শিরোনাম
৮ নভেম্বর লন্ডনে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া! মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ যাচ্ছে রিপাবলিকানদের হাতে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা সাকিবের জার্মানিতে ইরানের সব কনস্যুলেট বন্ধ ঘোষণা কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ভারতীয় সেনা নিহত সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর প্রশান্ত মহাসাগরে মিলল বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাল নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 27 January, 2019 11:39
তালেবান-মার্কিন খসড়া চুক্তি

আফগান যুদ্ধের ইতি টানতে ১৮ মাসের মধ্যে বিদেশি সেনাপ্রত্যাহার

আফগান যুদ্ধের ইতি টানতে ১৮ মাসের মধ্যে বিদেশি সেনাপ্রত্যাহার
মেইল রিপোর্ট :

তালেবান নেতারা বলেছেন, যুদ্ধবিধ্বংস্ত আফগানিস্তান থেকে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে বিদেশি সেনাদের প্রত্যাহার করে নিতে একটি খসড়া শান্তি চুক্তিতে সই করতে সম্মত হয়েছেন মার্কিন আলোচকরা। শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক খবরে এমন তথ্য জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘতম যুদ্ধের ইতি টানতে কাতারে মার্কিন বিশেষ দূত জালমি খালিলজাদের সঙ্গে ছয়দিনের আলোচনা শেষে তালেবান সূত্র  বিস্তারিত জানিয়েছে।

তবে মার্কিন কর্মকর্তা কিংবা তালেবানের তরফে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। এ ব্যাপারে জানতে কাবুলে মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

তবে আফগান বংশোদ্ভূত খলিলজাদ এক টুইটার পোস্টে বলেন, আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। অল্প কিছুদিন পর ফের বৈঠক হবে। আফগান সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসতে দেশটিতে রওনা হওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।

তিনি বলেন, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে কাতারের এ বৈঠক ফলপ্রসূ। গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আমাদের ব্যাপক অগ্রগতি ঘটেছে। এখনো অনেকগুলো বিষয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।

টুইটারে জালামি খলিলজাদ বলেন, সবকিছুতে সম্মতি না আসা পর্যন্ত কোনোকিছুতেই সম্মতি নেই। আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ আলোচনা সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতিসহ সবকিছুকে যুক্ত করবে।

কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, প্রত্যাশিত সময়ের চেয়েও দীর্ঘ এ আলোচনার পর আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিকে বিস্তারিত জানাতে কাবুলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন জালমি খালিলজাদ।

তালেবান সূত্রানুসারে, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা তার মিত্র দেশের বিরুদ্ধে হামলায় আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেট যোদ্ধাদের সুযোগ দেয়া হবে না বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন তারা। ওয়াশিংটনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দাবি ছিল এটি।

তবে খসড়া চুক্তিতে দুই পক্ষই সম্মত হয়েছে কিনা কিংবা কখন এটা শেষ হবে বা সই হবে- তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি।

তালেবানের বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গেছে, যুদ্ধবিরতিকে চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার সময়সীমা জানা যায়নি। যুদ্ধবিরতি যখন বাস্তবায়ন হবে কেবল তখনই আফগান সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা হবে তালেবানের।

এ পর্যন্ত আফগান সরকারের সঙ্গে বসতে বারবার অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন তারা। বরং মার্কিন পক্ষের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় গুরুত্ব দিচ্ছে কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠীটি। তালেবানের বিবেচনায়, যুক্তরাষ্ট্রই হচ্ছে তাদের প্রধান শত্রু। আর আফগান সরকার হচ্ছে কেবল পশ্চিমাদের পুতুল।

চুক্তির একটি অংশের বরাতে তালেবান সূত্র বলছে, ১৮ মাসের মধ্যে যদি বিদেশে বাহিনীকে প্রত্যাহার এবং যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়িত হয়, তবে শান্তিপ্রক্রিয়ার অন্যান্য দিকগুলো কার্যকর হতে পারে।

এ নিয়ে কাতারের রাজধানী দোহায় আগামী মাসে ফের নতুন করে আলোচনা শুরু হবে। তালেবানের প্রত্যাশা, বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির নতুন রাজনৈতিক প্রধান মোল্লাহ আব্দুল গনি বেরাদার এ আলোচনার নেতৃত্ব দেবেন।

তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সামরিক কমান্ডার বেরাদার গত বছর পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তখন বলা হয়েছিল, তার মুক্তিতে শান্তি আলোচনায় গতি আসবে। তবে তিনি এ বৈঠকে ছিলেন কিনা তা পরিষ্কার হওয়া যায়নি।

বেরদারকে বৈঠকে পেতে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী ছিল বলে মনে করছে তালেবান। ২০১০ সালে পাক-মার্কিন যৌথ গোয়েন্দা অভিযানে তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন।

চুক্তির অন্য অনুচ্ছেদে বন্দি বিনিময় ও মুক্তির বিষয়টিও রাখা হয়েছে। এছাড়া এতে কয়েক তালেবান নেতার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন হওয়ার পর অর্ন্তবর্তীকালীন আফগান সরকার গঠনের সম্ভাবনাও থাকছে।

এমন এক সময় চুক্তির অগ্রগতির খবর আসছে, যখন প্রতিনিয়ত পশ্চিমা সমর্থিত আফগান সরকার ও তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে তালেবান।

মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত ১৭ বছর ধরে আফগান বাহিনীকে প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও সহায়তা দেয়া সত্ত্বেও দেশটির অর্ধেকটা এখনো তালেবানের নিয়ন্ত্রণে।

গত সপ্তাহে আফরাফ ঘানি বলেন, ২০১৪ সালে তার সরকার ক্ষমতায় বসার পর থেকে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর ৪৫ হাজার সদস্য নিহত হয়েছেন।

ন্যাটো নেতৃত্বাধীন মিশনের অংশ হিসেবে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ হাজার সেনা অবস্থান করছে। এছাড়া আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে একটি সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটও আছে। যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদের অর্ধেক সেনা ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সেনাপ্রত্যাহারের নির্দেশ এখনো দেননি। তবে এতে করে নতুন শরণার্থী সংকটের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেয়নি ট্রাম্প প্রশাসন।

তালেবান সূত্র জানিয়েছে, খসড়া চুক্তির বিভিন্ন ধারায় প্রতিবেশী পাকিস্তান, ভারত ও চীনের সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্কের ব্যাপক সম্পৃক্ততার বিষয়টিও স্থান পেয়েছে।

তারা বলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধাদের আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না বলে চুক্তির ধারায় বলা হয়েছে।

প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানকে অবহেলার শিকার হতে হচ্ছে। যে কারণে গত ৬০ বছর ধরে সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহ দানা বেঁধেছে।

উপরে