ভেনিজুয়েলায় ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্প
ভেনিজুয়েলার পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে বড় ধরনের ভূমিকম্পের খবর পাওয়া গেছে। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৭.৩।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকাল ৫টা ৩১ মিনিটে দেশটির ইতিহাসের অন্যতম শক্তিশালী ৭ দশমিক ৩ মাত্রার এ ভূমিকম্পটি হয়।
এতে ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাস, প্রতিবেশী দেশ কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতার ভবনগুলোও কেঁপে ওঠে। ত্রিনিদাদের কয়েকটি অংশে বিদ্যুৎ চলে যায়।
ভেনেজুয়েলার পূর্ব উপকূলের বেশিরভাগ এলাকাতেই দরিদ্র মৎস্যজীবীদের বাস। এর পাশাপাশি দেশটির পাম গাছে ঘেরা চিত্রোপম উত্তর উপকূলেও ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়েছে। তুলনামূলকভাবে দীর্ঘ সময় ধরে চলা ভূমিকম্পে লোকজন আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় নেমে আসে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ভেনেজুয়েলার কর্মকর্তারা।
তবে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ভূপৃষ্ঠের ১২৩ কিলোমিটার গভীরে হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শক্তিশালী ভূমিকম্প সত্ত্বেও ওপেক সদস্য দেশটির রিফাইনারিগুলো ও তেল ক্ষেত্রগুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় ছিল বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পিডিভিএসএ-র দু'টি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি কেন্দ্র প্রথমে ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্রের নিকটবর্তী উপকূল বরাবর সম্ভাব্য একটি সুনামির সতর্কর্তা জারি করলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়।
একই শহরের আরেক বাসিন্দা রোসিমার রদ্রিগুয়েজ জানিয়েছেন, তিনি চোখে পড়ার মতো কোনো ক্ষয়ক্ষতি দেখেননি কিন্তু লোকজন তখনও আতঙ্কিত হয়েছিল।
কুমানার বাসিন্দা চিকিৎসক এলিয়া সানচেজ বলেছেন, 'টেলিভিশনে নিউজ দেখার জন্য বিছানায় যাই, তখনই বিছানাটা নড়তে শুরু করে যেন এটি পানি দিয়ে তৈরি। নয়তলা থেকে নিচে নেমে আসি আমরা। মনে হচ্ছিল এটি কখনো শেষ হবে না।'
ভূমিকম্পে কারাকাসে সীমিত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ‘টাওয়ার অব ডেভিড’ নামে শহরের ৪৫তলা পরিত্যক্ত একটি আকাশচুম্বি ভবনের শীর্ষ পাঁচটি তলা কাত হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নেস্তর রেভেরল।
ব্যাংক সেন্টার তৈরির উদ্দেশ্যে টাওয়ারটি বানানো হয়েছিল, কিন্তু ১৯৯৪ সালে এটি পরিত্যক্ত হয়। পরে এটি কয়েক বছর ধরে অবৈধ বাসিন্দাদের দখলে ছিল। মার্কিন টেলিভিনের স্পাই ড্রামা ‘হোমল্যান্ডে’ বিষয়টি দেখানো হয়েছিল।
ভূমিকম্পের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে আসা ছবিগুলোতে দেখা গেছে, ভবনটির ওপরের তলাগুলো, যেগুলোর নির্মাণকাজ শেষ করা হয়নি, একদিকে হেলে পড়েছে।
দেশটির পূর্বাঞ্চলে সুক্রের গভর্নর সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ভূমিকম্পটি ভেনেজুয়েলার নিকটবর্তী দ্বীপ ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগো এবং সেন্ট লুসিয়ায়ও অনুভূত হয়েছে।
প্রাথমিক প্রতিবেদনে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে কয়েকটি ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং ধসে পড়া কংক্রিটের আঘাতে বেশ কিছু গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি দেশটির কয়েকটি অংশ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।
রাজধানী পোর্ট অব স্পেনে মহাসড়কগুলোতে ট্র্যাফিক জ্যাম তৈরি হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।