চীনে প্রশিক্ষণের নামে ১১ লাখ উইঘুর মুসলিম বন্দিশিবিরে
কয়েক বিঘা কৃষিজমির ওপর বিশাল ক্যাম্পাস। একটু নজর বুলালেই যা সবার চোখের সামনে চলে আসে। বলছি, চীনের লোপু এক নম্বর কাউন্টি বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কথা।
মূল ভবন কাঠামোর বাইরের চারপাশ ঘিরে রেখেছে কাঁটাতারযুক্ত সাদা পাথরের দেয়াল। পয়েন্টে পয়েন্টে নজরদারি ক্যামেরা। বেশ কয়েকজন প্রহরী লম্বা লাঠি হাতে পাহারা দিচ্ছেন। রয়েছে টহলরত পুলিশের গাড়ি।
আশপাশের বেশিরভাগ গ্রামের চেয়েও বড় এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র- প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার বর্গমিটার হবে। পাশঘেঁষে চলে গেছে মহাসড়ক। ভবনজুড়ে বড় ব্যানার সাঁটানো। যাতে লেখা- ‘নৃতাত্ত্বিক ঐক্যের’ রক্ষাকবচ।
সড়কের পাশে আধাডজন লোক দাঁড়ানো। সবার নজর ভবনের দিকে। দেখতে কারাগারের মতো স্থাপনাটি কিসের কিংবা এখানে তারা কেন-ই-বা অপেক্ষা করছেন- তা নিয়ে কথা বলতে নারাজ সবাই।
অস্ফুট স্বরে এক বৃদ্ধা বললেন- আমরা জানি না। ভাইকে দেখতে এসেছেন আরেকজন। কিন্তু এই তথ্যটুকুর বাইরে একটি কথাও তার মুখ ফসকে বের হলো না।
দুই ভাইকে সঙ্গে নিয়ে আসা এক তরুণী বললেন- বাবাকে দেখতে এসেছেন তারা। সঙ্গে সঙ্গে তার মা মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করিয়ে দেন তাকে।
তারা কথা বলতে অনিচ্ছুক। মুখ থেকে টু শব্দটিও বের করতে রাজি না। কারণ এটি সচরাচর কোনো কারাগার কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস না।
এটি এমন এক ক্যাম্প, যেখানে বিপুলসংখ্যক মুসলিম সংখ্যালঘু অন্তরীণ রয়েছেন। মূলত ইচ্ছার বিরুদ্ধে উইঘুরদের এ ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে। মাসের পর মাস কিংবা কয়েক বছর ধরে এখান থেকে তারা বের হতে পারছেন না। ভোকেশনাল প্রশিক্ষণের আড়ালে বিনাবিচারে বন্দি রাখা হয়েছে তাদের।
গবেষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দক্ষিণ জিনজিয়াংয়ে লোপু এক নম্বর কাউন্টি বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে ধরপাকড়ের শিকার মুসলমানদের আটকে রাখা হয়। উইঘুরদের জনসংখ্যার ঘনত্ব ও বড় বড় শহর থেকে দূরত্বের কারণেই এমনটি ঘটছে।
আদিল আওয়াত নামে একজন বলেন, হোটান শহর নিয়ে আমরা এতটুকুই বলব- কেউ যদি লোপু বন্দিশিবিরে একবার ঢোকে, সে কখনও বের হতে পারবে না।
মরুদ্যান শহর হোটানের বাসিন্দা আদিল এখন প্রবাসীর জীবনযাপন করছেন।
ক্যাম্পটিতে গত ডিসেম্বরে সরাসরি প্রবেশাধিকার চেয়েছিল জাতিসংঘ। এর আগে সংস্থাটির একটি প্যানেল বলছে, ১১ লাখ উইঘুর, কাজাখ, হুই ও অন্যান্য নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে ক্যাম্পে আটকে রাখার বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন তাদের হাতে রয়েছে।
কিন্তু বেইজিং অনেকটা আগ্রাসীভাবেই নিজের নীতির পক্ষে সাফাই গাইছে। ক্যাম্পগুলোকে অনুকূল হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে তারা। ১৯৯০ ও ২০০০ দশকে যে জিনজিয়াংয়ে সহিংসতার বিস্ফোরণ ঘটেছিল, সরকারের চেষ্টায় তা এখন শান্তিপূর্ণ বলে তুলে ধরছে চীন।
কিন্তু লোপুর বাস্তবতা পুরোদস্তুর ভিন্ন। এলাকাটি লোপু কাউন্টি নামেই পরিচিত। সেখানে সাবেক এবং বর্তমান অধিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে ও গণতথ্য বিশ্লেষণ করে নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান।
