যুক্তরাজ্যের কুখ্যাত কারাগারে বন্দি জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ
যুক্তরাজ্যের আদালতে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ‘জামিন শর্ত ভঙ্গ’ করেছেন। তবে তাকে যে কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে সেটি যুক্তরাজ্যের জন্য কুখ্যাত।
এটাকে কেউ কেউ ‘যুক্তরাজ্যের গুয়ানতানামো বে’ নামে ডেকে থাকেন।
বেলমার্শে অতীত ও বর্তমানে থাকা উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছে কুখ্যাত গ্যাংস্টার, সিরিয়াল কিলার ও মাদক চোরাচালানকারী।
৯/১১-এর হামলার পর প্রণীত এক বিতর্কিত সন্ত্রাসী আইনে অভিযুক্তদের বেলমার্শ নামক ওই কারাগারটিতে রাখা হতো। এর ফলে অ্যাসাঞ্জের স্বাস্থ্য ও মানসিক অবস্থা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম কনসোর্টিয়াম নিউজের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সন্ত্রাসবিরোধী, যুক্তরাষ্ট্রে নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার ছয় সপ্তাহ পর আইনটি পাস করে যুক্তরাজ্য। তবে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডস-এর রুলে বলা আছে, এ আইনটি ব্রিটিশ মানবাধিকার আইনকে লঙ্ঘন করে।
কারাগাটির অভ্যন্তরে থাকা ‘উচ্চ নিরাপত্তা ইউনিট’ নামের ‘বিশেষ কারাগার’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তবে এই বিশেষ স্থানটির ভূমিকা অস্পষ্ট।
বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘উচ্চ নিরাপত্তা ইউনিট’-এ থাকা বন্দিদের তীব্র ও কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের কবলে পড়তে হয়, যেখানে তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগ থাকে না।
এদিকে বেলমার্শ কারাগারে অ্যাসাঞ্জ কীভাবে দিন কাটাচ্ছেন তা নিয়ে তাই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, অ্যাসাঞ্জ ওই কারাগারে যথাসময়ে চিকিৎসা সুবিধা পাবেন না।
এতে বলা হয়েছে, ‘বেলমার্শের অনেক বন্দি চিকিৎসক কিংবা নার্সের সহায়তা নিতে পারছেন না, অথচ কারাগারে এসব সেবা দেওয়ার কথা।’
গত বৃহস্পতিবার উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করে ব্রিট্রিশ পুলিশ। তার শরণার্থী মর্যাদা তুলে নেয়া হলে লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সুইডেনে তার বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় জামিনে থাকার সময় ২০১২ সাল থেকে দূতাবাসটিতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন অ্যাসাঞ্জ।তখন তিনি অভিযোগ করে বলেছিলেন, তাকে যদি ব্রিটেন থেকে ইকুয়েডরে প্রত্যর্পণ করা হয়, তবে মার্কিন বাহিনী তাকে আটক করতে পারে।
লাখ লাখ মার্কিন কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে আলোচনায় এসেছিলেন অস্ট্রেলীয় নাগরিক অ্যাসাঞ্জ।
লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারি পরোয়ানা বাস্তবায়ন করা তাদের দায়িত্ব। ইকুয়েডর সরকার তার রাজনৈতিক আশ্রয় তুলে নিলে তাকে গ্রেফতারে পুলিশ ডেকে এনেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।