বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী ইউনি ম্যান্ডেলা আর নেই
দক্ষিণ আফ্রিকার সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদ উইনি ম্যান্ডেলা আর নেই।
ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের প্রবাদ পুরুষ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়াত অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার স্ত্রী। মৃত্যুকালে উইনির বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
উইনির পরিবারসূত্রে জানা গেছে সোমবার জোহানেসবার্গের নেটকেয়ার মিলপার্ক হাসপাতালে মারা যান তিনি। এবছরের শুরু থেওকই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।
পরিবার থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘মাদিকিজেলা-ম্যান্ডেলা বর্ণবাদ বিরোধী সংগ্রামের মহানতম কিংবদন্তীদের একজন। বর্ণবাদী সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে তাঁর গৌরবজ্জোল ভূমিকা ছিল। তিনি তাঁর জীবনকে দেশের মানুষের স্বাধীনতার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন’।
এই মহান রাজনীতিবীদ বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার ‘জাতির মাতা’ নামে পরিচিত ছিলেন। নেলসন ম্যান্ডেলার সাথে ৩৮ বছর সংসার করেছেন উইনি। এর মধ্যে নেলসনের ২৭ বছরই কেটেছে রোবেন আআল্যান্ডের কারাগারে!
প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, ‘তাঁর স্বামী নেলসন ম্যান্ডেলা যখন রবেন দ্বীপের কারাগারে ছিলেন, উইনি তখন তাঁর স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। স্বামীর অনুপস্থিতিতে তিনিই বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনকে জিইয়ে রেখে দেশকে মুক্তির পথে নিয়ে গিয়েছেন’।
১৯৯৪ সালে নেলসন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এর মাত্র ২ বছর পর ১৯৯৬ সালে দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। এই দম্পত্তির দুটি কণ্যা সন্তান রয়েছে। ২০১৩ সালে নেলসন ম্যান্ডেলা মারা যান।
১৯৩৬ সালের কেপটাউনে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মকালে তাঁর নাম ছিল নোমজামো উইনিফ্রেড জানয়ুই মাদিকিজিলা। তবে বিয়ের পর থেকে তিনি উইনি ম্যান্ডেলা নামে সমাধিক পরিচিত ছিলেন।
তার মৃত্যুতে দক্ষিণ আফ্রিকার নোবেল বিজয়ী পাদ্রী ডেসমন্ড টুটু শোক প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, নেলসন ম্যান্ডেলা ও উইনি ম্যান্ডেলা ৩৮ বছর সংসার করেন। এর ২৭ বছরই জেলে কাটিয়েছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা। পরবর্তীতে রাজনৈতিক নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের প্রবাদপুরুষ ম্যান্ডেলার সাবেক এই স্ত্রী। ২০১৩ সালে ম্যান্ডেলার মৃত্যুর পর তার গ্রামের বাড়ির উত্তরাধিকারী হওয়ার বৈধতার জন্য মামলাও করেছিলেন উইনি। ওই মামলায় অবশ্য হারতে হয় তাকে।