উইঘুর মুসলমানদের আটকে রাখার ক্যাম্পগুলোকে বৈধতা দিচ্ছে চীন
আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সত্ত্বেও চীনের শিনজিয়াং প্রদেশ কর্তৃপক্ষ দেশটির উইঘুর মুসলমানদের বন্দি রাখা ক্যাম্পগুলোকে বৈধতা দিয়েছে। চীন যেটিকে কট্টরপন্থার প্রসার থামাতে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
উগ্রপন্থাবিরোধী মতাদর্শের প্রশিক্ষণ দিতে বৃত্তিমূলক এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে বৈধতা দিতে এবং চিন্তার পরিবর্তন আনতে আচরণগত ও মানসিক সংশোধনের জন্য এসব কেন্দ্র গঠন করা হয়েছে বলে দাবি চীনের।-খবর টেলিগ্রাফ ও বিবিসি অনলাইনের।
মান্দারিন ভাষায় এসব প্রশিক্ষণ ও রূপান্তর কার্যক্রম চলবে বলে নতুন আইনে বলা হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশটির কর্তৃপক্ষ এতদিনে স্বীকার করল বহু উইঘুর মুসলিমকে বন্দিশিবিরে নিয়ে রাখা হয়েছে।
মানবাধিকারের ওপর সম্প্রতি এক বৈঠকে উপস্থিত চীনা কর্মকর্তারা বলছেন, ধর্মীয় উগ্রবাদের কবলে পড়া উইঘুরদের নতুন করে শিক্ষা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে কীভাবে তা করা হচ্ছে তা চীনা কর্মকর্তারা ভেঙে বলছেন না।
কিন্তু মানবাধিকার সংস্থাগুলো দাবি করছে, এসব শিবিরে প্রেসিডেন্ট শি জিন-পিংয়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে উইঘুরদের শপথ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে আত্মসমালোচনা করানো হচ্ছে।
শিনজিয়াংয়ে গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহত সহিংসতা চলছে। চীন তার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী ইসলামী সন্ত্রাসীদের দায়ী করে। দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে, তারা বিপুলসংখ্যক উইঘুর মুসলমানকে কতগুলো বন্দিশিবিরের ভেতরে আটকে রেখেছে।
গত আগস্টে জাতিসংঘের একটি কমিটি জানতে পেরেছে যে, ১০ লাখের মতো উইঘুর মুসলিমকে পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং অঞ্চলে কয়েকটি শিবিরে বন্দি করে রাখা হয়েছে। চীন শিনজিয়াংয়ে কি করছে, নতুন এ আইনের মাধ্যমে এই প্রথম তার একটি ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
আইনে বলা হয়েছে- যেসব আচরণের কারণে বন্দিশিবিরে আটক করা হতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে- খাবার ছাড়া অন্য হালাল পণ্য ব্যবহার, রাষ্ট্রীয় টিভি দেখতে অস্বীকার করা, রাষ্ট্রীয় রেডিও শুনতে অস্বীকার করা, রাষ্ট্রীয় শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বাচ্চাদের দূরে রাখা।
চীন বলছে, এসব বন্দিশিবিরে চীনা ভাষা শেখানো হবে, চীনের আইন শেখানো হবে এবং বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।