শিরোনাম
৮ নভেম্বর লন্ডনে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া! মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ যাচ্ছে রিপাবলিকানদের হাতে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা সাকিবের জার্মানিতে ইরানের সব কনস্যুলেট বন্ধ ঘোষণা কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ভারতীয় সেনা নিহত সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের নৌবাণিজ্য পুনর্স্থাপনে চিন্তিত ভারত নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 11 June, 2018 02:35

বৈঠকের দু’দিন আগেই ট্রাম্প-কিম সিঙ্গাপুরে

বৈঠকের দু’দিন আগেই ট্রাম্প-কিম সিঙ্গাপুরে
মেইল রিপোর্ট :

ঐতিহাসিক বৈঠকে বসার দু’দিন আগেই সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন।

কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি আনয়নের লক্ষ্যে ১২ জুন (মঙ্গলবার) দু’নেতা দ্বীপরাষ্ট্র সিঙ্গাপুরের সানতোসা দ্বীপের চাপেলা হোটেলে বৈঠকে বসবেন।

রোববার স্থানীয় সময় ৩টা ৪০ মিনিটে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে প্রথম সবচেয়ে দীর্ঘ যাত্রায় সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরে পৌঁছান কিম। এ সময় তার পরনে ছিল ট্রেডমার্ক মাও স্যুট।

এর কয়েক ঘণ্টা পর স্থানীয় সময় রাত ৮টা ১৫ মিনিটে সিঙ্গাপুরের পায়া লেবার বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছান ট্রাম্প। বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান। 

দীর্ঘ শত্রুতার অবসান ঘটিয়ে দায়িত্বরত কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এবারই প্রথম উত্তরের কোনো শীর্ষ নেতার বৈঠক হতে যাচ্ছে। এই শীর্ষ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে কিম তার পারমাণবিক অস্ত্র বিসর্জনের প্রক্রিয়া শুরু করবেন বলে প্রত্যাশা ওয়াশিংটনের।

কানাডার শিল্পোন্নত দেশগুলোর দু’দিনব্যাপী জি-৭ সম্মেলনের শেষদিন শনিবার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার আগেই সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা দেন ট্রাম্প। নিজের এয়ারফোর্স ওয়ান বিমানে চড়ে সিঙ্গাপুরে নামেন ট্রাম্প।

সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর আগে ট্রাম্প টুইটারে বলেন, আগামী ১২ জুন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে সম্মেলন ‘শান্তির পথে এক পা’। এই সম্মেলনের মাধ্যমে কিম শান্তির পথে এক পা দিয়ে রেখেছেন। এই সম্মেলনকে ট্রাম্প ‘শান্তি মিশন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

এর আগে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, কিম সত্যিকার অর্থেই শান্তি প্রতিষ্ঠা চান কিনা তা বুঝতে ‘এক মিনিটই যথেষ্ট।’ তার দাবি, বৈঠকের প্রথম মিনিটের মধ্যেই তিনি কিমের মনোভঙ্গি বুঝে যাবেন।

উত্তর কোরিয়া আদৌ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে রাজি হবে কিনা সে সম্ভাবনা নিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রথম মিনিটেই আমি সেটা জেনে যাব। কিম তার জনগণের জন্য বড় কিছু একটা করতে চায় আর তার সে সুযোগ আছে। এটি এক দেখাতেই বলে দেয়ার বিষয়।’

ট্রাম্পের কয়েক ঘণ্টা আগে সিঙ্গাপুরে নামে কিমের ভাড়া করা এয়ার চায়না ৭৪৭ বিমান। নিজের ইলুসিন-৬২এম বিমানের কারিগরি সক্ষমতা কম থাকায় সেটি আনতে ভরসা পাননি কিম।

সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালাকৃষ্ণান টুইটারে তার ও কিমের করমর্দনরত একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘স্বাগতম চেয়ারম্যান কিম জং উন, যিনি এই মাত্র সিঙ্গাপুরে এসে পৌঁছেছেন।’

