্ভাব্য হামলার খবর পাই আমরা। কিন্তু এটা যে অনেক বড় ধরণের ভুল ছিল সেটা জেনেও কাউকে বোঝাতে পারিনি! ব্লিক্স বলেন, কেন ওই ভয়ংকর ভুলটি করা হয়েছিল তা এখন পর্যন্ত বোধে আসে না আমার। জাতিসংঘের আইন লঙ্ঘন করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরবতা ছিল সত্যিই বিস্ময়কর।

জাস্ট ফরেন পলিসি নামক অলাভজনক সংস্থার ইরাক যুদ্ধে হতাহতর পরিসংখ্যান সংক্রান্ত কর্মসূচি ইরাকি ডেথ এস্টিমেটর এবং ব্রিটিশ এনজিও ইরাক বডি কাউন্ট তাদের সম্মিলিত গবেষণায় ২০১১ সালের সেপ্টম্বর পর্যন্ত সাড়ে চৌদ্দ লাখ সম্ভাব্য মৃত্যুর পরিসংখ্যান হাজির করেছে। অপিনিয়ন বিজনেস রিসার্চ ২০০৭ পর্যন্ত ১৩ লাখ ৩০ হাজার প্রাণহানির সম্ভাব্য পরিসংখ্যান দিয়েছে।

এদিকে গত ১৯ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, দেশটির কর্তাব্যক্তিরা বর্তমানে একবাক্যে স্বীকার করেছে যে, ইরাক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়াটা তাদের জন্য ছিল বড় ধরণের রাজনৈতিক ভুল। জেরেমি সুরি নামের এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক দাবি করেন, ইরাকে সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাতে কোন ভুল করেনি যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইরাকে যে আগ্রাসন চালিয়েছে তারা, তা ছিল মারাত্মক ভুল।

একনায়কতান্ত্রিক দেশের স্বৈরতন্ত্র বিদায়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার মতো উদ্যোগ কোন লাভ বয়ে আনে না বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে বর্তমান সরকার সেই ভুল থেকে কোন শিক্ষা নিচ্ছে না বলেও দাবি করেন জেরেমি সুরি। শুধু যুক্তরাষ্ট্র-ই নয়, তার মিত্ররাও আজ অকপটে স্বীকার করছে যে, ইরাকে হামলা ছিল স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ভুল। ওই আগ্রাসনের পর থেকে কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের-ই ক্ষতি দাঁড়িয়েছে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাসহ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীরও ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করেন জেরেমি সুরি। ইরাক হামলার ১৫ বছর পূর্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে জেরেমি সুরি।

সূত্র: সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমস

উপরে