রোহিঙ্গা সুরক্ষায় বাংলাদেশকে ৪৮ কোটি ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক
মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পয়ঃনিষ্কাশন, নিরাপদ পানি ও সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে বাংলাদেশকে ৪৮ কোটি ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।
সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে আজ শুক্রবার জানানো হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এই সহায়তার প্রথম কিস্তিতে ৫ কোটি ডলার ছাড়ের অনুমোদন দিয়েছে।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কানাডা সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহায়তা বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে রোহিঙ্গাদের জন্য এই সাহায্য দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহায়তা সংস্থা-আইডিএ।এই সহায়তা বাংলাদেশে চলমান বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যয় করা হবে।
মূলত কক্সবাজারে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা রোহিঙ্গা মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবা, কিশোর বয়সীদের স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি, জন্ম নিয়ন্ত্রণ ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবায় এই অর্থ ব্যয় করা হবে।
গতবছরের আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে নতুন করে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এর ফলে সাম্প্রতিক সময়ে এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শরণার্থীসমস্যার মোকাবেলা করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম এক বিবৃতিতে বলেন, “রোহিঙ্গাদের দুর্দশা আমাদের নাড়িয়ে দিয়েছে। তারা স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে নিজেদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের সহায়তা দিয়ে যেতে আমরা প্রস্তুত আছি।”
সেই সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের জন্যও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন জিম ইয়ং কিম।
রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে, তাদের দুর্দশার কথা তাদের মুখ থেকে শুনতে দুই দিনের সফরে ১ জুলাই বাংলাদেশে আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম।
২ জুলাই তারা কক্সবাজারে গিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে দেখবেন এবং সেখানে ত্রাণ বিতরণের দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলবেন। এই সঙ্কট নিরসনে আর কী কী করা যায়, সে বিষয়েও আলোচনা করবেন তারা।
এই সফরে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গেও বৈঠক করবেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) নির্বাহী পরিচালক নাটালিয়া কানেমও এই সফরে তাদের সঙ্গে থাকছেন বলে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।