যুক্তরাজ্যে এক রাতে পাঁচ মসজিদে হাতুড়ি হামলা, ভাঙচুর
যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম শহরে এক রাতে পাঁচটি মসজিদে হাতুড়ি হামলা চালিয়ে মসজিদগুলোর জানালা ভাঙচুর করা হয়েছে।
এসব হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী তদন্ত এবং আগামী শুক্রবারের জুমার নামাজের আগে মসজিদগুলোতে নিরাপত্তা জোরদারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম ডেইলি মেইল।
এতে বলা হয়, গত রাতে উইটন রোড ইসলামিক সেন্টারে হামলা করে সাতটি জানালা এবং দুটি দরজা ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মসজিদটির ইমাম শারাফাত আলি। তিনি বলেন, রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে এই হামলা হয়।
এদিকে হামলার পর সারারাত সতর্ক ছিল বলে জানিয়েছে ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস পুলিশ। তারা এখনো হামলা উদ্দেশ্য সম্পর্কে কিছুই জানাতে পারেনি। ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটও ঘটনাটি তদন্ত করছে।
এছাড়া আলবার্ট রোড, বার্চফিল্ড রোড, স্লেড রোড এবং ব্রডওয়ে রোডের মসজিদে একই ধরনের হামলা হয়।
বার্চফিল্ড রোডের মসজিদে হামলা হয়েছে বুঝতে পারার পর রাত দুইটা ৩২ মিনিটে মসজিদটির পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়। তিনটা ১৪ মিনিটে স্লেড রোডে একই ধরনের হামলার বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হয়।
এরপর পুলিশ এই এলাকায় টহল দেয়া শুরু করে। ফরেনসিক কর্মকর্তারা প্রমাণ সংগ্রহে কাজ করে যাচ্ছে এবং সিসিটিভির ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে।
উইটন রোডের মসজিদটি ভাঙচুরের ফুটেজ অনলাইনে পোস্ট করেছেন ব্রোমফোর্ড অ্যান্ড হোজ হিল ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাজিদ মাহমুদ। তিনি লেবার পার্টির স্থানীয় নেতা।
তিনি টুইটারে লেখেন, দুর্ভাগ্যবশত গত রাতে উইটন রোড ইসলামিক সেন্টারে হাতুড়ি হামলা চালিয়ে মসজিদটির কয়েকটি জানালা ভেঙেছে কেউ।
তিনি আরও লেখেন, আমি গত সপ্তাহে বলেছিলাম ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলার পর মুসলিমরা ভীত হয়ে পড়েছেন। আমাদের সাহায্য দরকার।
তার কথায় সুর মিলিয়েছেন উইটন ইসলামিক সেন্টারের ইমাম। তিনি বার্মিংহাম লাইভকে বলেন, এটা ভয়ানক। নিউজিল্যান্ডে যা ঘটেছে, তারপর এই হামলা আমাদেরকে মর্মাহত করেছে।
৬৬ বছর বয়সী এই ইমাম বলেন, আমরা ৩০ বছর ধরে এখানে আছি। সকালে এই মসজিদে ৪০ জন নামাজ আদায় করে। কিন্তু শুক্রবার প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ নামাজি এখানে জুমার নামাজ আদায় করে।
তিনি বলেন, আগামীকাল জুমার নামাজ এবং আমি জানি না কী ঘটতে পারে। তাই পুলিশকে নিরাপত্তা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছি।
বার্মিংহাম লেডিউডের লেবার এমপি শাবানা মাহমুদ টুইটারে বলেন, বার্মিংহামজুড়ে মসজিদে হামলার বিষয়টি সত্যিই ভয়ানক। আমি চিফ কনস্টেবলের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তিনি এখান মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখবেন।
তিনি বলেন, আমি সব বাসিন্দাকে শান্ত থাকার এবং কোনও তথ্য থাকলে তা ক্রাইম স্টপারদেরকে জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি।
এসব হামলার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। তিনি টুইটারে লেখেন, এক রাতে বার্মিংহামের এসব মসজিদে হামলায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং উৎকণ্ঠিত। পুলিশ হামলার উদ্দেশ্য জানতে তদন্ত করছে।
আমাদের সমাজে ঘৃণ্য আচরণের কোনও জায়গা নেই এবং ভবিষ্যতেও মেনে নেয়া হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।