পত্রিকাটি বলছে, জিনজিয়াংয়ের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এ এলাকায় সরকারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বন্দিশিবিরের বিস্তৃতি দীর্ঘ করছে। নজরদারি ও পুলিশি টহলও বাড়ছে। ভয়ভীতি, বলপ্রয়োগ ও অর্থনৈতিক প্রণোদনার মাধ্যমে তাতে স্থানীয় লোকজনের সহায়তা নেয়া হচ্ছে।
স্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণের খেসারত
উপগ্রহ চিত্র বলছে, গত বছরে এক নম্বর বৃত্তিমূলক দক্ষতা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অন্তত ১০টি ভবন যোগ হয়েছে। ব্রিটিশ কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সোয়ান জ্যাংয়ের কাছ থেকে পাওয়া কোম্পানি রেকর্ড বলছে, অবকাঠামো নির্মাণের কাজ মধ্য ডিসেম্বরেও চলছিল।
লোপু কাউন্টি খুব ঘনবসতিপূর্ণ না। দুই লাখ ৮০ হাজার লোক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবাস করেন। যাদের অধিকাংশই উইঘুর। এলাকাটিতে অন্তত আটটি বন্দিশিবির আছে। সরকার যেগুলোর নাম দিয়েছে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
২০১৮ সালে এসব বন্দিশিবিরে ১২ হাজার শিক্ষার্থীকে স্থান দেয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। এ ছাড়া আরেকটিতে দুই হাজার ১০০ বন্দি রয়েছেন।
যা পূর্ণ বয়স্ক মোট জনসংখ্যার ৭ শতাংশ হবে, আর মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশ। স্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণে লোপু কাউন্টিতে চার কোটি ৪০ লাখ ডলার ব্যয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
পাশাপাশি সব মসজিদে নজরদারি, ছয় হাজার পুলিশের জন্য সুবিধাজনক থানা, আবাসিক এলাকায় তল্লাশি ও নিরাপত্তাচৌকির জন্য তিন লাখ ডলারও খরচের তালিকায় রয়েছে।
নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট পদক্ষেপ ও ব্যাপক খরচই বলে দিচ্ছে ব্যাপক সমালোচনা সত্ত্বেও জিনজিয়াংয়ে বিতর্কিত নীতির প্রতি চীন কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
চীনের নৃতাত্ত্বিক নীতিবিষয়ক গবেষক আদ্রিয়ানা জেনজের তথ্যানুসারে, প্রদেশজুড়ে ২০১৭ সালের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যয় ছিল দ্বিগুণ। এ ছাড়া চলমান নিরাপত্তা অভিযান তো রয়েছেই। বিশাল বন্দিশিবিরে ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলোর সদস্যদের আটক রাখতেও চার গুণ অর্থ ঢালতে হচ্ছে দেশটিকে।
এ নিরাপত্তা ও বন্দিশিবির কেন্দ্র করে দেশটিতে বাজেট বেড়ে যাওয়ার ঘটনা স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ক্ষেত্রে ২০১৭ সালে যে বরাদ্দ ধরা হয়েছিল, পরে তা ৩০০ শতাংশ বেড়ে যায়। হোটান জেলায় খরচ বাড়ার এটিই ছিল সর্বোচ্চ রেকর্ড।
কিন্তু স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার স্ট্র্যাটেজিক পলিশি ইনস্টিটিউট বিশ্লেষণ করে দেখেছে, জিনজিয়াংজুড়ে ২৪টি ক্যাম্প রয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে এসবের ৪৬৫ শতাংশ আকার বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে গত বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
হোটান শহর ও আশপাশের কাউন্টির অন্তত পাঁচটি ক্যাম্পের আকার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আর ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে একটি ক্যাম্পের আকার বেড়েছে ২৪৬৯ শতাংশ।
