শিরোনাম
অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ রাষ্ট্র সংস্কার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ যাচ্ছে রিপাবলিকানদের হাতে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা সাকিবের জার্মানিতে ইরানের সব কনস্যুলেট বন্ধ ঘোষণা কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ভারতীয় সেনা নিহত সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর শ্রীলঙ্কায় আগাম ভোটে বড় জয় পেল বামপন্থী প্রেসিডেন্ট অনূঢ়ার জোট নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 8 May, 2018 13:44

বিনা দোষে হাজার হাজার নাগরিক আটকে রেখেছে সৌদি আরব

বিনা দোষে হাজার হাজার নাগরিক আটকে রেখেছে সৌদি আরব
মেইল রিপোর্ট :

বিনা অপরাধে হাজার হাজার মানুষকে কারাবন্দি করে রেখেছে সৌদি আরব। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অপরাধ মামলা নেই। সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে রোববার এমন চিত্র তুলে ধরেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

একই সঙ্গে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে দেশটিতে ‘নির্বিচারে আটকের’ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক এ মানবাধিকার সংস্থা। সৌদি আরবের অ্যাটর্নি জেনারেলকে ওই নিরপরাধীদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন অথবা তাদের ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
এইচআরডব্লিউ জানিয়েছে, ছয় মাসের বেশি সময় ধরে দুই হাজার ৩০৫ জনকে আটক করে রাখা হয়েছে। কাউকে আবার ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ তাদের আদালতে তোলা হচ্ছে না। ২০১৪ সালের মে মাসে আরেকটি রিপোর্টে এইচআরডব্লিউ জানায়, হাজার হাজার কারাবন্দির মধ্যে মাত্র ২৯৩ জনকে আদালতে তোলা এবং তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মধ্যপ্রাচ্য পরিচালক সারাহ লিয়াহ উইটসন বলেন, ‘সৌদি কর্তৃপক্ষ যদি তাদের মাসের পর মাস আটকে রেখে কোনো চার্জগঠন না করে, তা হলে দেশটির বিচার বিভাগের ভঙ্গুরতা ও অন্যায্যতার প্রমাণ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। দেশটিতে এ চিত্র দিন দিন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।’

গত কয়েক মাসে নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্রের দেশটিতে বেশ কিছু সংস্কারের পদক্ষেপ নেয়া হয়। ভিশন-২০৩০ বাস্তবায়নের এ পদক্ষেপের পেছনে রয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

নামের আদ্যাক্ষর অনুযায়ী, পশ্চিমা কূটনীতিকদের কাছে তিনি এমবিএস নামে পরিচিত। সৌদি আরবে তাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো কেউ নেই। দুই পূর্বসূরিকে সরিয়ে দিয়ে ২০১৭ সালের জুনে তাকে যুবরাজ ঘোষণা করেন তার বাবা ও দেশটির বর্তমান বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ।

এইচআরডব্লিউ বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সৌদি আরবে নির্বিচারে গ্রেফতারের ঘটনা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এ ধরনের পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

গত ৩১ মার্চ থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত তথ্য পর্যালোচনা করে এইচআরডব্লিউর রিপোর্ট বলছে, দেশটিতে বিনা অপরাধে ৫ হাজার ৩১৪ জন আটক রয়েছেন। তাদের মধ্যে গত ৬ মাসের মধ্যে আদালতে তোলা হয়নি এমন কারাবন্দির সংখ্যা ৩ হাজার ৩৮০ জন।

প্রায় এক বছর ধরে কারাগারের অন্ধ কুঠরিতে বন্দি রয়েছেন প্রায় দুই হাজার ৯৪৯ এবং তিন বছরের রয়েছেন ৭৭০ জন।

গত তিন বছরে সৌদি কর্তৃপক্ষ মাত্র ২৫১ কারাবন্দিকে তদন্তের আওতায় এনেছে, যাদের মধ্যে ২৩৩ জন সৌদি নাগরিক। বিনাবিচারে আটক থাকা এসব বন্দিকে বিচারের আওতায় আনতে ১ ফেব্রুয়ারি সৌদি আ্যটর্নি জেনারেল শেইখ সৌদ আল-মজিবের কাছে চিঠি লেখে এইচআরডব্লিউ।

২০১৭ সালের নভেম্বরে দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে সৌদি আরবে বেশ কয়েকজন প্রিন্সসহ পাঁচ শতাধিক অভিজাত ব্যক্তিকে আটক করা হয়।

যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে তাদের আটক করা হয়। তবে ওই নির্বিচারে আটকের ঘটনাকে দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হন যুবরাজ। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোয় ওই অভিযানকে দেখা হয়, রীতি ভেঙে রাজপরিবারে যুবরাজের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রয়াস হিসেবে।

প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের সম্পাদকীয় ভাষ্যে অভিযানটিকে সৌদি যুবরাজের গোপন অভ্যুত্থান অ্যাখ্যা দেয়া হয়। রাজপরিবারের সদস্যদের ওপর প্রথম দফায় আটক অভিযান চালানো হয় ৪ নভেম্বর রাতে।

ওই রাতে ১৭ প্রিন্সকে আটকের পরের দিনগুলোয় ধরপাকড়ের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের তালিকা দীর্ঘ হয়। কয়েক দিনের মাথায় আটক হওয়া ব্যক্তিদের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে যায়।

এদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী এবং রাজপরিবারের নারী সদস্যও ছিলেন। তবে ওই ধরপাকড়ের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের অধিকাংশই মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে মুক্তি পেয়েছেন।

উপরে