সুচির বক্তব্যে বিস্মিত রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশন
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাংলাদেশ ঠেকিয়ে রাখছে বলে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির দেয়া বক্তব্যে তীব্র ক্ষোভ এবং বিস্ময় প্রকাশ করেছে রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশন।
সংস্থাটির কমিশনার আবুল কালাম বলেন, তার মতো একজন নেতার মুখ থেকে এ ধরণের বক্তব্য শুনে আমি দুঃখিত হলাম। প্রত্যাবাসনে বিলম্ব হওয়ার জন্য বাংলাদেশকে দায়ী করার সত্যের আরেকটি অপলাপ।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে প্রতিনিধিদল এ মাসে রাখাইন সফরে গিয়েছিল, সে দলে ছিলেন আবুল কালাম।
তিনি বলেন, গত বছর নভেম্বরে প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের যে চুক্তি হয়েছে, বেশ কিছু 'অবশ্য করণীয়' শর্ত রয়েছে।
যেমন চুক্তিতে বলা আছে- রোহিঙ্গারা যে গ্রাম বা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এসেছে, তাদেরকে সেখানেই জায়গা করে দিতে হবে, একান্তই তা সম্ভব না হলে, নিকটবর্তী জায়গায় বা তাদের পছন্দমত কোনা জায়গায় তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
ফেলে আসা জমিজমা, বাড়ি, সম্পদ ফেরত দিতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা পূর্ণ নিরাপত্তা নিয়ে তাদের মনে ভরসা তৈরি করতে হবে, কিন্তু এগুলো কিছুই করা হয়নি।
তিনি জানান, দুটি অভ্যর্থনা ক্যাম্প এবং একটি ট্রানজিট ক্যাম্প তৈরি ছাড়া এখনো কিছুই হয়নি মিয়ানমার। রোহিঙ্গারা তো এখানে ক্যাম্পেই রয়েছে, তারা তো তাদের দেশে গিয়ে ক্যাম্পে থাকতে চায়না।
আবুল কালাম জানান, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছেন, শরণার্থীদের জায়গা দিতে মংডুতে ৩১টি এবং বুড়িচঙে ১১টিসহ মোট ৪২টি গ্রাম চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত শুধু চিহ্নিত করার কথাই তারা বলছে।
প্রত্যাবাসন ঝুলিয়ে রাখার কোনো প্রশ্নই আসেনা, বাংলাদেশ বরং গভীর উদ্বেগে তাকিয়ে রয়েছে কবে তা শুরু হয়।
সিঙ্গাপুরে সোমবার দেয়া এক বক্তব্যে রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে একটি কথাও উচ্চারণ করেননি সুচি। বরঞ্চ তিনি বলেছেন রাখাইনের সমস্যার মূলে রয়েছে সন্ত্রাসবাদ।
মিয়ানমারের ওই নেত্রী আও বলেছেন, রাখাইনে সন্ত্রাস এখনও বিদ্যমান এবং পুরো অঞ্চলের জন্য তা 'মারাত্মক পরিণতি' তৈরি করবে। সন্ত্রাসী তৎপরতার কারণেই রাখাইনে মানবিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে এবং সন্ত্রাসের সেই ঝুঁকি এখনও আগের মতোই রয়ে গেছে।