লোপু কাউন্টির কর্মকর্তারা ২২৪ গ্রাম ও শহরতলিতে দুই হাজার সাতশরও বেশি সহকারী নিয়োগ দিয়েছেন। ১২ হাজার আটক ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণ করতে দুই হাজার পুলিশ ও কর্মকর্তাকে ভাড়া করা হয়েছে।
স্থানীয় অধিবাসীদের প্রণোদনা দিতেও অর্থ ঢালতে হচ্ছে চীন সরকারকে। দেশপ্রেমিক ধর্মীয় লোক হিসেবে মসজিদের ইমাম ও অন্যান্য ধর্মীয় ব্যক্তিকে নিয়োগ দিচ্ছেন লোপু কর্মকর্তারা। তাদের বার্ষিক চার হাজার ২০০ ইউয়ান ভাতা দেয়া হচ্ছে।
যে এলাকায় তাদের এ ভাতা দেয়া হচ্ছে, সেখানে একজন লোকের বছরে সব কিছু বাদ দিয়ে আয় ছয় হাজার ৮০০ ইউয়ান। হজ পালনে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মক্কায় যেতে লোকজনকে বারণ করাই হচ্ছে তাদের চাকরি।
উইঘুর সম্প্রদায়ের ভেতর থেকে চার হাজার ১০০ ইউয়ান বেতনে পুলিশের নিম্নপদস্থ সহকারী নিয়োগ দেয়া হয়, যা বড় বড় শহরের একেকজন পুলিশের বেতনের সমান।
খরচের এই স্রোতের সঙ্গে খাপখাইয়ে নিতে খাবি খেতে হচ্ছে স্থানীয় সরকারকে। প্রতিবেশী চেলি কাউন্টিতে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও বন্দিশিবিরে ১২ হাজার লোককে আটক করা হয়েছে।
২০১৮ সালের বাজেটে বলা হয়েছে, তহবিল সংকটে এখনও বহু প্রকল্প যুক্ত করা যায়নি। গত বছরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খুবই মারাত্মক পর্যায়ে ছিল।
চীনের অর্থনীতির গতি ধীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের আরও বেশি সংকটে পড়তে হয়েছে। জেনজ বলেন, এ ধরনের কর্মসূচির স্থায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থনৈতিক সক্ষমতার ওপর নির্ভর করছে। এ ধরনের শীর্ষ পদক্ষেপের অর্থনৈতিক সক্ষমতা নিশ্চিতভাবে অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকে।
‘এখন যেখানে আছ, সেখানেই থাক’
বর্তমানে হোটান জেলা এক ধরনের গরাদ পদ্ধতির ব্যবস্থাপনার ভেতর দিয়ে চলছে। রয়েছে ব্যাপক পুলিশ টহল ও নজরদারি। লোপু সরকারের ওয়েবসাইটের বিবরণে এটিকে সর্বোচ্চ জরুরি অবস্থার পর্যায় বলে জানানো হয়েছে।
জিনজিয়াংয়ে লোপুর মতো আরও অনেক জায়গায় উইঘুরদের চরম বিধিনিষেধ মেনে চলাচল করতে হয়। এ ছাড়া চাইনিজ হানদেরও নিরাপত্তা তল্লাশিচৌকির ভেতর দিয়ে যেতে হয়। উইঘুর যাত্রীদের পরিচয়পত্র নিবন্ধন ও পুরো শরীর স্ক্যান করতে হয়। তার যানবাহনে তল্লাশি ও মুখেরও স্ক্যান করতে হচ্ছে।
হাতল আছে এমন ডিভাইস দিয়ে স্মার্টফোন স্ক্যান করা হয়। এতে কোনো সন্দেহজনক উপাদান আছে কিনা- তা পরীক্ষা করা হয়। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদকের মোবাইল ফোনও পরীক্ষা করতে নিয়ে গিয়েছিলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। তার দাবি, ওই মোবাইল ফোনে আরবি ও উইঘুর ভাষায় সন্দেহজনক কিছু কেউ একজন দেখতে পেয়েছেন।
আবদুল্লাহ এরকিন লোপু কাউন্টিতে জন্ম ও বেড়ে উঠেছেন। যখন ধরপাকড় শুরু হতে যাচ্ছিল, তখন তিনি বসবাস করছেন জিনজিয়াংয়ের উত্তরে উরুমকিতে। তিনি বলেন, পরিবার তাকে ফিরতে নিষেধ করেছিল। তারা আমাকে বলেছেন, এখানে এসো না। এখন যেখানে আছ, সেখানেই থাক।