এরপর মার্সিডিজ বেঞ্জ, লিমুজিনসহ উত্তর কোরিয়ার নেতার আগে ব্যবহৃত গাড়িগুলোর অনুরূপ গাড়ির একটি বহর ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে কিমকে সিঙ্গাপুরের কেন্দ্রস্থলে নিয়ে যায়। দেশটির সেইন্ট রেজিস হোটেলে উঠেছেন বলে জানা গেছে। তিনি হোটেলে পৌঁছার আগে সেখানে কড়া প্রহরা ছিল।

২০১১ সালে উত্তর কোরিয়ার দায়িত্ব নেয়ার পর তৃতীয় দেশ হিসেবে সিঙ্গাপুরে এটাই কিমের রাষ্ট্রীয় সফর। এদিকে রোববার উত্তর কোরিয়ার উচ্চ প্রতিনিধি দল বহনকারী আরেকটি বিমান চাঙ্গি বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এই বিমানটিতে ছিলেন কিমের বোন কিম ইয়ো জং।

বিবিসি বলছে, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর গত ১৮ মাসে উত্তরের শীর্ষ নেতার সঙ্গে তার সম্পর্কের উত্থান-পতনের সাক্ষী হয়েছে বিশ্ব। প্রথমদিকে একে অপরকে চূড়ান্ত অপমান করে যুদ্ধের হুমকি দিলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দু’জনের মধ্যে উষ্ণতার আবহ গড়ে ওঠে।

তারই ধারাবাহিকতায় এবার মুখোমুখি সাক্ষাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সানতোসায় শীর্ষ সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে রোববার কিম সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি শিয়েন লংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট ভবন ইস্তানায় বৈঠক করেন কিম ও লি। সেখানে কিম বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রয়েছে পুরো বিশ্ব।

এ বৈঠক আয়োজনের জন্য আপনাকে (লি) অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমার বৈঠক সফর হবে বলেই আমি প্রত্যাশা করছি।’ আজ সোমবার লির সঙ্গে বৈঠক করবেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প ও কিমের বৈঠক আয়োজনের জন্য সিঙ্গাপুর দেড় কোটি (১৫ মিলিয়ন) ডলার খরচ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী লি। এ বৈঠক আয়োজনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সিঙ্গাপুরের ভাবমূর্তি বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। তার মতে, এর মধ্য দিয়ে সিঙ্গাপুরের প্রচার হচ্ছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র চাপ প্রয়োগ করলেও কোরীয় অঞ্চলে অন্য দেশগুলো অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণের পথে না হাঁটলে পিয়ংইয়ং তার পরমাণু অস্ত্র বিসর্জনে রাজি হবে না।

এ শর্তে যুক্তরাষ্ট্রকেও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে তার সামরিক ঘাঁটি গুটিয়ে নিতে হবে, ওয়াশিংটন তাতে রাজি হবে না বলেও অনুমান তাদের। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, উত্তর কোরিয়া পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে রাজি হলে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞায় দেশটির থমকে থাকা অর্থনীতিকে গতিশীল করতে সহায়তা করবে তারা।

যদিও এ বৈঠকেই পারমাণবিক বিষয়ে সমঝোতা হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।

এবারের বৈঠক ওই প্রক্রিয়া শুরুর প্রথম ধাপ। যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার এবারের বৈঠকে দুই কোরিয়ার মধ্যে ‘শান্তিচুক্তি’র বিষয়টি প্রাধান্য পাবে বলেও মনে করা হচ্ছে। ১৯৫০-৫৩ সাল পর্যন্ত দুই কোরিয়ার মধ্যে চলা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও শেষ হয়নি। দু’পক্ষের মধ্যে এখনও শুধু যুদ্ধবিরতি চলছে।

উত্তরের শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠকে কোরীয় যুদ্ধ বিষয়ে ‘শান্তিচুক্তি’ স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্পও।

উপরে