শিরোনাম
৮ নভেম্বর লন্ডনে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া! মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ যাচ্ছে রিপাবলিকানদের হাতে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা সাকিবের জার্মানিতে ইরানের সব কনস্যুলেট বন্ধ ঘোষণা কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ভারতীয় সেনা নিহত সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের নৌবাণিজ্য পুনর্স্থাপনে চিন্তিত ভারত নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 12 August, 2018 19:17

এমএসএফকে রাখাইনে ঢুকতে দিচ্ছে না মিয়ানমার

এমএসএফকে রাখাইনে ঢুকতে দিচ্ছে না মিয়ানমার
ফাইল ছবি
মেইল রিপোর্ট :

মিয়ানমারের উত্তর রাখাইন রাজ্যে অবস্থানরত সাড় পাঁচ থেকে ছয় লাখ রোহিঙ্গার চিকিৎসা সেবাও প্রায় বন্ধ রয়েছে। 

আন্তর্জাতিক মানবিক চিকিৎসা সংস্থা ‘মেডিসিন্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স বা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স’ (এমএসএফ) শুক্রবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, উত্তর রাখাইনের অরতি ও ঝুঁকিতে থাকা সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে স্বাধীন মানবিক সংস্থাগুলো এখনও যথেষ্ট বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। প্রয়োজনীয় মানবিক ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের উপযুক্ত পরিবেশ ও সুযোগ না থাকায় এমএসএফের উদ্বেগ বাড়ছে।

গত বছর ২৫ আগস্ট ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির’ (আরসা) কথিত আক্রমণ ও পরবর্তীতে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর অভিযানের দু’সপ্তাহ আগে (১১ আগস্ট) উত্তর রাখাইনে এমএসএফের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমের ওপর মিয়ানমার সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। 

শুক্রবার সেই নিষেধাজ্ঞার এক বছর পূর্ণ হলেও এমএসএফ এখনও সেখানে কাজ করতে পারছে না। তবে মংডুতে এমএসএফের কর্মীরা এখনও আছে।

এমএসএফ বলেছে, ‘রাখাইনে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যার কথা আমরা সব সময় শুনছি। মুসলমান রোগীদের (রোহিঙ্গাদের) স্বাধীনভাবে চলাফেরায় বাধা এখনও আছে। এছাড়াও তাদের অতিরিক্ত চিকিৎসা ফি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি তাদের (রোহিঙ্গাদের) সামর্থ্যের বাইরে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা এমএসএফ মিয়ানমার টিমের একজনকে বলেছেন, কয়েক মাস আগে তিনি তাঁর মায়ের চিকিৎসার জন্য উত্তর রাখাইন থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। তাঁর মা বাংলাদেশে মারা যান।

ওই রোহিঙ্গা বলেন, ‘আমরা সিত্তওয়ে বা ইয়াঙ্গুনে যেতে পারি না। তাই আমাদের চিকিৎসার জন্য একমাত্র পথটি হলো সীমানা পার হয়ে বাংলাদেশে আসা।’

তিনি বলেন, ‘এই পথ অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। আমার খুব ইচ্ছা ছিল আমার মাকে আমাদের গ্রামে নিয়ে আমার বাবার পাশে কবর দেওয়ার। কিন্তু আমাদের দেশের পরিস্থিতিতে সেটা এখন আর সম্ভব না। আমরা যদি এখানে (মিয়ানমারে) একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে দেখাতে পারতাম, তাহলে তো আমরা আর বাংলাদেশে যেতামই না।’

এমএসএফ জানায়,  মিয়ানমার সরকার দাবি করছে যে সব স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো নিরপে তথ্য পাওয়া যায় না। এমএসএফ-মিয়ানমারের অপারেশন ম্যানেজার বেনোয়া দ্য গ্রিজ বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা পাওয়ার জন্য মানবিক সংস্থাগুলোর প্রবেশাধিকার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত ছাড়া পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের উপযোগী কি না তা বোঝারও বিন্দুমাত্র উপায় নেই।’

তিনি বলেন, ‘উত্তর রাখাইনে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র পরিস্থিতির যাচাই ও মূল্যায়নের অভাবের কারণে সেখানে মানবিক সহায়তা ও স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা আসলে কতটুক সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউই পুরোপুরি জানতে পারছেন না।’

স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় যাতায়াত ও মেডিক্যাল কার্যক্রমের অনুমতির চেয়ে মিয়ানমার সরকারের কাছে এমএসএফ বারবার আবেদন করেছে। কিন্তু প্রশাসনিক ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এটি অসম্ভব হয়ে পড়েছে। 

এমএসএফ উত্তর রাখাইনের সব জনগোষ্ঠীকে ১৯৯৪ সাল থেকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলো। গত বছরের ১১ আগস্ট এমএসএফের কর্মকাণ্ড বন্ধ করার সময়ও সেখানে তাদের চারটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কিনিক ছিল। সেগুলোর তিনটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই চারটি কিনিকে প্রতি মাসে ১১ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাকে প্রাথমিক ও প্রসুতি সেবা দেওয়ার পাশাপাশি জরুরি পরিস্থিতিতে রোগীদের যাতায়াত ও হাসপাতালের ভর্তি করাতে সাহায্য করা হতো। এসব কার্যক্রম এখন পুরোপুরি বন্ধ।

উপরে