ডোরিয়ানের আঘাতে বাহামায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০
এদিকে দ্বীপপুঞ্জটির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা আবাকো দ্বীপে মৃতদেহ মুড়ে রাখার জন্য কর্মকর্তারা অতিরিক্ত ২০০টি ব্যাগ পাঠিয়েছে।
রোববার ক্যাটাগরি পাঁচ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় ডোরিয়ান ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১৮৫ মাইল গতি নিয়ে অ্যাটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত বাহামায় আঘাত হানে। দু’দিন ধরে তাণ্ডব চালানোর পর বর্তমানে এটি ক্যাটগরি তিন মাত্রার শক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ও নর্থ ক্যারোলাইনা উপকূলের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
ক্যারিবীয় অঞ্চলে চলতি মৌসুমে আঘাত হানা এ শক্তিশালী ঝড়ে আবাকো ও গ্র্যান্ড বাহামায় নিখোঁজের সংখ্যা কয়েকশ থেকে কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন।
বৃহস্পতিবার বাহামার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডুয়ানে স্যান্ডস ডোরিয়ানে নিহতের সংখ্যা ‘হতভম্ব করে দিতে’ পারে বলে সতর্ক করেছেন।
স্থানীয় এক রেডিওতে তিনি বলেছেন, “মানুষের ভোগান্তি ও মৃতের সংখ্যা সম্বন্ধে অবিশ্বাস্য তথ্যের ব্যাপারে জনগণের প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন।”
দ্বীপটির ৭৬ হাজারের বেশি মানুষের মানবিক ত্রাণ সাহায্য প্রয়োজন বলে ধারণা দিয়েছে জাতিসংঘ।
দুর্যোগ পরবর্তী পরস্থিতি মোকাবেলায় স্যান্ডস বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘের সহযোগিতাও চেয়েছেন।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত আবাকো দ্বীপটি কার্যত বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মৃতদেহ, পানি ও খাদ্য সংকটে সেখানকার পরিস্থিতি সঙ্গীন। লুটপাট ঠেকাতে দ্বীপটিতে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে।
বিমান থেকে ধারণ করা ভিডিওতে আবাকো দ্বীপে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান হয়েছে। দ্বীপটির বন্দর, দোকানপাট ও কর্মস্থল, একটি হাসপাতাল ও বিমানবন্দরের রানওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এরমধ্যে কোনো কোনোটি খণ্ড খণ্ড হয়ে উড়ে গেছে।
দ্বীপটিতে এরই মধ্যে কিছু পরিমাণ ত্রাণও পৌঁছেছে। উদ্ধারকর্মীরা মৃতদেহের পাশাপাশি নিখোঁজদের সন্ধানেও তৎপরতা বাড়িয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাহামায় ২০১ জনকে উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে মার্কিন কোস্ট গার্ড।
মঙ্গলবার ঝড় শেষের পর থেকে অনেকেই তাদের প্রিয়জনের সন্ধানে দ্বীপটি চষে বেড়াচ্ছেন। নিখোঁজদের বড় একটি অংশই শিশু বলে জানাগেছে।
এদিকে দ্বীপপুঞ্জটির বেশকিছু এলাকায় ব্যাপক লুটপাট চলছে বলে এক আলোকচিত্রী জানিয়েছেন। ম্যাশ হারবার নামের এক এলাকায় তিনি বাসিন্দাদের মদের দোকান ও সুপারমার্কেটে লুটপাট চালিয়ে ব্যাগে ও গাড়িতে করে জিনিসপত্র নিয়ে যেতেও দেখেছেন।
দুর্বল হয়ে ৩ মাত্রার ঝড়ে পরিণত হওয়া ডোরিয়ান নিয়েও সাউথ ও নর্থ ক্যারোলাইনা উপকূলের বাসিন্দাদের সাবধানে থাকতে বলেছে মার্কিন আবহাওয়া বিভাগ।
অপেক্ষাকৃত উষ্ণ জলভাগের ওপর দিয়ে এগোতে থাকায় শক্তি সঞ্চয় করে এটি ফের চার মাত্রার হারিকেনের রূপ নিতে পারে বলেও সতর্ক করেছে তারা।