ভারত-চীন লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা
ডোকলাম সীমান্তে উত্তেজনার এক বছর না কাটতেই এবার লাদাখ সীমান্তে মুখোমুখি ভারত ও চীনের সেনাসদস্যরা। চীনের সৈন্যরা সেখানে তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সীমান্তের নেরলং এলাকায় ভারতীয় প্রশাসনের একটি রাস্তা তৈরিকে কেন্দ্র করে সপ্তাহ দুয়েক আগে এ উত্তেজনার সূত্রপাত হলেও নয়াদিল্লিভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে এটি গত কয়েকদিন ধরে প্রচার হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, ভারতের স্থানীয় প্রশাসন ওই রাস্তা বানানোর কাজ শুরু করলে চীনের সৈন্যরা এসে এলাকাটি তাদের দাবি করে কাজ বন্ধ রাখার দাবি তোলে। এই উত্তেজনার মধ্যে চীনা সৈন্যরা পশুপালকের ছদ্মবেশে শেরডং-নেরলং নাল্লান এলাকায় বিবাদমান সীমান্তের ৩০০-৪০০ মিটার ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে পাঁচটি তাঁবু গেঁড়ে ফেলে। তখন আশপাশ থেকে ভারতীয় সৈন্যরাও অবস্থান নেন ওই এলাকায়।
পরিস্থিতি অবনতির দিকে গেলে ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের বৈঠকে বসে দুই বাহিনী। এখানে আলোচনার ফলে তিনটি তাঁবু সরিয়ে নেয় চীনের সেনারা। কিন্তু এখনও রয়ে গেছে দু’টি। ভারতের দাবি, ওই দু’টি তাঁবুতে ছদ্মবেশে রয়েছেন বেশ কিছু চীনা সৈন্য। সেজন্য ভারতীয় বাহিনীও জোরালো অবস্থান নিয়েছে ওই এলাকায়।
স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তা অবনী লাভাসা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বসন্ত ও শরৎকাল শেরডং-নেরলং এলাকায় পশুচারণের মৌসুম। কিন্তু এখন গোলযোগের আশঙ্কায় ভারতীয় পশুপালকদের ওই এলাকা থেকে সরিয়ে এনেছেন সেনাসদস্যরা।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) বিভিন্ন এলাকার মালিকানা নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে অরুণাচল, সিকিম ও কাশ্মীর (লাদাখ) সীমান্তে প্রায়ই দু’পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে সিকিমের কাছে ভুটানের পাশে ডোকলাম মালভূমিতে চীনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক উত্তেজনায় জড়ায় ভারতীয় সেনারা। সেসময় দু’পক্ষই সীমান্তে সৈন্যসামন্ত জড়ো করে। শেষ পর্যন্ত যদিও নয়াদিল্লি-বেইজিংয়ের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনায় ডোকলাম সীমান্তের উত্তেজনার নিরসন হয়।
কিন্তু নতুন করে এই উত্তেজনার নেপথ্য রাস্তা তৈরির কথা বলা হলেও একটি সূত্র বলছে, সম্প্রতি ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ওই এলাকা সফরে যান চীনের স্বাধীনতাকামী তিব্বত অঞ্চলের ধর্মগুরু ও নির্বাসিত সরকারের প্রধান দালাই লামা। চীনের চোখে ‘সন্ত্রাসী’ দালাই লামাকে ভারতের কর্তৃপক্ষ এই সুযোগ দেওয়ার কারণেই বেইজিং চটে গেল কি-না, সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন নয়াদিল্লির কূটনীতিকরা।