লোপুতে স্থানীয় সরকারের ব্যুরোতে কাজ করেন তার বোন। তিনি বলেন, দিনে দিনে পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। এরকিন বলেন, তার বন্ধুদের বেশিরভাগ হয় বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নতুবা কারাগারে। এখন তিনি দেশের বাইরে বাস করছেন।
গত মাসে তার দুই ভাইকে জেলে ভরা হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তার বিশ্বাস, এতদিনে তার ভাইয়ের পাঁচ ছেলেকেও কারাগারে যেতে হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব চীনে বসবাস করা এক ব্যবসায়ী বলেন, গ্রেফতারের একের পর এক হুমকির পর তিনি হোটান ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ডারেন বেইলার বলেন, আমারও মনে হচ্ছে- হোটান জেলার কাউন্টিগুলো মারাত্মক নিপীড়নের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
জিনজিয়াংয়ের দিকে আলোকপাত করে তিনি বলেন, হোটান একদিকে পিছিয়েপড়া রাজ্য, অন্যদিকে প্রতিরোধী।
চীনা কর্মকর্তারা বলছেন, জিনজিয়াংয়ে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাচ্ছেন তারা। কিন্তু লোপুতে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদককে কমপক্ষে চার ঘণ্টা ঘরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এর পর সাতজন লোক তাকে অনুসরণ করেছে।
লোপু এক নম্বর বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা বলেন, সব প্রতিবেদক- সে হোক বিদেশি কিংবা চাইনিজ, জিনজিয়াংয়ের বাইরে থেকে আসা সবাই আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থার আওতায়।
লাল তারকা বাড়ি
লোপু কাউন্টির একটি গ্রামে প্রতিটি ঘরের দরজায় একটি করে ফলক লাগানো। তাতে লেখা- মডেলি লাল তারকা পরিবার। যারা সরকারের সব শর্ত পূরণ করেছেন, তাদের এ অভিধা দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে যারা উগ্রপন্থাবিরোধী চিন্তাভাবনা লালন করেন ও আধুনিক সভ্যতার বোধ ধারণ করেন।
গত বছর দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করতে গ্রামবাসীকে এক জায়গায় জড়ো করতেন লোপুর স্থানীয় কর্মকর্তারা।
বন্দিশিবির ও ক্যাম্পগুলোতে এ চর্চা অহরহ। এ ছাড়া কীভাবে একটি সুন্দর নতুন জমানার সঙ্গে নিজেকে খাপখাইয়ে নিতে হবে- নারীদের সেই শিক্ষা দেয়া হয়। যাতে তারা মতাদর্শিক মুক্তিকে উৎসাহিত করতে পারে, সে জন্যই এমন শিক্ষা দেয়া হয়।
শেষ পর্যন্ত এতসব পদক্ষেপে সরকারের প্রতি মানুষের আনুগত্যকে অনুপ্রাণিত করছে কিনা- তা পরিষ্কার হওয়া যায়নি।
রান্নার জন্য লাকড়ির স্তূপ করছিলেন এক নারী। তার পরিবার থেকে যাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে, তিনি তাদের একটি তালিকা তৈরি করেছেন। তার ১৬ বছর বয়সী ছেলেও আটকের তালিকায় রয়েছে।
আরেক নারী বলেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে তার স্বামীকে একটি ভিন্ন গ্রামে নিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কোন গ্রামে তাকে রাখা হয়েছে, তা তিনি বলতে পারছেন না। ওই নারী বলেন, আমরা সবসময় কৃষিকাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করি।
নান ও কাবাবের শিকভর্তি একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ বহন করে নিয়ে যাচ্ছিলেন তার এক লোক। তিনি বলেন, তার প্রতিবেশীকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এর পর আস্তে করে তিনি বলেন, আপনার সঙ্গে কথা বলতে আমরা ভয় পাই। কারণ তারা আমাদের ওপর চড়াও হতে পারে।