যৌন হয়রানিকে অপরাধ হিসেবে সম্মতি দিল সৌদি মন্ত্রিসভা
যৌন হয়রানিকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করার একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সৌদি আরবের মন্ত্রিসভা।
গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার এ সিদ্ধান্তের পর রাজকীয় ডিক্রি জারির মাধ্যমে প্রস্তাবটি আইনে পরিণত হতে পারে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ'র প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের হাত ধরে দীর্ঘদিনের রক্ষণশীলতা ভেঙে সংস্কারের কাজের ধারাবাহিকতায় এ প্রস্তাবটিও যুক্ত হয়েছে। ক্রাউন প্রিন্সের শাসনামলে নারী স্বাধীনতার পরিধিও লক্ষণীয় ভাবে বাড়ছে। এসব পদক্ষেপই যার প্রমাণ।
সংস্কারের অংশ হিসেবে সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর কয়েক দশক ধরে আরোপ করে রাখা নিষেধাজ্ঞাও আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তুলে নেওয়া হচ্ছে। আগামী ২৪ জুন থেকে তা কার্যকর হবে।
সোমবার দেশটির শুরা কাউন্সিলের উপদেষ্টা পরিষদ যৌন হয়রানি বিরোধী ওই আইন প্রস্তাবটি অনুমোদন করে। এতে যৌন হয়রানির অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও তিন লাখ রিয়াল জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
শুরা কাউন্সিলের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, (প্রস্তাবিত আইনটি) হয়রানির অপরাধের সঙ্গে লড়াই করা, প্রতিরোধ করা, অপরাধকারীদের শাস্তি দেওয়া ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, সম্মান ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা সুরক্ষায় ভুক্তভোগীকে নিরাপত্তা দেওয়ার লক্ষে ইসলামি আইন ও শরিয়া মোতাবেক প্রণীত হয়েছে।
আরব বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিকে তেল রপ্তানি নির্ভরতা থেকে সরিয়ে বহুমাত্রিক ও প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতিতে পরিণত করতে চাইছেন যুবরাজ মোহাম্মদ। পাশাপাশি কঠোর সামাজিক আইনকানুন শিথিল করে বিনোদনের বিভিন্ন পথ খুলে দিয়ে সৌদিদের জীবনযাত্রায়ও পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন তিনি।
কিন্তু চলতি মাসের প্রথমদিকে কর্তৃপক্ষ প্রায় এক ডজন নারী অধিকার আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করে। এসব আন্দোলনকারীরা গাড়ি চালানোর অধিকার ও পুরুষ অভিভাবকত্ব পদ্ধতির অবসান ঘটানোর দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ বন্দি ওই আন্দোলনকারীদের আটকাদেশ ও তাদের বর্তমান অবস্থান সর্ম্পকে তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের আইনী অধিকার নিশ্চিত করতে সৌদি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।