সিরিয়ার গোলান ইসরাইলের স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাষ্ট্র
সিরিয়ার কাছ থেকে দখলে নেয়া গোলান মালভূমিকে এবার ইসরাইলের এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাষ্ট্র। আর এ ঘোষণা ত্বরান্বিত করতে মার্কিন প্রশাসনে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করছে ইসরাইল।
বুধবার রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির গোয়েন্দা বিষয়কমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এ কথা বলেন। অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের সীমান্তে জবরদখল নিয়ে থাকা সিরিয়ার গোলান মালভূমিও ইসরাইলের।
শিগগিরই বা আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি আসতে পারে বলে নিশ্চিত করেছেন কাটজ। গত ৫১ বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইলের দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় গোলান স্বীকৃতির বিষয়টি প্রধান ইস্যু হিসেবে ঘুরপাক খাচ্ছে বলে জানান এই মন্ত্রী। খবর রয়টার্স, জেরুজালেম পোস্টের।
এ পদক্ষেপকে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বীকৃতি ও চলতি মাসে সেখানে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের ধারাবাহিকতা হিসেবেই দেখা হবে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। ইসরাইল ও সিরিয়ার মধ্যে অবস্থিত গোলান মালভূমির আয়তন প্রায় ৪৬০ বর্গমাইল।
১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় ইসরাইলি সেনারা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সিরিয়ার এ অংশটি দখল করে নেয়। একে ছয় দিনের যুদ্ধও বলা হয়। অধিকৃত এলাকায় পরে ২০ হাজার ইসরাইলি বসতিও স্থাপিত হয়। ১৯৮১ সালে তেলআবিব দখলকৃত অংশের পরিমাণ বাড়ালেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি।
সিরিয়ার সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে গোলানকে দামেস্কের কাছে ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিল ইসরাইল। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানের প্রভাব ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে মালভূমিটির নিয়ন্ত্রণ এখন নিজের কাছে রাখতেই আগ্রহী জেরুজালেম। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ক্রমবর্ধমান আধিপত্য মোকাবেলার কৌশল হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসনও গোলান নিয়ে ইসরাইলের প্রস্তাব বিবেচনা করছে বলে জানান কাটজ।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এ প্রসঙ্গটি প্রথম তোলেন। তারপর থেকে এটি মার্কিন প্রশাসন ও কংগ্রেসের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচিত হচ্ছে বলে জানান কাটজ। তিনি বলেন, ‘আমার বিচারে এ সিদ্ধান্ত পাকা হয়েই আছে, শিগগিরই ঘোষণা দেয়ারও সম্ভাবনা আছে।’ চলতি বছরই যুক্তরাষ্ট্র এমন সিদ্ধান্ত নেবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে কাটজের উত্তর, ‘হ্যাঁ। ধরে নেন কয়েক মাস।’
মালভূমিটির সঙ্গে জর্ডানেরও সীমান্ত আছে। তেলআবিবের দখল থেকে গোলানমুক্ত করতে ১৯৭৩ সালে সেখানে পাল্টা আক্রমণ শানিয়ে ব্যর্থ হয় দামেস্ক। পরের বছর দুই দেশের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষর হয়।
এরপর থেকে গোলান নিয়ে তুলনামূলকভাবে শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ১৯১৭ সালে মুসলিম অধ্যুষিত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের একাংশে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের বলে ঘোষণা দেয় ব্রিটেন। তারপর থেকেই অবৈধ দখলদারিত্বের মাধ্যমে ওই অঞ্চলে নিজেদের বসতবাড়ি বাড়িয়ে চলছে ইসরাইল।