প্যারিস চুক্তি : কথা রাখেনি কেউই
চীন : চীন ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের লক্ষ্য পূরণ বা তার লক্ষ্য ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে রয়েছে। অজীবাশ্ম জ্বালানি (নবায়নযোগ্য এবং পারমাণবিক) থেকে আসা জ্বালানির জন্য ২০ শতাংশ লক্ষ্য স্থির করেছে বেইজিং। তবে এই লক্ষ্য পূরণে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে কার্বন নিঃসরণকারী শীর্ষ এ দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্র : ২০০৫ সালের তুলনায় ২০২৫ সালের মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের মাত্রা ২৬ থেকে ২৮ শতাংশ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। কিন্তু তার উত্তরসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেছেন (যদিও দেশটি ২০২০ সাল পর্যন্ত আংশিক চুক্তিতে আছে)। ওবামার নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে কয়লাভিত্তিক জ্বালানি, অটোমোবাইল দূষণসহ অনেক কিছু বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন : ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইইউ। ইউরোপীয় কমিশন ভবিষ্যদ্বাণী করে যে, এ লক্ষ্যটি অতিক্রম করবে। তবে সদস্য দেশগুলোর আরও উচ্চাকাক্সক্ষী লক্ষ্য হল, ২০৫০ সালের মধ্যে নির্গমন মাত্রা শূন্যের ঘরে নামিয়ে আনা। সদস্য দেশগুলো এখনও ঐকমত্যে পৌঁছাচ্ছে এবং আলোচনা অব্যাহত রেখেছে।
কার্বন নিরপেক্ষ লক্ষ্য : জুনে ব্রিটেনের এনার্জি অ্যান্ড ক্লাইমেট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের গবেষণা অনুসারে, ছোট দুটি রাষ্ট্র ভুটান ও সুরিনাম কার্বন নিরপেক্ষ দেশ। অধিকাংশই ২০৫০ সালের মধ্যে এ লক্ষ্য পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুসারে এ প্রতিশ্রুতি পূরণে ২০৩০ সালকে লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে নরওয়ে ও উরুগুয়ে। ২০৪৫ সালের মধ্যে সুইডেন ও যুক্তরারে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য এবং ২০৫০ সালের মধ্যে ফিজি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য। জুনে ফ্রান্সের একটি সরকারি কমিটি জানায়, চুক্তি অনুসারে পদক্ষেপ অপর্যাপ্ত।
পৃথিবী দ্রুতই উষ্ণ হচ্ছে : জীবাশ্ম জ্বালানি জ্বালানোর কারণে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করায় পৃথিবীর তল আগের ধারণার চেয়ে দ্রুতই উষ্ণ হচ্ছে। জাতিসংঘের বর্তমান অনুমানগুলো ব্যবহার করে নতুন জলবায়ু মডেল স্থাপন করে মঙ্গলবার বিজ্ঞানীরা এ কথা জানিয়েছেন।
কার্বন নিঃসরণ মাত্রা অব্যাহত থাকলে ২১০০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৫ থেকে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠবে, যেটি প্রাক-শিল্প স্তরের ঊর্ধ্বে উঠে যাবে। এ মাত্রা ২০১৪ সালে ইন্টারগভার্নমেন্টাল প্যানেল ফর ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) করা পঞ্চম মূল্যায়নের মাত্রার চেয়েও ২ ডিগ্রি বেশি।
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক জোয়েরি রোগেলজি বলেন, ‘আগামীকালের চেয়ে আজই গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো প্রয়োজন এবং বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ মাত্রা শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে হবে।’